অফবিট

তাইওয়ান এবং চীনের মধ্যে কেন যুদ্ধ বাঁধতে পারে জানা আছে?

নিউজ ডেস্ক  – বিগত কয়েক বছর ধরেই তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে এক প্রকার খণ্ডযুদ্ধ তৈরি হয় রয়েছে। কেউ দাবি করছে তাইওয়ান স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পাক তো কারোর দাবি চীনের অংশ হিসেবেই থাক। সে কারণেই দু’পক্ষের দ্বিমতের ক্ষেত্রে এখনো পর্যন্ত কি রয়েছে খণ্ডযুদ্ধ! এই বিষয়ে রয়েছে অনেকের কৌতুহল। 

চীন ও তাইওয়ানের সম্পর্ক জানতে গেলে ইতিহাসের পাতা উল্টাতে হবে। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে একসময় ওলন্দাজ কলোনি হিসেবে পরিচিত ছিল তাইওয়ান।  এরপর ১৬৮৩ সাল থেকে ১৮৯৫ সাল পর্যন্ত চীনের রাজারাই শাসন করতো তাইওয়ানকে। দীর্ঘ কয়েক বছর পর চীনের উপর হামলা করে তাইওয়ান দখলে নিয়েছিল জাপান।  কিন্তু বেশিদিন সেই দখলদারি বজায় রাখতে পারেনি জাপানি সরকার।  কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গোটা বিশ্ব জুড়ে লন্ডভন্ড হওয়ার কারণে তাইওয়ানের দায়িত্বভার এসেছিল চিয়াং কাইশেকের নেতৃত্বাধীন চীন সরকারের হাতে। কিন্তু তাতেও দেখা দেয় বিপত্তি।  চীনের মাও জেদংয়ের  নেতৃত্বে কমিউনিস্ট বাহিনী সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হয় চিয়াং কাইশেকের।   এরপরই চীনের বেশিরভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ হারায় তারা।  এমনকি কমিউনিস্টদের ভয়ে  তাইওয়ানে পালিয়ে যায় চিয়াং কাইশেকের সরকার। এরপরই চীন হাতছাড়া হতেই তাইওয়ানে  রিপাবলিক অফ চায়না নামক এক সংগঠন তৈরি করে সরকার  তাইওয়ানকে নিজেদের দাবি করার পাশাপাশি চীনের প্রতিনিধিশীল সরকার বলেও দাবি করেছিলেন। 

এরপরই দীর্ঘদিন যাবত জাতিসংঘ থেকে বিশ্বের অনেক দেশে চিয়াং কাইশেকের সরকারকেই চীনের সত্তিকারের সরকার  মনে করতেন।  কিন্তু আসল সত্য হলো ১৯৭১  সাল পর্যন্ত তাইওয়ানের সরকার চীনকে প্রতিনিধিত্ব করে এসেছে।  যদিও সেই বছরই জাতিসংঘ বেইজিংয়ের সরকার সত্যিকারের সরকার বলে স্বীকৃতি দেয়। 

তবে যখন বিশ্বের প্রায় সব দেশ বেইজিংয়ের পক্ষপাতিত্ব করতে শুরু করে তখন ১৯৮০ দশক পর্যন্ত চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ চলতেই থাকে।  এই দু’দেশের সম্পর্কের তিক্ততা শুরু হলেও এরা কোনদিনও নিজেদের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত রাখেনি।  ২০০০ সালের তাইওয়ানের নতুন প্রেসিডেন্ট হন চেন শুই বিয়ান। ২০০৪ সালে নতুন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছিলেন যে তাইওয়ানকে চীন থেকে আলাদা করে সম্পূর্ণ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করানো হবে। কিন্তু এই প্রেসিডেন্টের ঘোষণা শুনে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে যায় চীনের সরকার। এরপরই চীন রুষ্ট হয়ে ২০০৫ সালে একটি আইন পাস করে। যেখানে স্পষ্ট লিখেছিলেন তাইওয়ান যদি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে তাহলে চীন সর্বশক্তি দিয়ে তাইওয়ানের উপর হামলা করবে।  তবে তাইওয়ানের অর্ধেক অর্থনীতি নির্ভর করে চীনের উপর।  তাই অযথা চীনের সঙ্গে কোন খারাপ সম্পর্ক তৈরি করতে চায়নি তারা। 

বর্তমানে তাইওয়ানের দুটি বড় দল রয়েছে। সেই দুটি দলের মধ্যে একটি ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি স্বাধীনতার পক্ষে এবং অন্যটি কুওমিন্টাং পার্টি তথা কেএমটি দল যার চায় দেশটি  চীনের সঙ্গে এককী করণ বজায় রাখতে। এছাড়াও আরেক অংশ সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ মতবাদ দিয়েছে।  সেক্ষেত্রে তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব স্তিমিত হলেও রয়েছে ্অব্যাহত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *