পৃথিবীর কোন দেশের আদিবাসীরা মৃত মানুষের ছাই খেয়ে জীবনযাপন করেন?
নিউজ ডেস্ক – গোটা পৃথিবীতে সব ধর্ম অনুসারে কোন মৃত মানুষকে পুড়িয়ে দেওয়া হয় নয়তোবা কফিনবন্দি করে কবর দেওয়া হয়। কিন্তু পৃথিবীর বুকে এমন কিছু আদিবাসী গোষ্ঠী রয়েছে যারা মৃত মানুষের মরদেহ পুড়িয়ে তার ছাই খায়। এমন অদ্ভুত আদিবাসী গোষ্ঠী দেখতে পাওয়া যায় অ্যামাজনের বৃষ্টি অরণ্য। তাছাড়া এদের নাম ইয়ানোমামি উপজাতি।
ইয়ানোমামি উপজাতিদের মধ্যে একুশ শতকে দাঁড়িয়েও কোন সভ্যতার ছোঁয়া লাগেনি। যার কারণে এরা বর্তমানে উলঙ্গ হয়ে চলাফেরা করে, এমনকি উন্মুক্ত তাঁবুতে বসবাস করে। তবে এই আদিবাসী গোষ্ঠীর এমন অদ্ভুত ক্রিয়া-কলাপের পেছনেও রয়েছে কিছু কারণ। জানাজায় আদিবাসী গোষ্ঠীর শত্রুদের নাম শয়ামন ট্রাইব। তাই গোষ্ঠীদের ধারণা অনুযায়ী ইয়ানোমামি সম্প্রদায় কোন ব্যক্তির মৃত্যু হয় তাদের শত্রুদের পাঠানো পিচাশের কারণে। যার কারনে কারোর মৃত্যু হলে তারা প্রথমে মৃতদেহটিকে জঙ্গলে পাতা দিয়ে মুড়িয়ে ৩০-৩৫ দিন জঙ্গলের মধ্যে ফেলে রাখে। পরবর্তীতে যখন দেহটি গলে যায় তখন তার থেকে সমস্ত হাড় বের করে সেটিকে আগুনে পুড়িয়ে ছাইয়ে পরিণত করা হয়। সেই ছাই সংগ্রহ করে পচা কলার স্যুপের মধ্যে সংমিশ্রণে মাধ্যমে স্যুপ তৈরি করা হয়। তবে এটি শুধুমাত্র কোন একটি পরিবারে খেতে হয় না গোটা গোষ্ঠীর মধ্যে কোন একজন ব্যক্তির মৃত্যু হলে এমনটা করে থাকে তারা। এরপরে তারা একত্রিত হয় এই স্যুপ পান করে। তবে সম্পূর্ণ খেতে না পারলে সেটি অন্য গোষ্ঠীকে প্রদান করা হয়। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এই প্রথা। মূলত পরিসংখ্যান করে দেখা গিয়েছে অ্যামাজনের বৃষ্টি অরণ্য প্রায় ২০০-২৫০টি পরিবার বসবাস করে। বিষয়টি বর্তমান যুগের শিক্ষিত সমাজের কাছে অদ্ভুত লাগলেও তাদের কাছে এটি নিয়ম। কারণ তারা মনে করে এই পদ্ধতির মাধ্যমে কোন মৃত ব্যক্তির দেহের পোড়া ছাই খেলে সে আবার পরবর্তীতে জন্মগ্রহণ করে। কার্যত এই কুসংস্কারে ভিত্তিতে নিজের জীবন জীবিকা অতিবাহিত করে এই আদিবাসী সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা।