২০ বছরের বেশী সময় ধরে চুরি হয়নি পৃথিবীর এই গ্রামটিতে
নিউজ ডেস্ক – টাকাপয়সা এমন একটা জিনিস যার পেছনে খুব কম মানুষের রয়েছে যে ছোটে না। অর্থাৎ প্রভাবশালী হওয়ার জন্য অর্থের প্রয়োজন অর্থ উপার্জনের জন্য নানা রকম কাজ কিংবা চুরি ডাকাতি সৃষ্টি হয়। কিন্তু এই সকল অর্থ প্রলোভন ব্যক্তিদের সাম্রাজ্যের বাইরে এমন একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে প্রকাশ্যে টাকা পড়ে থাকলেও কেউ চুরি করে না। সৎ ও নিষ্ঠাবান গ্রাম রয়েছে পশ্চিম রোমানিয়ার একটি শান্ত ও নিবিড় মনোরম পরিবেশের বানাটুলুই পার্বত্য অঞ্চলে। সবুজ পাহাড়ের কোল ঘেঁষে সরু রাস্তার দু’ধারে বসতি পূর্ণ এই গ্রামে রয়েছে প্রায় ৩০০ লোকের বাস।
জানা যায় গ্রামের জনসংখ্যা কম থাকার পেছনে রয়েছে এক বিশেষ কারণ। এই গ্রামের যে সকল ব্যক্তিরা একটু শিক্ষিত ও অর্থলোভী তারা অর্থ উপার্জনের করার জন্য শহরে চলে যায়। আর বাদবাকি গ্রাম প্রেমী ব্যক্তিরা গ্রামীণ রয়ে গিয়েছেন। গ্রামটি নির্মাণ হয়েছিল অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি যুদ্ধের সময়কালে। কার্যত এরপর থেকে গ্রামের মানুষদের কাছে কোন কাজ না থাকার কারণে তারা বনের কাঠ কাটাকে নিজেদের কর্ম হিসেবে বেছে নিয়েছেন। সেই কার্যক্ষেত্রে তাদের দিনের অর্ধেকটা সময় জঙ্গলে কাটে।
গ্রামবাসীদের মূলত পছন্দের খাদ্য পাউরুটি। যার কারণে সপ্তাহে দু’দিন পাউরুটির গাড়ি এসে গ্রামের প্রত্যেকটি ঘরে সেটি দিয়ে যায়। গ্রাম কি একটু ভেতরে হওয়ায় রোমানিয়া শহর থেকে অন্য একটি গ্রাম হয়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূর থেকে রুটির গাড়িটি আসে। যখন গাড়ি আসে তখন অধিকাংশ মানুষ বাড়িতে না থাকায় তারা নিজেদের বাড়ির দরজায় কিংবা গেটে ব্যাগ সহ তার মধ্যে টাকা ও কতসংখ্যক পাউরুটি লাগবে তা লিখে রেখে যায়। এরপরই পাউরুটির গাড়ি আসলে সেখানকার কর্মীরা চিরকুটে পাউরুটির সংখ্যা দেখে সেটি দিয়ে যায় আবার মূল্য অধিক থাকলে সেটিরও খুচরো রেখে যায়। পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে প্রায় ২০ বছরের বেশি সময় ধরে এই গ্রামে কোন চুরির ঘটনা ঘটেনি।
এই গ্রামে কোন ব্যক্তির কোন জিনিস প্রয়োজন হলে সেটি সে তার প্রতিবেশীর কাছ থেকে চেয়ে নেয়। যার কারণ এখানে চুরির ঘটনা প্রায় হয় না বললেই চলে। আর যেখানে চুরি হয় না সেখানে কোন পুলিশ স্টেশনও নেই। বিষয়টি সত্যি যে গ্রামে কোনো প্রশাসনিক আধিকারিকদের পা পড়েনি। বহু পর্যটক এই গ্রামে ঘুরতে আসলে গ্রামবাসীদের সরলতা দেখে মুগ্ধ হন। পাশাপাশি বিশ শতকে দাঁড়িয়েও এমন বিশ্বাসযোগ্যতা দেখে অবাক হয়ে যান বিদেশী পর্যটকরা।