অফবিট

ভারতবর্ষের একমাত্র কোন রাজ্যে দেবরাজ ইন্দ্রের মন্দির রয়েছে?

নিউজ ডেস্ক: দেবরাজ ইন্দ্র যিনি দেবরাজ হওয়া সত্ত্বেও তার পূজার প্রচলন নেই এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে। এইজন্য তার মন্দিরও দেখতে পাওয়া যায় না কোথাও। কিন্তু এই ভারতে নাকি একটি ইন্দ্রের মন্দির আছে।যেখানে প্রতি বছর বৈশাখ মাসে ইন্দ্রের পূজা করা হয়।যেই দেবতার পূজা গোটা বিশ্বব্রহ্মণ্ডের করা হয় না সেখানে এই ভারতের একটি জায়গায় দেবরাজ ইন্দ্রের পূজার প্রচলিত রয়েছে। কিন্তু  এই পূজা করার পিছনে কি কারন রয়েছে এবং কোথায় বা এই মন্দির রয়েছে?

মালদা জেলার মানিকচক ব্লকের আমবাগান ঘেরা ধনরাজ গ্রামে রয়েছে দেবরাজ ইন্দ্রের পূজা।যেখানে  প্রতিবছর  বৈশাখ মাসের ২ তারিখ ধুমধাম করে করা হয় ইন্দ্রের পুজো এবং তার সাথে গ্রামের বাসিন্দারা মেলার আয়োজন করেন।  এই মিলন মেলার উৎসব চলে পুজোর পর সপ্তাহব্যাপী ।এই মন্দিরের পূজা দেওয়ার জন্য  এখানে হাজারো হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে।

দেবরাজ ইন্দ্রের প্রতিষ্ঠিত এই মন্দির প্রায় দুই থেকে তিন শতাব্দী আগে স্থাপিত করা হয়েছিল।  ইন্দ্রদেবের পুজো হলেও তেমন কোনো প্রতিষ্ঠিত মূর্তি দেখতে পাওয়া যায় না। এই মন্দিরে ঐরাবত বহনের পিঠে দেবরাজ ইন্দ্র বসে রয়েছেন এবং তার  মাথায় রয়েছে ছাতা। দেবতাদের রাজা হওয়ার কারনে  এই মন্দিরটি   রাজ দরবারের আদলে  তৈরি করা হয়েছিল। দেবরাজ ইন্দ্রের দুই পাশে রয়েছে দুইজন দ্বারপাল বা দ্বাররক্ষী। এবং একটি শিবলিঙ্গ রয়েছে যেটি এই মন্দির থেকে কিছুটা দূরে সামনেই রয়েছে।  

এই পূজার প্রচলনের পিছনে রয়েছে একটি কারন। স্থানীয়দের মধ্যে কথিত রয়েছে যে, এক সময় গঙ্গা নদীর একটি খাঁড়ি ধনরাজ গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছিল।তখন মূলত ওই  গ্রামে বসবাস ছিল মৎস্যজীবীদের। কথিত রয়েছে যে, কোনও এক বছর ব্যাপক খরা দেখা দেওয়ার কারনে গঙ্গার খাঁড়িগুলির জল শুকিয়ে যায়। বৈশাখ মাসে খাঁড়ির জল শুকিয়ে যাওয়ার কারনে চরম সমস্যায় মুখে পড়তে হয়েছিল মৎস্যজীবীদের তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে। তাই তখন বৃষ্টির প্রয়োজন ছিল মৎস্যজীবীদের। এই কারনেই মৎস্যজীবীরা এই গ্রামের  ঘটা করে পূজা করেন ইন্দ্র দেবতার। এবং এরপরই শুরু হয়েছিল বৃষ্টিপাত। বৃষ্টি হওয়ার কারনে গঙ্গার খাঁড়িগুলি জলে ভরে গিয়েছিল । যার ফলে মৎস্যজীবীরা সেই জলে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে আবার শুরু করে।সেই থেকেই নাকি প্রতিবছর  বৈশাখ মাসের ২ তারিখ ধুমধাম করে পালন করা হয়ে আসছে ইন্দ্রের পুজো।

কিন্তু ঠিক কবে থেকে এই পুজোর সূচনা করা হয়েছে তা অজানা এলাকার বাসিন্দাদের কাছে।  তবে তাদের দাবি যে এই পুজো আরও প্রাচীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *