হানিমুন কাপলদের বেড়াতে যাওয়ার ড্রিম ডেস্টিনেশান। ইন্দোনেশিয়ার এই স্থানে বেড়াতে যাবেন নাকি?
নিউজ ডেস্ক – নব বিবাহিত দম্পতিরা সর্বদাই নির্জন ও একান্ত পরিবেশে সময় কাটাতে সর্বদা পছন্দ করেন। তবে সেই নিরিবিলি জায়গায় যদি রোমাঞ্চকর হয়ে থাকে তাহলে কোন কথাই নেই। বাঙালির প্রাথমিক গণ্ডি দীঘা-পুরী-দার্জিলিং থেকে বেরিয়ে যদি এবার একটু অন্য রকম জায়গায় যাওয়া যায় তাহলে মন্দ হয় না। ঠিক সেরকমই একটি হানিমুন ডেস্টিনেশন হলো বালি।
লোকো ভাষ্যমতে বালিকে বলা হয়ে থাকে দা লাস্ট প্যারাডাইস অন আর্থ। এটি ইন্দোনেশিয়ার একটু উপকূলবর্তী স্থানে অবস্থিত। ইন্দোনেশিয়ার একাধিক দ্বীপ গুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বালি। এখানকার মনোরম পরিবেশ পর্যটকদের বেশি আকর্ষণ করে। ইন্দোনেশিয়ার এই দ্বীপটিতে এমন প্রচুর দর্শনীয় স্থান রয়েছে যেখানে পর্যটকরা ভিড় জমায়। যেমন –
১) উলুয়াতু – বালির অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র উলুয়াতু। এখানে প্রকৃতির অপার্থিব সৌন্দর্য নজর কাড়ে পর্যটকদের। এর থেকেও বিশেষ করে বেশি আকর্ষণীয় হচ্ছে এই অঞ্চলটিতে ১১ শতকে নির্মিত পুরনো মন্দির রয়েছে যেটি পাহাড়ের ৭০ মিটারের উপর স্থাপিত স্থাপত্যশৈলী। সূর্যোদয়ের সময় মন্দিরের চূড়ার থেকে সূর্য কিরণের অমূল্য দৃশ্য মনমুগ্ধকর সকলের কাছে।
২) কিউটা সৈক্ত – বালির সবচেয়ে আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকত হল কিউটা। এই বিচে সাদা ও সমতল সৈকত সার্ফিং প্রেমীদের কাছে আকর্ষণীয়। এখানে পর্যটকরা ভিড় জমায় সমুদ্রের মনোরম দৃশ্য দেখতে।
৩) তানহা লট – এই অঞ্চলের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে শতাব্দীপ্রাচীন মন্দির। এখানে সমুদ্রের কোল ঘেঁষে থাকা পর্বতাবৃত তিনটি পাহাড়ের চূড়ায় দেড় বছরের পুরনো তিনটি দৃষ্টিনন্দন মন্দির রয়েছে। এই মন্দির গুলি এতটাই মনোরম এবং পূর্ব প্রাচীন যে বহু পর্যটক মন্দিরের দর্শন এখানে ছুটে আসে। এছাড়াও আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে যখন সমুদ্রের জোয়ার হয় তখন মন্দিরগুলি ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পদ্মফুলের আকৃতিতে ভাসমান অবস্থায় দেখা যায়।
৪) কান্তামানি মাউন্ট বাতুর – বালি দ্বীপের এই অঞ্চলটিকে বলা হয় ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি। এটি পূর্বদিকে অবস্থিত। ১৮০০ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রায় ২৪ বার অগ্নুৎপাত হয়েছে এই আগ্নেয়গিরিতে। ১৯৭০ সালে সর্বশেষে অগ্নুৎপাত এর ঘটনা ঘটেছিল কোন তারপরে আর কোন অগ্নুৎপাত হতে দেখা যায়নি। সেই কারণেই কান্তামানি মাউন্ট বাতুরকে ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি বলে। এই অঞ্চলে পাহাড়ের সর্ববৃহৎ লেক বাতুর রয়েছে। এই অঞ্চলটির আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে পাহাড় ও সমুদ্রের মিলনের এক অপরূপ দৃশ্য।
৫) নুসা দুয়া সৈকত – বালি দ্বীপের এই অঞ্চলটি সম্পূর্ণ শান্ত ও নিরিবিলি। জনো কোলাহলমুখর স্থান থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে সাগরের মাঝে অবস্থিত এই অঞ্চলটি। সেই ক্ষেত্রে নব দম্পতি কিংবা যারা কিছুদিন শান্তিতে নিরিবিলি পরিবেশে সময় কাটাতে চান তাদের জন্য উপযুক্ত স্থান।
৬) সানুর বীচ – যারা সূর্যোদয় দেখতে পছন্দ করেন তাদের জন্য সানুর বীচ জায়গাটি উপযুক্ত স্থান। এখানে সমুদ্রের কল থেকে ওঠার সূর্যোদয়ের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে ছুটে আসে বহু পর্যটকরা। প্রাকৃতিক প্রেমীদের জন্য সূর্যোদয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৭) লোভিনা – প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের মাঝে ডলফিন এর খেলার আনন্দ উপভোগ করতে লোভিনাতে ভিড় জমায় পর্যটকরা। নীল সমুদ্রের মাঝে ডলফিনের কোলাহল দেখতে হলে খুব ভোরেই রওনা দিতে হয় সমুদ্রের উদ্দেশ্যে। তখনই ডলফিনদের দর্শন সম্ভব হয়।
৮) বার্ড পার্ক – বালি দ্বীপে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে যেমন দীর্ঘ বছর পুরনো মন্দিরের দর্শন করা যায় ঠিক সেরকমই প্রকৃতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ জন্তুদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার সম্ভব হয়। সেই কারণেই দীপেস্ট পর্ট নামে একটি অঞ্চলের যেখানে শুধুমাত্র পক্ষী সাম্রাজ্য। ইন্দোনেশিয়া সবচেয়ে বড় পক্ষী আলয় হচ্ছে বার্ড পার্ক। ২ হেক্টর জমির উপর দেশী বিদেশী পাখির সমাহার রয়েছে।
* উপরিউক্ত দর্শনীয় স্থান গুলির ব্যতীত বালিতে অন্যান্য আকর্ষণীয় স্থান এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সেমিন্যক বীচ, আর্ট ভিলেজ, তির্তা এম্পুল ইত্যাদি।