কিম ২ সাং এর মতো পৃথিবীর আর কোন কোন কমিউনিস্ট নেতাদের দেহ কবর দেওয়া হয়নি জানেন?
নিউজ ডেস্কঃ –দেশের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে তার প্রাক্কালে একটি গোষ্ঠী ও সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য সমস্ত মসজিদের অর্থাৎ নেতা তৈরি করা হয়েছে। বহু নেতা রয়েছে যারা নিজেদের ভাল কর্মের জন্য সুনাম অর্জন করে সকলের হৃদয়ের মৃত্যুর পরেও অমরত্ব লাভ করেছে। কিন্তু এমন কিছু নেতারাও রয়েছে যারা নিজেদের কৃতকর্মের জন্য সকলের স্মৃতিতে থাকলেও মনে কোনদিন জায়গা করে নিতে পারেননি। এইসকল কমিউনিস্ট বা সাম্যবাদী নেতারা নিজেদের রূপচর্চা নিয়ে বড়ই পজেসিভ। যার কারণে মৃত্যুর পরেও যাতে নিজেদের রূপ অব্যাহত থাকে এবং দেহাবশেষের বিকৃত না হয় তার জন্য এমন অকল্পনীয় কিছু ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন তারা। এমন কয়েকটি নেতা ও তাদের আশ্চর্যজনক ক্রিয়া-কলাপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
সর্ব প্রথম সারিতে আসে মাও সে তুং। কমিউনিস্ট পার্টির নেতার জীবনদশা ছিল ১৯৪৯-১৯৫৯ সাল পর্যন্ত। তিনি খুব অল্প বয়সে অর্থাৎ ১৯৩৫ সাল থেকে শুরু করে আমৃত্যু পর্যন্ত চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ছিলেন। তবে ৮২ বছর বয়সে পারকিনসন্স রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার। তবে নেতার আজীবন একটি ইচ্ছা ছিল যে মৃত্যুর পরে তাকে যেন দাহ করা না হয়। তার এই ইচ্ছা কে সমর্থন জানিয়ে তাঁর দলের সদস্য সহ স্ত্রী কোনদিনও তার মৃতদেহ দাহ করেনি। যার কারণে সকলের পরামর্শে দেহটি সংরক্ষণ করা হয়। তবে ৮ বছর পর রাশিয়াকে স্টালিন মুক্ত করার উদ্দেশ্যে তাকে দাফন করা হয়।
তালিকার দ্বিতীয় সারিতে রয়েছে ভ্লাদিমির লেনিন। তিনিও ঠিক একই ভাবে নিজের দেহ দাহ করানোর ঘোর বিরোধিতা করতেন। যার কারণে তার পরিবারের সদস্যরা বহু বিশিষ্ট বিজ্ঞানীদের নিয়ে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ১০০ বছর পর্যন্ত তার মৃতদেহ বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। জাগরণের যেসব কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়েছিল সেগুলো ছিল বড্ড ব্যয়বহুল। কিন্তু মৃতদেহ সংরক্ষণের ১০০ বছর পূর্তি হতেই কবর দেওয়া হয়।
তৃতীয় স্থান অধিকার করে রয়েছে হো চি মিন। ইনি ছিলেন ভিয়েতনামার সবচেয়ে সম্মানীয় নেতা তথা রাষ্ট্রপতি। ইনি দেশের স্বাধীনতার জন্য এক বিরাট ভূমিকা পালন করেছিলেন। যার জন্য যখন তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে ১৯৬৯ সালেহিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তখন প্রিয় নেতাকে কোনমতেই জনগণ দাহ করতে দেয়নি।তাই শহরের মাঝখানে বিশালে এক মোসেলিয়ামে তার মৃত দেহ সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। এমনকি জনগণের ভালোবাসা জেরে শহরের নাম বদলে তার নাম অনুকরণ করে রাখা হয়েছিল হো চি মিন সিটি।
চতুর্থ স্থান অধিকারীর করেন কিম ২ সাং। উত্তর কোরিয়ার এই নেতার জীবনকাল ছিল ১৯৪৮-১৯৯৪ সাল পর্যন্ত। নিজের জীবনকালের সম্পুর্ণ সময় তার তিনি ছিলেন প্রেসিডেন্ট ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক। তবে তার মৃত্যু হওয়ার পর তার মৃত দেহকে কুমশুসান প্যালেসে সংরক্ষণ করে রাখা হয়। পাশাপাশি কিম জং ২-য়ের ক্ষেত্রেও ঠিক একই দৃশ্য দেখা যায়। কিম জং 2 ছিলেন কিম ২ সাংয়ের পুত্র। চার কারণে পিতার মৃত্যুর পর থেকে নিজের মৃত্যু অর্থাৎ ২০১১ সালের ১৭ই পর্যন্ত প্রায় দুই দশক ধরে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তাঁর মৃত্যুর পর পিতার সঙ্গে তাঁর দেহ সংরক্ষণ করে রাখা হয়।
সর্বশেষে রয়েছে মার্কোস। তার জীবন দশা ছিল ১৯৬৫-১৯৮৬ সাল পর্যন্ত। তিনি তার জীবনে ফিলিপাইনে রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তবে সেই পথ থেকে বহিস্কৃত অবস্থায় ১৯৮৯ সালে হাওয়াইয়ে মৃত্যু হয় তার। কিন্তু তার স্ত্রী শবদেহ কোন রকম ভাবে ভূমিষ্ঠ বা দাহ করার পক্ষপাতী ছিলেন না। যার কারণে মৃত্যু দেহ দীর্ঘদিন যাবৎ ফ্রিজে রাখা হয়। পরবর্তীতে অর্থাৎ ২০০১ সালে প্রেসিডেন্ট ফিদেল রামোসের শাসনামলে তার দেহ ফিলিপাইনের ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু তার সমাধিস্থ করতে তাই স্ত্রীর বিরুদ্ধে জানায় সম্পূর্ণ নগরীক। যার কারণে দেহটি বর্তমানে বাটাক গ্রামের মেসোলিয়ামে ক্রিস্টাল কফিনে রাখা রয়েছে।