সমুদ্রের জলে বেশী বজ্রপাত হওয়ার পেছনে কি কারন রয়েছে জানেন?
নিউজ ডেস্ক – সাধারণত বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ কিংবা আশ্বিন মাসে তাপপ্রবাহ বেশি হওয়ার কারণে আকাশে জলীয়বাষ্প বেশি তৈরি হয় এবং তার ফলেই কয়েকদিনের মধ্যে বজ্রবিদ্যুৎসহ দেখা যায় ঝড়। বিশেষ করে বেশি ভয়ানক হয় কালবৈশাখী ঝড়। কিন্তু গবেষণার মাধ্যমে দেখা গেছে যে স্থলভাগে যেমন বজ্রবিদ্যুৎ হয় তার তুলনায় শতগুণ বেশি হয় সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে। বিষয়টি নজরে আসতেই একাধিক গবেষণা করেন বহু বিজ্ঞানী।
বিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা গিয়েছিল যে, বিদ্যুৎ ঝলকের সময় স্থলের থেকে মহাসাগরে ১০০ থেকে হাজার গুণ বেশি বিদ্যুৎ প্রতিফলিত হয়। এর কারণ জানতে একজন বিজ্ঞানী একটি ছোট পাত্রে লবণাক্ত জল নিয়ে তার উপর কারেন্টের বিদ্যুৎ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে ফল পেয়েছিলেন যে লবণাক্ত জলের উপর বিদ্যুতের শক্তি বহুগুণ বেড়ে যায়। শুধুমাত্র বিদ্যুৎ নয় মেঘ ও বজ্রপাতের ধরনও ভিন্ন হয়ে যায়।
এখানেই থেমে থাকেননি বিজ্ঞানীরা। পরবর্তীতে নানান পুকুর ও সমুদ্রের জল নিয়ে আলাদা আলাদা ভাবে পরীক্ষা করে তারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন যে
ডেড সির জল সবচেয়ে বেশি লবণাক্ত। কারণ গ্যালিলি সাগরের জলের চেয়ে ৬৮০ গুণ বেশি লবণাক্ত। ডেড সির জলের উপর সৃষ্ট বিদ্যুতের ঝলক গ্যালিলির তুলনায় ৪০ গুণ বেশি উজ্জ্বল। আবার গ্যালিলির জলের উপর সৃষ্ট বিদ্যুতের ঝলক ভেজা মাটির তুলনায় দেড় গুণ বেশি উজ্জ্বল। বিদ্যুৎ ঝলকানির এই তীব্রতাকে সুপারবোল্ট বলা হয়। যেহেতু একটি ল্যাবে সামান্য জলের উপর এই পরীক্ষা করা হয়েছে তাই আসল সমুদ্র ও নদীতে এর প্রভাব কি পরবে সেটি এখন দেখবার। এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কেন্দ্র করে মতপার্থক্য রয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে।
অন্যদিকে আবার এটাও দেখা গিয়েছে যে আবহাওয়ার পরিবর্তনে কারণে প্রশান্ত মহাসাগরে তীব্র বিদ্যুৎ প্রবাহের আশঙ্কা এবং সুপার বোল্টের পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে পারে আগামী দিনে। প্রাকৃতিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে জলীয় বাষ্পীয় পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে আর তার কারণেই কোন কোন অঞ্চলের জলবায়ু লবণাক্ত হয়ে উঠছে এবং সেখানে পরবর্তীতে তীব্র বজ্রপাত সহ ঝড়-বৃষ্টি দেখা দেয়।