নিজের পরমবন্ধুকে কেন হত্যা করেছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ?
নিউজ ডেস্কঃ শ্রীকৃষ্ণের মিত্রদের মধ্যে সবার আগে যে নামটি আমাদের মনে আসে সে হল সুদামা। এবং মনে করা হয় সুদামা শ্রীকৃষ্ণের প্রিয় মিত্রদের মধ্যে একজন ছিলেন।কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের এই অতি প্রিয় মিত্রের হত্যা করেছিলেন স্বয়ং মহাদেব এবং তাঁকে সহায়তা করেছিলেন স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ।কি শুনে অবাক হলেন তো।তবে এটা সত্য।কিন্তু কেন মহাদেব সুদামাকে হত্যা করেছিলেন এবং কেনই বা শ্রীকৃষ্ণ সহায়তা করেছিলেন?
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, একবার শ্রীকৃষ্ণ গোলোক সফরে সুদামাকে তার প্রাসাদের দ্বার পাহারা দিতে বলেছিলেন এবং কেউ যাতে প্রবেশ করতে না পারে তার নির্দেশ দেন।সেই আদেশ অনুসারে শ্রীকৃষ্ণের দ্বার পাহারা দেন সুদামা।এরপর সেখানে আসে উপস্থিত হন শ্রীরাধা।কিন্তু সুদামা রাধাকে শ্রীকৃষ্ণের প্রাসাদের ভিতরে প্রবেশ করতে বাঁধা দেয়।কারন তখন শ্রীকৃষ্ণ বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।রাধাকে প্রাসাদে প্রবেশে বাঁধা দেওয়ার কারনে সুদামার উপর খুবই ক্রোধিত হয়ে যায় এবং ক্রোধের বশে সুদামা অভিশাপ দেয় যে সে শ্রীকৃষ্ণের সব কথা ভুলে যাবে এবং স্বর্গলোক ত্যাগ করে মর্তলোকে জন্ম গ্রহন করার।এই অভিশাপের কারনে সুদামা মর্তলোকে জন্মগ্রহণ করেন অসুররাজ শঙ্খচূড়রূপে।
অন্যদিকে রাধার অভিশাপের কারনে দেবী তুলসিকেও মর্ত্যলোকে জন্মগ্রহন করতে হয়েছিল। তারপর তুলসি দেবীর সাথে শঙ্খচূড়ের বিবাহ হয়। শঙ্খচূড়ের বর ছিল যে “ তার স্ত্রীর সতীত্ব নষ্ট হলেই তার মৃত্যু হবে”। কিন্তু তুলসি দেবী ছিলেন এক সতী নারী।তাই শঙ্খচূড় এই বর লাভ করার পর হয়ে উঠে অত্যাচারী।শুরু হয় দেবদেবতাদের উপর তার অত্যাচার।এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সমস্ত দেবদেবতারা শরনাপর্ণ হন মহাদেবের কাছে।এরপর মহাদেব সকল দেবগনের সাথে বিষ্ণুদেবের কাছে গিয়ে সমস্ত বিষয় জানান।তখন বিষ্ণুদেব দেবতাদের শঙ্খচূড়ের হাত থেকে দেবতাদের রক্ষা করার জন্য শঙ্খচূড়ের রূপ ধারন করে।এরপর বিষ্ণুদেব শঙ্খচূড়ের রূপ ধারন করে তুলসি দেবীর কাছে যান তাঁর সতীত্ব নষ্ট করার জন্য।কারন তুলসি দেবীর সতীত্বের জন্য শঙ্খচূড়কে পরাজিত করতে পারছিলেন না। তুলসি দেবী ভগবান শঙ্খচূড়ের বেশে থাকা ভগবান বিষ্ণুকে তাঁর স্বামী হিসাবে মনে করে।যার ফলে তাঁর সতীত্ব নষ্ট হয়।আর তখনই শিব শঙ্খচূড়কে বধ করে।এইভাবে শ্রীকৃষ্ণের সহায়তায় ভগবান শিব তার মিত্র তথা ভক্ত সুদামাকে হত্যা করেন।