অফবিট

পৃথিবীর কোন প্রাণী অমর? চাঁদেও বেঁচে থাকার ক্ষমতা রাখে

জন্মালে মরতে তো হবেই এ কথা সবাই জানে।মানুষ যদিও বিজ্ঞানের অগ্রগতির মাধ্যমে রোগ ব্যাধি থেকে মুক্তি পেয়ে দীর্ঘায়ু পাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে বেশ কিছু ওষুধ বানিয়ে ফেলেছে, কিন্তু পৃথিবীর এই সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী মানুষের বেঁচে থাকার জন্য ও প্রয়োজন নিয়মিত খাদ্য,বাতাস,সঠিক তাপমাত্রা প্রভৃতি ।এই কারণেই সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে একের পর এক গ্রহ, উপগ্রহ আবিষ্কার করলেও পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার আমাদের যো নেই।কখনো ভেবে দেখেছেন প্রকৃতির তোয়াক্কা না করেই, সব নিয়মভঙ্গ করে ,যদি আমরা সহজে থেকে যেতে পারতাম চাঁদে বা দীর্ঘদিন না খেয়েও যদি বেঁচে থাকতে পারতাম?

আমরা না পারলেও এরকম অমর প্রাণী কিন্তু সত্যিই আছে এই পৃথিবীর বুকে।এই প্রাণীটির নাম হচ্ছে টারডিগ্রেড। এ প্রাণীটির খোঁজ সর্বপ্রথম জার্মান প্রাণীবিজ্ঞানী জোহান অগাস্ট ১৭৭৩ সালে করেন। কোনও কিছু না-খেয়ে টানা কয়েক দশক বেঁচে থাকতে পারে তারা! হিমাঙ্ক বা স্ফ‌ুটনাঙ্কের তাপমাত্রাতেও দিব্বি ঘুরে বেড়ায় জলে!পৃথিবী এমনই এক গ্রহ যেখানে অত্যাধিক গরম ও অসহনীয় শীত দু’টিই বিদ্যমান।আমরা সকলেই জানি যে শীতল পরিবেশের প্রাণী পরিবেশের এলে মানাতে পারবে না এবং উষ্ণ পরিবেশের প্রাণী পরিবেশে কিছুতেই বেঁচে থাকতে পারবে না।কিন্তু ব্যতিক্রম এই ০.৫ মিলিমিটার থেকে ১ মিলিমিটার দৈর্ঘের এই ক্ষুদ্র প্রাণীটি।এমনকী, তেজস্ক্রিয় বিকিরণও তাদের কোনও ক্ষতি করতে পারে না! আশ্চর্য সেই আণুবীক্ষণিক প্রাণীকে ঘিরেই এবার চাঁদের বুকে প্রাণের স্পন্দনের স্বপ্ন দেখছেন বিজ্ঞানীরা। ক্ষুদ্র প্রাণীটিকে আকৃতিগত সামঞ্জস্যের কারণে ‘জলের ভালুক’ বলেও ডাকা হয় হামেশাই।

চরম প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে সক্ষম এই প্রাণীগুলির সন্ধান পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের পরিসীমার বাইরে রয়েছে বলে আগে দাবি করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। এবার চাঁদের মাটিতে ‘সর্বংসহা’ টারডিগ্রেড দলের উপস্থিতির দাবি করল মার্কিন সংস্থা ‘আর্ক মিশন ফাউন্ডেশন’। সংস্থার চেয়ারম্যান নোভা স্পিভাক জানিয়েছেন, গত এপ্রিলে চাঁদের মাটিতে ‘ফোর্স ল্যান্ডিং’য়ে বাধ্য হওয়া ইজরায়েলি মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ‘রোবোটিক লুনার ল্যান্ডার’ পরীক্ষা করে টারডিগ্রেডদের উপস্থিতি জানা গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘এই অতি ক্ষুদ্র, বহুকোষী প্রাণীটি সৌরজগতের সবচেয়ে বেশি অভিযোজন ক্ষমতার অধিকারী। প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার ক্ষমতার মাপকাঠিতে এরা প্রায় অমর।’

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, টারডিগ্রেড নামক প্রাণীটি বরফ থেকে পাওয়া ঠান্ডা তাপমাত্রা নিজেদের শরীরে এন্টি অক্সিডেন্ট বানিয়ে ঠিক করে নেয়। তবে ১৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা কোষ প্রাচীর ধ্বংস করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু এরপরও এতো বেশি তাপমাত্রায় এই প্রাণীটি কীভাবে টিকে থাকে বিজ্ঞানীরা এই প্রশ্নটির জবাব দিতে পারেননি। বিজ্ঞানীরা এখনো এই প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *