পরাজিত হলেই মৃত্যু দণ্ড। জাপানের নিয়ম জানলে অবাক হবেন
নিউজ ডেস্ক – উন্নত যুগের বহু আগে দেশে আধিপত্য বিস্তার করতো রাজ-রাজাদের। সেই সময়কার যুগে দেশে অধিকার গঠন নতুন যুদ্ধের মাধ্যমে। যে ব্যক্তি তার নিজের শত্রুকে যুদ্ধে পরাজয় করতে পারবে সেই শত্রুর সকল অধিকার সহ অধীনস্থ দেশও বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা রাখতো। যার কারণে প্রাচীন যুগে যুদ্ধবিগ্রহের এক বিশেষ গুরুত্ব ছিল। যুদ্ধে যে সকল ব্যক্তি তলোয়ার বা বর্ষাতে পারদর্শী ছিল তাদের যুদ্ধের সেনাপতি করা হতো। তবে এই সকল ওলন্দাজদের মধ্যে অন্যতম তলোয়ার বাজ ছিলো সমুরাইয়া গোষ্ঠীর মানুষেরা। কিন্তু যেমন ছিল তাদের ধার তেমনই ছিল সেই গোষ্ঠীর কঠোর নিয়ম। কোন যুদ্ধে সৈনিকরা পরাজিত হয়ে ফিরলে তাদের বরাদ্দ ছিল একমাত্র মৃত্যুদণ্ড। এবং এই নিয়মকে যথেষ্ট মান্যতা দিতেন সেই গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা।
সামুরাইদের ইতিহাস ঘাটলে জানা যায় ৭১০ সালে উৎপত্তি হয় এই গোষ্ঠীর। তারা জাপানের তোহুকু অঞ্চলে বসবাস করত। যুদ্ধ কৌশলে বেশ পারদর্শী মানা হতো তাদের। দীর্ঘ দিন যাবৎ যুদ্ধবিদ্যার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকায় এক সময় সেখানকার রাজ-রাজারা তাদের জাতীয় যোদ্ধা বলে আখ্যায়িত করে। এমনকি ১২ শতাব্দী থেকে ১৯ শতাব্দী পর্যন্ত জাপানের শাসকশ্রেণীর সঙ্গে ছিলেন সমুরাই গোষ্ঠীরা। সামুরাই গোষ্ঠীর বাসিন্দারা ছিলো অস্ত্রশস্ত্রের বিষয়ে পারদর্শী। সকল অস্ত্রের ব্যবহার ছিল তাদের নখদর্পণে। তবে যুদ্ধে পারদর্শী হওয়ার পাশাপাশি সকলের ছিল এক বিশেষ নেশা। জানা যায় যুদ্ধ না হলেও সর্বদা নিজেদের কাছেই ‘কাতানা’ এবং ‘ওয়াকিজাশি’ নামক ছোট দুটি তলোয়ার সঙ্গে রাখতেন। তাছাড়া যুদ্ধের সময় ‘তাচি’ নামের লম্বা তলোয়ার এবং ‘টান্তো’ নামের ছোট তলোয়ার সঙ্গে রাখতেন। তারা মনে করতেন তলোয়ারের মধ্যেই রয়েছে তাদের প্রাণ। এই তলোয়ারকে অসম্মান করলে তাদেরও কোনদিন সম্মান থাকবে না। তাই কখনোই নিজেদের কাছ ছাড়া করতেন না ছোট্ট তলোয়ারগুলিকে। তবে এডো যুগ শুরু হওয়ার প্রারম্ভ কাল থেকে অর্থাৎ ১৬০৩ সাল থেকে ১৮৬৮ সাল পর্যন্ত ছিল সমুরাই গোষ্ঠীদের অবস্থিত। কারণ এডো যুগ থেকেই সামুরাইয়ের শক্তি কমতে শুরু করে। যুদ্ধ বিগ্রহও কমতে থাকে। জাপানে শান্ত পরিবেশ বিরাজ করা শুরু করে। বিখ্যাত বিখ্যাত সামুরাই যোদ্ধারা যুদ্ধপেশা ত্যাগ করে শিক্ষক, শিল্পী ও সরকারের বিভিন্ন আমলার চাকরি নেওয়া শুরু করেন। এভাবে সামুরাইদের সংখ্যা কমে ১৮৬৮ সালে পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যায়।