ইন্দোনেশিয়ার গোষ্ঠীর রীতি অনুযায়ী আড়ালে চলছে দেহ ব্যবসা!
নিউজ ডেস্ক – শুধুমাত্র যে পতিতারাই অর্থের বিনিময় অন্য পুরুষের সঙ্গে লিপ্ত হয় তাই নয় ভারতবর্ষে নজর দিলে দেখা যাবে যে বর্তমানে ধর্মীয় গোঁড়ামির পেছনে চলছে দেহ ব্যবসার কারবার। প্রাচীন যুগের দেবদাসীদের ভগবানের সেবিকা হিসেবে মন্দিরে আনলেও তাদের শোষন করতো মন্দিরের মূল পুরোহিত সহ অধিকাংশ ব্যক্তিরা। ধর্মীয় গোঁড়ামিকে সামনে রেখে তার আড়ালে দেহ ব্যবসা করে চলেছে ইন্দোনেশিয়ার জাভানিজেরাও। এই গোষ্ঠীর রীতি অনুযায়ী আড়ালে আজও চলছে দেহ ব্যবসার কারবার।
আসলে কি এই সেক্স মাউন্টেন! আর কেনই বা অদ্ভুত নাম দেওয়া হয়েছে এর। এর কারণ হিসেবে জানতে পৌঁছে যেতে হয় ইন্দোনেশিয়ার জাভা শহরে। জাভার সোলো বা সুরাকারতা শহর থেকে ২৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এই পাহাড়কে স্থানীয়রা ডাকেন গুনুং কেমুকুস বা মাউন্ট কেমুকুস। তবে কালক্রমে স্থানীয় ভাষ্যমতে পাহাড়টির নাম হয়েছে সেক্স মাউন্টেন। তবে এর পেছনে রয়েছে কিছু ইতিহাস। সেটি হল- প্রাচীনকালে সেখানকার রাজবংশে নিজেদের সৎ মা নিয়াই আনজাভারের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন রাজপুত্র প্যানগেরান সামোদ্রো। লোকচক্ষুর আড়ালে তারা নিয়মিত হতেন গুনুং কেমুকুস পাহাড়ের নিচে। এই কারণে বহু বার রাজা সন্দেহ করলেও প্রমাণের অভাবে কাউকেই শাস্তি নিতে পারতেন না। তবে একদিন মনে হয় বিধাতাও মনোকামনা পূরণ করতে দিয়েছিলেন রাজার। যার কারণে একদিন সঙ্গমের সময় ধরা পড়ে যান দু’জনে। এরপরই রাজার আদেশ অনুযায়ী দুজনকে কুপিয়ে খুন করে পুঁতে দেওয়া হয় পাহাড়ের নীচে। সেই থেকে এই পাহাড় হয়ে যায় পূণ্যভূমি। শুরু হয় নতুন রেওয়াজ। জুমাত পন তিথিতেই উৎসবের আয়োজন করে স্থানীয়রা। তাদের ভাষায় উৎসবকে বলা হয় পর্ন ফেষ্টিভেল। এই উৎসবের দিন তারা পাহাড়ের পবিত্র ঝরনায় স্নান করে একাধিক পুরুষের সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হন। প্রাথমিক দিকে এই প্রথা চলত সকলের প্রকাশ্যে। তবে সম্প্রতি প্রশাসনের কড়াকড়িতে পাহাড়ের গালাগোয়া কতগুলি অস্থায়ী হোটেল বা রেস্তুরা নির্মাণ করে সেখানেই চলছে দেহ ব্যবসা নীতি।
শুধুমাত্র এই রীতি স্থানীয়রা পালন করেন সেটি নয়। ৩৫ দিন ধরে চলা এই উৎসবের আড়ালে দেহ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হতে এখানে ভিড় জমায় একাধিক পর্যটকেরা। যাদের মধ্যে যৌনপল্লীর কর্মী সহ বিদেশীরাও উপস্থিত রয়েছেন। স্থানীয়রা মনে করে অন্য পর পুরুষের সঙ্গে যৌন মিলনে লিপ্ত হলে তাদের উপর ভগবান তুষ্ট হয়ে তারা আর্থিক সফলতা লাভ করবে। যদিও সম্পূর্ণ অন্ধবিশ্বাস এই রীতিটি। প্রাথমিক দিকে এটি রীতি ভেবে পালন করলেও বর্তমানে অর্থের বিনিময়ে সেখানে চলে দেহ ব্যবসার কারবার। পৌরাণিক ভাব ধারণার এই নোংরামী সরকারি পক্ষ থেকে নিন্দা করা হয়েছে। এই বিষয়ে জাভার গাদজা মাদা ইউনিভার্সিটি সাইকোলজিস্ট কেওনটিজারো সোয়েপার্নোর মত ধারায়,”অদ্ভুত ব্যাপার ওই এলাকায় মসজিদ রয়েছে, মন্দিরও রয়েছে তাও চলছে এই অনাচার। ধর্মীয় রীতির নাম ভাঙ্গিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে অশ্লীলতার বাড়বাহন্তি।”সুদূরে ইন্দোনেশিয়ার জাভাতে একসময় হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ধর্মের একাধিক মানুষের আনাগোনা থাকলেও বর্তমানে সেখানে ৭৫ শতাংশ রয়েছে মুসলিম। যার কারণে জাভাকে মুসলিম প্রধান দেশ বলা হয়। তবে এই মুহূর্তে সেখানে সাম্রাজ্যে বিস্তার করে এমন প্রকাশ্যে নোংরামি করার ঘোর বিরোধিতা করে ২০১৪ সালে সরকারি পক্ষ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো লোকচক্ষুর আড়ালে সরকারের নজর এড়িয়ে জাভার আনাচে-কানাচে দেহ ব্যবসার কারবার চলছে রমরমা।