অন্য পাখির ডাক নকল করার ক্ষমতা রাখে যে পাখী
নিউজ ডেস্ক – শুধুমাত্র মনুষ্য মন্ডলী নয় প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রয়োজন জীবজন্তু পাখি সহ উদ্ভিদ প্রজাতিকেও। এমন এক রামধনু প্রজাতির পাখি রয়েছে যারা বর্তমানে প্রায় অবলুপ্তির পথে এগিয়ে চলেছে। কারণ হচ্ছে একমাত্র মানুষ। বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তির ৩জি ৪জির জন্য আজ বহু পাখির সঙ্গে এই প্রজাতির পাখিও অবলুপ্তির দিকে এগোচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই পাখিগুলি হচ্ছে নীলগলা নীলচটক গোত্রের ১৪ সেমি দৈর্ঘ্যের পোকাশিকারী ।
পক্ষী বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নীলগলা নীলচটক গোত্রের পাখি গুলি মূলত দেখা যায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান, চীন, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সুবিস্তীর্ণ এলাকায়। এই সকল পাখিদেরকে আর পাঁচটি পাখির থেকে আলাদা করা যায় তাদের গাত্রবর্ণের জন্য। এই প্রজাতির পুরুষ পাখিদের রং হয় পিঠ ও গলা নীল, দেহের নিচের অংশ সাদা। কপাল ও ভ্রু উজ্জ্বল নীল। বুক লালচে। বগল ও পেট সাদা। লেজের ঢাকনি পীতাভ আমেজ। মেয়ে পাখিদের গায়ের রং হয় কোমর জলপাই-বাদামি রঙের। গলা হালকা কমলা। বুক কমলা ও পেট সাদা। মেয়ে ও পুরুষ পাখির উভয়ের চোখ কালচে বাদামি। ঠোঁট বাদামি-কালো। পা ও পায়ের পাতা ধুসর-বাদামি। সকল নীলগলা নীলচটক গোত্রের পাখিদের গলার স্বর বড্ড কর্কশ হয়। যার কারণে এরা খুব সচরাচর ডাকে না। এছাড়াও এই প্রজাতির পাখিদের মধ্যে এক বিশেষ গুণ রয়েছে। এরা অন্য পাখিদের গলার স্বর নকল করতে সক্ষম। কারণে মাঝেসাজেই অন্য পাখিদের আওয়াজ বের করে ডাকতে পছন্দ করেন। খোলা বনভূমি বাঁশবনে সবুজ সমারোহে বিচরণ করা এদের একমাত্র কাজ। এরা মূলত একা থাকতে পছন্দ করে। কিন্তু প্রজনন ঋতুতে একে অন্যের সঙ্গে থাকার পাশাপাশি খুব জোরে কর্কশ গলার স্বর বের করে চিৎকার করে। এদের খাদ্য তালিকায় প্রধান দুটি খাবার থাকে যথারত উড়ন্ত পোকা ও পোকার ছানা।
নীলগলা নীলচটাক সম্প্রদায়ের পাখিরা প্রজননকালে শেওলা ঢাকা আলোর মাটির গর্তে, বা বাঁশের কোটরে শৈবাল ও মৃত পাতায় সরু মূল বিছিয়ে বাসা বানায়। পরবর্তীতে নিজেদের বানানো বাসায় ৩-৫টি ডিম পাড়ে। নিজেরাই ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়। ছেলে ও মেয়েপাখি মিলে বাচ্চার যত্ন করে। বর্তমানে এই বিরল প্রজাতির পাখির সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। এই ৩জি ৪জির রেসিওর কারণে।