আমেরিকার কোথায় রাত কাটাতে গেলে ভৌতিক পিয়ানোর শব্দ শুনতে পাওয়া যায়?
ভৌতিক ঘটনা নিয়ে মানুষের কৌতুহল বরাবরের ।যদিও আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষেরই ভূত শব্দটা শুনলে বেশ ভয়ই লাগে তবুও ,ভৌতিক জিনিসের প্রতি যেন একটা অসম্ভব আকর্ষণ থেকেই যায়। আর সেই থেকেই স্বাভাবিকভাবেই মানুষের কৌতুহল ভুতুড়ে জায়গা নিয়েও। আর এরকম জায়গা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
তবে , অশরীরী আত্মার আবাস বললে প্রথমেই মনে পড়ে কোন ভাঙাচোরা বাড়ির কথা। কিন্তু,সবসময় এটা সত্যি নাও হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো রাজ্যের এস্টেস পার্ক শহরে অবস্থিত স্ট্যানলি নামক ঝাঁ-চকচকে হোটেলটি এরকমই একটি উদাহরণ। ভুতুড়ে জায়গার কথা উঠলে এরকম একটা বিখ্যাত ফাইভ স্টার হোটেলের নাম মাথায় আসে না ঠিকই তবে জানলে অবাক হবেন এটাই কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর ভৌতিক হোটেল গুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে।
হোটেলটি নির্মিত হয় ১৯০৯ সালে। ফ্রিলান অস্কার স্ট্যানলি কলোরাডো ঘুরতে আসা আমেরিকার হাই সোসাইটির ব্যক্তিত্বদের থাকা-খাওয়ার সুবিধার জন্য এই হোটেলটি তৈরি করেন ।
তবে, সেইসব দিন তো কবেই অতীত হয়েছে বর্তমানে হোটেলটির পরিচিতি এখানে ঘটে যাওয়া নানারকম অস্বাভাবিক ভৌতিক ঘটনার জন্য । বলা হয় এখানে নাকি প্রায়ই বিভিন্ন অশরীরী আত্মা কে দেখতে পাওয়া যায় এছাড়াও রাতের বেলা বিভিন্ন অদ্ভুত আওয়াজ তো আছেই সেই সঙ্গে কখনো কখনো আবার পিয়ানো বাজানোর আওয়াজ ও শোনা যায় এই হোটেলে।কিন্তু কেন এমন হয় ?প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে এই আত্মা আর কেউ নয় স্বয়ং অস্কার স্ট্যানলি র স্ত্রী ফ্লোরা স্ট্যানলির অতৃপ্ত অনুভূতি আত্মা। হোটেলে রাত কাটিয়ে আসা পর্যটকদের কথা অনুযায়ী প্রায়ই রাতের বেলা প্রায় ই তাকে হেঁটে বেড়াতে দেখা যায় এই হোটেলে।
স্ট্যানলি হোটেলে রাত কাটিয়ে আসা অনেকেই বলেছেন যে তারা রাতের বেলা পিয়ানো বাজানোর আওয়াজ শুনতে পেয়েছেন। কথিত আছে ফ্লোরা স্ট্যানলি ভালো পিয়ানো বাজাতে পারতেন। মনে করা হয় এখনো তার অতৃপ্ত আত্মাই হোটেলের ঘটে যাওয়া এই ভৌতিক ঘটনার কারণ।
জানলে অবাক হবেন স্টিফেন কিংয়ের ১৯৭৭ সালে লেখা বেস্ট সেলার উপন্যাস ‘দ্য সাইনিং’এই হোটেলের অদ্ভুত ভৌতিক সব কাণ্ডকারখানা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা। স্টিফেন কিং সস্ত্রীক এই হোটেলে এক রাত কাটান। ট্যুরিস্ট সিজন শেষ হয়ে যাওয়ায় ওই সময় হোটেলটিতে আর কোনো অতিথি ছিল না আর সেই ফাঁকা হোটেলের হোটেলের লম্বা করিডর, মনুষবিহীন ডাইনিং রুম সবকিছুই গায়ে শিহরন আনার জন্য যথেষ্ট ছিল । হোটেলের ২১৭ নম্বর কামরায় রাত্রি যাপন করে তিনি নাকি ক্রমাগত সারারাত অদ্ভুত শব্দ চিৎকার পায়ের আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন । এখানেই শেষ নয় বিভীষিকার, শেষ রাতে মারাত্মক দুঃস্বপ্ন দেখেন তিনি । আর তার এই বাস্তব অভিজ্ঞতায় ফুটে উঠেছে দ্য শাইনিং এ ।
এছাড়া ভৌতিক কাণ্ডকারখানার জন্য এই হোটেল এতোটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে ,২০০৬ সালে টেলিভিশন শো ঘোস্ট হান্টারের একটি পর্ব নির্মাণ করা হয় স্ট্যানলি হোটেলের ওপর। এখনো স্ট্যানলি হোটেলে প্রতি বছর হাজারো অতিথি এসে ভিড় জমান। অলৌকিক ঘটনার প্রতি আপনার যদি টান থাকে আর ভবিষ্যতে যদি কখনো কলোরাডো ঘুরতে যান তবে এবার নিশ্চয়ই একবার ঘুরে আসুন এই হোটেলটি।