অফবিট

বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অপারমানবিক বোম্ব তৈরি ভারতবর্ষের

বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অপরমানু বোম্ব তৈরি করে ফেলেছে ভারত যা টিএনটির থেকেও দ্বিগুন শক্তিশালী। তবে এই ধরনের পরমানু বোম্ব অনেক দেশের কাছেই আছে। এবার ভারতের কাছেও এধরনের শক্তিশালী বোম্ব তৈরীর ফর্মুলা রয়েছে। যার জন্য অদূর ভবিষ্যতে ভারতের তৈরি বোম্ব, আর্টিলারি আরও বেশী শক্তিশালী হতে চলেছে। ভারতীয় নৌবাহিনী এই বোম্বের সফল পরীক্ষাও করে ফেলেছে ইতিমধ্যেই। তবে ভারতের এই বোম্ব আরও দশ থেকে পনেরো বছর আগেই তৈরি করা উচিৎ ছিল। এই বিভাগে চীন ভারতের থেকে খানিকটা এগিয়ে গেছে। তবে দেরীতে হলেও অবশেষে ভারতও এই ধরনের শক্তিশালী বোম্ব তৈরীতে সক্ষম হয়েছে। শক্তিশালী অপরমানু বোম্ব ছাড়াও ভারতের কাছে যথেষ্ট পরিমানে পরমানু অস্ত্রও রয়েছে। 

সম্প্রতি একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে অন্তত দুই দশক পর ভারতের পরমানু অস্ত্রের সংখ্যা পাকিস্তানের থেকেও বেশী। ভারতের কাছে এইমূহুর্তে ১৭২টি পরমানু অস্ত্র রয়েছে। পরমানু অস্ত্রের সক্ষমতা নির্ভর করে তাতে যুক্ত পরমানু বিস্ফোরকের সক্ষমতার উপর। সরকারি হিসাবে ভারতের কাছে সর্বোচ্চ ৪৫ কিলোটন ক্ষমতাসম্পন্ন পরমানু বোম্ব রয়েছে। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকা জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে যে পরমানু বোম্ব ফেলেছিল তার ক্ষমতা ছিল ১৫ ও ২০ কিলোটন। সুতরাং ভারতের কাছে এর আড়াইগুন ক্ষমতাসম্পন্ন পরমানু বোম্ব রয়েছে। কিন্তু পরমানু বোম্ব একটি ইনশিওরেন্সের মতোন, এটা কখনওই কোনও দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবেনা। পরমানু বোম্ব তৈরির অর্থ শত্রুদেশকে মনস্তাত্ত্বিক চাপে রাখা। বিশ্বের সমস্ত সুপার পাওয়ার দেশগুলো যেমন আমেরিকা, রাশিয়া ইউরেনিয়াম যুক্ত পরমানু বোম্ব বাদ দিয়ে অপরমানু এমন বোম্ব তৈরির চেষ্টা করছে যার ধ্বংস ক্ষমতা পরমানু বোম্বেরই সমতুল্য হবে। আমেরিকা ইতিমধ্যেই এরকমই একটি শক্তিশালী অপরমানু বোম্ব তৈরি করে ফেলেছে যার নাম দিয়েছে মোয়াব বা মাদার অফ অল বোম্বস। যুদ্ধক্ষেত্রে এই বোম্বের ব্যবহারও করেছে আমেরিকা। রাশিয়া এর জবাবে তৈরি করেছে ফোয়াব বোম্ব বা ফাদার অফ অল বোম্বস। রাশিয়ার দাবী তাদের এই বোম্ব আমেরিকার মোয়াবের তুলনায় চারগুন বেশী শক্তিশালী। 

ভারতের প্রতিরক্ষা বহিনীর কাছেও প্রচুর অপারমানবিক মিসাইল, আর্টিলারি ও বোম্ব রয়েছে। এসব অস্ত্রের একটাই কাজ শত্রুকে আঘাত করা, বিস্ফোরনের তীব্রতা যত বেশী হবে তত বেশী ক্ষতিসাধন হবে শত্রুর। ভারতের বেশীরভাগ অপরমানু বোম্ব তৈরি করা হয়েছে ডেন্টেক্স অথবা টোরপেক্স পদ্ধতিতে। এটা অনেক পুরোনো ফর্মুলা, বহু দেশই এই পদ্ধতিতে বোম্ব তৈরি করে। কোন অপারমানবিক বোম্ব কতটা শক্তিশালী তা নির্নয় করা হয় টিএনটির সাথে তুলনা করে। টিএনটি বা ট্রিনিট্রোটোলুইন মানব ইতিহাসে বহু পুরোনো একটি বিস্ফোরক। বিগত একশো বছরের বেশী সময় ধরে টিএনটি বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে সফল ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতদিন পর্যন্ত ভারতের কাছে যেসব অপারমানবিক বোম্ব ছিল সেগুলো টিএনটির তুলনায় ১.৩ গুন শক্তিশালী। কিন্তু ভারতের এর থেকেও শক্তিশালী বোম্বের প্রয়োজন ছিল যার মারনক্ষমতা আরও বেশী হবে। ভারতের দুই প্রতিবেশী দেশ চীন ও পাকিস্তান সর্বদা ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। অতীতে দেখা গেছে এই দুটি দেশ হঠাৎই ভারত আক্রমন করেছে। সুতরাং আমাদের প্রথম থেকেই প্রস্তত হওয়া প্রয়োজন। সম্প্রতি নাগপুরের সোলার ইন্ডাস্ট্রিস নামক একটি সংস্থা শক্তিশালী বিস্ফোরক ফর্মুলা তৈরি করেছে। একটি বিস্ফোরক ফর্মুলা তৈরি করতে রাসায়নিক ইঞ্জিনিয়ারদের বহু বছর সময় লাগে। সোলার ইন্ডাস্ট্রিস তিনটি বিস্ফোরক ফর্মুলা তৈরি করেছে যার মধ্যে একটি হচ্ছে সেবেক্স ২। এই ফর্মুলায় তৈরি বোম্ব টিএনটির থেকে দুইগুন শক্তিশালী হবে। ভবিষ্যতে ভারত এই ফর্মুলার উপরেই মিসাইল, আর্টিলারির ওয়ারহেড এবং বোম্ব তৈরি করবে। 

চীন ২০২১ সালেই জানিয়েছিল তারা সিএল ২০ নামে একটি বোম্ব তৈরি করেছে যা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অপারমানবিক বোম্ব। চীন এটাও জানিয়েছিল যে এই বোম্ব টিএনটির থেকে দশগুন অধিক শক্তিশালী কিন্তু চীনের অস্ত্রের সক্ষমতা নিয়ে সবসময় প্রশ্ন রয়েছে। কারন অতীতে বহুবার চীনা অস্ত্রের দুর্বলতা দেখা গিয়েছে। তবে চীনের এই সিএল ২০ বোম্ব বানানোর ক্ষমতা কম কারন এর উপাদান চীনের কাছে প্রচুর পরিমানে মজুত নেই। ভবিষ্যতে টিএনটির থেকে আড়াই, তিনগুন শক্তিশালী বিস্ফোরক তৈরির গবেষনা ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে ভারতীয় সংস্থাগুলি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *