নাক থেকে রক্ত পড়া থামাতে সাহায্য করে। পান পাতার ১৫ টি ভেষজ উপকারিতা

যেকোনো শুভ কাজে পান পাতা ব্যবহার করা হয়। যেমন বিয়ের তত্ত্ব বা শুভদৃষ্টিতে অথবা পূজা পার্বনেও।এছাড়াও পান পাতা মুখ সুগন্ধি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। কিন্তু, জানেন কি এইসব ছাড়াও পান পাতার কিছু ভেষজ গুণও আছে। 

                                জেনে নেওয়া যাক কি কি গুন আছে পান পাতার-

• মাউথ ফ্রেশনার :

              পান পাতা খাওয়ার ফলে যে রস উৎপাদন হয় তা আমাদের দাঁত , মাড়ি সুস্থ রাখে | পান পাতার রস আমাদের মুখের ভেতর পরিষ্কার রাখে | মুখের মধ্যে রক্তপাত বন্ধ করে | পান বেটে তার রস এক কাপ হাল্কা গরম জলে মিশিয়ে রোজ সকালে তা দিয়ে গর্গর করুন । কয়েকদিনর মধ্যেই তফাত দেখতে পাবেন। 

• নাক থেকে রক্ত পড়া থামায় :

              সান স্ট্রোক হওয়ার ফলে কখনো কখনো নাক দিয়ে রক্ত পড়ে। এটা বন্ধ করতে পান পাতা পাকিয়ে নাকের মধ্যে গুঁজে দিন | মাথা পিছনের দিকে হেলিয়ে রাখুন । কিছুক্ষণের মধ্যেই রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যাবে ।

আসলে পান পাতা খুব তাড়াতাড়ি রক্ত জমাট বাঁধিয়ে দিতে পারে ।

• কানের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে :

              পান পাতার আরো একটা বড় বেনিফিট হল এটা কানের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে । কয়েক ফোঁটা পানের রস আর কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে কানের মধ্যে দিলে ব্যথা কমে যাবে ।

তবে এই ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই ভালো। 

• অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে ব্যবহার:

              ছোটখাটো কাটা ছেড়ায় পান পাতা বেটে লাগিয়ে দিতে পারেন ।এছাড়াও যাদের আর্থারাইটিস আছে তাদের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে পান পাতা। 

• ডিওডোরেন্ট হিসেবে কাজ করে :

                স্নান করার জলে কিছুটা পান পাতার রস মিশিয়ে নিন । এই জল দিয়ে স্নান করলে সারাদিন ফ্রেশ লাগবে । এছাড়াও ঘাম কম হবে । পান পাতা দিয়ে জল ফুটিয়ে ঠান্ডা করে সেই জল পান করলে ঘামের গন্ধ কমবে ।

এমনকী মহিলাদের মেনস্ট্রুয়েশন স্মেলও কমবে। 

• প্রস্রাব করতে সাহায্য করে :

               যাদের কিডনির রোগ আছে তাদের প্রস্রাব করতে কষ্ট হয় । এই কষ্ট কমাতে সাহায্য করে পান পাতা | শরীর থেকে দ্রুত জল বের করে দেয় পান পাতা। দুধের সঙ্গে পান বেটে খেলে এই ব্যাপারে সাহায্য পাবেন। 

• ত্বকের জন্য ভালো :

              পানে যে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল প্রপার্টি আছে তা পিম্পল‚ অ্যাকনে সহজেই সারিয়ে তোলে | এছাড়াও বিভিন্ন স্কিন অ্যালার্জি‚ ফুসকুড়ি‚ কালো ছোপ‚ সান বার্ন সারিয়ে দেয় ।

এর জন্য কয়েকটা তাজা পান পাতা আর কাঁচা হলুদ একসঙ্গে বেটে লাগাতে হবে। 

• মাথা ব্যথা কমায় :

               গরমের কারণে মাথা ব্যথা করলে কপালে কয়েকটা পান পাতা রাখুন। 

এছাড়াও পান পাতার রস লাগালে তাড়াতাড়ি মাথা ব্যথা কমে যায়। 

• অ্যান্টি ফাংগাল :

                 শরীরের যে সব অংশে ফাংগাল ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা আছে‚ যেমন পায়ের আঙুল‚ হাতের আঙুল, ইত্যাদি সেই সব জায়গায় পানপাতার রস লাগান। কয়েকদিনের মধ্যে ইনফেকশন সেরে যাবে। 

• সতর্কতা বাড়ায় :

                নিজেকে লেথার্জিক লাগলে, মধুর সঙ্গে পান পাতা বেটে খান। এতে এনার্জি তো ফিরে পাবেনই একই সঙ্গে মেন্টাল ফাংশানিংও জোরদার হবে।

• সর্দি কমায়:

               বুকে সর্দি জমে গেলে সরিষার তেল আর পান পাতা ভালো করে গরম করে বুকে লাগাতে হবে। এছাড়াও ঠান্ডা লেগে সর্দি হলে পান পাতা‚ এলাচ‚ লবঙ্গ একসঙ্গে ফুটিয়ে গাঢ় করে খেতে হবে।

• হজমশক্তি বাড়ায়:

              সাধারণত খাওয়ার পর পান খায়। কারণ পান হজম করতে সাহায্য করে। গ্যাস‚ অম্বলও কমায়। এছাড়াও কনস্টিপেশনের সমস্যার জন্যেও উপকারী। পেট খারাপ হলে পেটে যে ব্যথা করে অনেকসময় তাও কমাতে সাহায্য করে।

• মেটাবলিজম বাড়ায়:

              নিয়মিত পান খেলে শরীরের মেটাবলিজম বাড়ে। এর ফলে ব্লাড সার্কুলেশন বেড়ে যায়। যা বিভিন্ন প্রটিন‚ ভিটামিন‚ মিনারেল অ্যাবজর্ব করতে সাহায্য করে। 

• খিদে বাড়ায়:

                পেটের Ph লেভেল ঠিক করতে সাহায্য করে পানের রস। ফলে পেটে বায়ু হয় না। পেট ফাঁপা কমায়। পান পাতা আমাদের শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। তাই খিদে বাড়ে। 

• ক্ষত নিরাময়ে:

               পান পাতায় আছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল রাসায়নিক। তাই পান পাতা বেটে ক্ষতস্থানে দিলে দ্রুত ক্ষত নিরাময় হয়। পান পাতা ব্যবহার করলে সংক্রমণের ভয় থাকে না। পানের বেদনানাশক গুণ থাকায় ব্যথা হতে মুক্তি মেলে।

• গলা খুসখুস কমাতে সাহায্য করে:

                 গলা খুসখুস করলে পান পাতার ৫ মিলিলিটার রস এক গ্লাস গরম জলে মিশিয়ে আস্তে আস্তে খান। আরাম পাবেন। 

এমনকি বিখ্যাত অনেক গায়ক গলা ভাল রাখতে এই সূত্র ব্যবহার করেন।