অফবিট

নিশা থেকে বিজলি। ভারতের বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড়

প্রকৃতি রেগে গেলে তার ফল মারাত্মক হয়ে যায়। প্রকৃতিক তান্ডবকে থামানোর কোনো উপায় আজও জানা নেই । প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হল ঘূর্ণিঝড় । বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা আরও বেড়ে গেছে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের হানায় তটস্থ হয়ে থাকে ভারতের উপকূল। বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন ভারতের পূর্ব উপকূলই হোক বা আরব সাগর সংলগ্ন পশ্চিম উপকূল- সর্বত্রই ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ঙ্কর রূপ দেখা যায়। ভারতে এমন বেশকয়েকটি প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড়ের তালিকা দেওয়া হল যেগুলির  ফলে মারাত্মক ক্ষতি ঘটেছে। 

ঘূর্ণিঝড় নিশা – ২০০৮ 

 এই ভয়ানক ঘূর্ণিঝড়টির ল্যান্ডফল ছিল  ভারতের তামিলনাড়ুতে। ঝড়টিতে কমপক্ষে ২০৪ জন নিহত হয়েছিল এবং কমপক্ষে ৩৭৮৯ কোটি বা $৮০০ মিলিয়ন (২০০৪ USD)  অর্থের ক্ষতি হয়েছিল ।  ২০০৪  সালে ২৫ নভেম্বর  উত্তর শ্রীলঙ্কায় পনের জন  লোক ঝড়ের কবলে মারা গিয়েছিল এবং ভারী বৃষ্টিপাত এবং বন্যার কারণে ভান্নিতে ৬০,০০০ থেকে ৭০,০০০ জন  লোক এবং জাফনা জেলায় প্রায়  ২০,০০০  জন লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছিল বলে জানা যায় । ঝড়ের প্রভাবে তামিলনাড়ুতে ভারী বর্ষণ ও বন্যায় অন্তত ১৮৯ জন নিহত হয়েছিল।

 ঘূর্ণিঝড় বিজলী – ২০০৯ 

 বাংলাদেশের উপকূলের কাছাকাছি আসার সাথে সাথে বিলজি তার সর্বোচ্চ তীব্রতায় পৌঁছেছিল। ২০০৯ সালের ১৭ এপ্রিল, বিজলি চট্টগ্রামের ঠিক দক্ষিণে ল্যান্ডফল করার আগে ভূমি মিথস্ক্রিয়াজনিত কারণে গভীর নিম্নচাপে দুর্বল হয়ে পড়ে।  ঝড়টি ৫০০ টি খড়ের ঘর এবং ১৫০০ টি পানের বাগান ধ্বংস করেছিল এবং প্রায় ৭০,০০০ একর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছিল । সমগ্র বাংলাদেশে সাতজন নিহত এবং ৮৪ জন আহত হয়।  মোট ৭০২ টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছিল এবং ৩,৮২৫ টিরও বেশি বাড়ির ক্ষতি হয়েছিল এবং সেই সাথে ৩,৬৩৬ একর কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল কক্সবাজার জেলায়।  ঝড়ের সময় প্রায়  ৬০৭টি গবাদি পশু ডুবে গিয়েছিল  । বিজলি শব্দটির মানে হিন্দিতে বজ্রপাত৷ 

 ঘূর্ণিঝড় লায়লা – ২০১০ 

 লায়লা ২০১০ সালের  ১৭ মে বঙ্গোপসাগরের একটি অবিরাম পরিচলন এলাকা থেকে বিকশিত হয়েছিল।১৯ মে এটি একটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় এবং  পরের দিন, লায়লা অন্ধ্র প্রদেশের  স্থলভাগে আছড়ে পড়ে।  এটি তার পথ বরাবর বন্যা এবং ক্ষতির কারণ হয়েছিল।  ঘূর্ণিঝড়টি প্রকাশম, কৃষ্ণা এবং গুন্টুর জেলায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়েছিল এবং রাজ্য সরকারের তৈরি প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী  ৫০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছিল।  বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় লায়লা ১৪ বছরের মধ্যে অন্ধ্র প্রদেশে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়াবহ ঝড়। লায়লা একটি উর্দু/আরবি নাম, যার অর্থ রাত।

ঘূর্ণিঝড় নীলম – ২০১২ 

২০১২ সালের  ২৮ শে অক্টোবর, বঙ্গোপসাগরের উপর একটি নিম্নচাপের এলাকা থেকে নীলম ঝড়টি তৈরি হয় ।  প্রথমে এটি শ্রীলঙ্কার ত্রিনকোমালি থেকে ৫৫০  কিমি (৩৪০ মাইল) উত্তর-পূর্বে একটি দুর্বল নিম্নচাপ হিসাবে শুরু হয়েছিল।তারপর ৩১ অক্টোবর মহাবালিপুরমের কাছে ৮৫ কিমি/ঘন্টা (৫৫মাইল প্রতি ঘন্টা) বেগে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসাবে স্থলভাগে পতিত হয়েছিল।  মহাবালিপুরম বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্মুখীন হয় এবং ৯০টি গাছ উপড়ে পড়ে এবং দুটি ঝুপড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  অন্ধ্র প্রদেশ সরকার প্রকাশ করেছে যে রাজ্যটি ₹২০০ কোটি (US$২৬ মিলিয়ন) এর বিশাল একটি অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন ।  বেঙ্গালুরুতে, প্রবল বৃষ্টি ও প্রবল ঝড়ো বাতাসে ৮৬টি গাছ ভেঙে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে  ২৮৫টি ট্রাক ব্যবহার করে ৩,০০০  টনেরও বেশি ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে হয়েছিল । শহরে  ৮৭.৫ মিলিমিটার (৩.৪৪  ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়েছিল তার সঙ্গে  সর্বোচ্চ একটানা ঝড়ো হাওয়া ৪৭ কিমি/ঘন্টা (২৯ মাইল) গতিবেগে বয়েছিল ।

 ঘূর্ণিঝড় ভিয়ারু – ২০১৩ 

২০১৩ সালের  ১৬ মে, ঘূর্ণিঝড়টি ৮৫ কিমি/ঘন্টা (৫৫ মাইল) বেগে বাতাস এবং ৯৯০ এমবার (hPa; ২৯.২৩ inHg) এর ব্যারোমেট্রিক চাপ সহ তার সর্বোচ্চ তীব্রতা অর্জন করেছিল।  ভিয়ারু ঝড়টি  বাংলাদেশের চট্টগ্রামের কাছে ল্যান্ডফল করেছিল ।   ঝড়ের তান্ডবে অন্তত চারজন নিহত ও ছয়জন নিখোঁজ হয়েছিল বলে জানা গেছে।  উপকূলে, আরও ১১ জন নিখোঁজ হয়েছিল ।  মানুষ পালানোর জন্য নৌকায় ভিড় করে, এবং তার ফলে অতিরিক্ত ওজনে  এক বা একাধিক জাহাজ ডুবে যায়। যার ফল স্বরূপ কমপক্ষে ৩৯ জন মারা যায়। ৪২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছিল এবং প্রায় ১৯  জনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।  ভারত ও শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ ঝড়টির ফলে কমপক্ষে ১৬ জনের প্রাণহানি এবং উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। ঝড়ের প্রভাবে থাইল্যান্ডে একজনের মৃত্যু হয়েছিল।   বাংলাদেশে মোট ৯৫,০০৩টি খারাপভাবে নির্মিত কুঁড়েঘর ধ্বংস হয়েছিল ঝড়ের কারণে ।১৭  জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং সারা দেশ মিলিয়ে  প্রায় ১.৩  মিলিয়নেরও  ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ – ২০১৪ 

২০১৪ সালের ৬ অক্টোবর  আন্দামান সাগরে একটি উচ্চ-বায়ুর ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গঠিত হওয়া একটি নিম্নচাপ থেকে হুদহুদ সৃষ্টি হয়েছিল । হুদহুদ 8 অক্টোবর ঘূর্ণিঝড়ে এবং ৯  অক্টোবর একটি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়েছিল । ল্যান্ডফলের কিছুক্ষণ আগে  বিশাখাপত্তনম, অন্ধ্র প্রদেশের কাছে ১২ অক্টোবর, হুদহুদ তার সর্বোচ্চ শক্তিতে পৌঁছেছিল।  তিন মিনিটের বাতাসের গতিবেগ ছিল  ১৮৫  কিমি/ঘন্টা (১১৫মাইল) এবং ৯৬০ এমবার ছিল (২৮.৩৫  inHg) ন্যূনতম কেন্দ্রীয় চাপ।  তারপরে ঘূর্ণিঝড়টি উত্তরে উত্তর প্রদেশ এবং নেপালের দিকে প্রবাহিত হয়, যার ফলে উভয় এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত এবং পরবর্তীতে ভারী তুষারপাত হয়।  হুদহুদ বিশাখাপত্তনম  এবং অন্ধ্র প্রদেশের ভিজিয়ানগরাম ও শ্রীকাকুলামের পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে ব্যাপক ক্ষতি করেছিল।   অন্ধ্রপ্রদেশের  রাজ্য সরকারের অনুমান  প্রায়   ₹২১৯ বিলিয়ন (US$৩.৫৮ বিলিয়ন) অর্থের ক্ষয়ক্ষতি ঘটেছে ঝড়টির প্রভাবে  ।  কমপক্ষে ১২৪ জনের মৃত্যু ঘটেছিল , তাদের বেশিরভাগই অন্ধ্র প্রদেশ এবং নেপালের বাসিন্দা । পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তুষারপাতও হয়েছিল । 

 গুজরাট ঘূর্ণিঝড় – ২০১৫ 

গুজরাটের  আমরেলি জেলায় বন্যা ৯০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ বলে জানা গেছে। জেলার ৮৩৮ টি গ্রামের মধ্যে ৬০০ টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এই বন্যার প্রভাবে । যার মধ্যে ৪০০ টি গ্রামের ভূমি  দুর্গম হয়ে পড়েছে।  এই অঞ্চলে কমপক্ষে ৮০  জন মারা গিয়েছিল এবং সৌরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল।  গির জাতীয় উদ্যান এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার বন্যপ্রাণীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ।  দশটি এশিয়াটিক সিংহের মৃত্যু হয়েছিল । যারা একটি বিপন্ন প্রজাতি যার মাত্র ৫২৩ জন জীবিত (২০১৫  সালে  মে মাসে নথিভুক্ত করা হয়েছিল) ।  এবং এক ডজনেরও বেশি নিখোঁজ হয়েছিল ।  গুজরাট সরকারের অনুমান অনুযায়ী  ₹১৬.৫  বিলিয়ন  ক্ষতি হয়েছিল ।

 ঘূর্ণিঝড় ভারদাহ – ২০১৬ 

 ৩  ডিসেম্বর ২০১৬ সালে  মালয় উপদ্বীপের কাছে একটি নিম্নচাপ এলাকা থেকে  উদ্ভূত  ঝড়টিকে ৬  ডিসেম্বর একটি নিম্নচাপ হিসাবে মনোনীত করা হয়েছিল।  ভারদাহ ৯ ডিসেম্বর একটি গুরুতর ঘূর্ণিঝড়ের আকার নেয় । ঝড়টি ১৩০ কিমি/ঘন্টা বেগে ৩ মিনিট স্থায়ী বাতাস এবং ৯৭৫ hPa (২৮.৮ inHg) ন্যূনতম কেন্দ্রীয় চাপ নিয়ে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছিল। পাকিস্তানের প্রস্তাবিত নাম  ভারদাহ বলতে বোঝায় লাল গোলাপ। 

ঘূর্ণিঝড় ওখি – ২০১৭ 

২০১৭ সালের  ২৯ শে নভেম্বর শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে ঘূর্ণিঝড়টি একটি নিম্নচাপ থেকে সংগঠিত হয়েছিল, যা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শ্রীলঙ্কায় বিশাল ক্ষয়ক্ষতি করে। ৩০ শে নভেম্বর ওখি একটি ঘুর্ণিঝড়ে রূপ নেয় । এটি ২ শে ডিসেম্বর লাক্ষাদ্বীপে  ব্যাপক প্রভাব ফেলে, প্রচুর নারকেল গাছ উপরে পড়ে এবং দ্বীপগুলিতে বাড়ি , বিদ্যুৎ লাইন এবং অন্যান্য অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ওখি ভারতে ২১৮ এবং শ্রীলঙ্কায় ২৭ জন মিলিয়ে  কমপক্ষে ২৪৫ জনের  প্রাণহানির ঘটনা ঘটায় এবং ঝড়ের কারণে কমপক্ষে ৫৫০  জন নিখোঁজ হয় যাদের মধ্যে প্রধানত জেলে ছিল ।

 ঘূর্ণিঝড় তিতলি – 

 ২০১৮  

২০১৮ সালের  ৭ অক্টোবর আন্দামান সাগরে একটি নিম্নচাপ এলাকা থেকে তিতলি উৎপন্ন হয়েছিল। ১০ অক্টোবর তিতলি অন্ধ্র প্রদেশে ল্যান্ডফল করেছিল। ১২ অক্টোবর অবশেষ ঝড়টি  নিম্ন স্তরে পরিণত হয়। তিতলি সাইক্লোনের প্রভাবে  ৮৯  জন মারা যায়, যার মধ্যে ভারতেরই ৮৫ জন ছিল।  ঘূর্ণিঝড়টি ১২৬  কিমি/ঘন্টা বেগে প্রবাহিত হয়েছিল ।  এবং  উপকূলীয় অঞ্চল প্লাবিত করেছিল ।  ওড়িশার মোহনায় ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ৪৬০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছিল ।  বন্যা এবং ভূমিধসের ফলে   প্রচুর ফসলের ক্ষতি ঘটেছিল , গাছ পড়ে  এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে কমপক্ষে ৪০০,০০০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ।    ভারত জুড়ে, তিতলি ১২৭, ০৮১টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, এবং  ৬৩,৫৬২ জন মানুষকে ত্রাণ শিবিরে থাকতে বাধ্য করেছে।  দেশে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল প্রায়  ₹৬,৬৭৩.১ কোটি।    বাংলাদেশে তিতলির প্রভাবে ভূমিধসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

 ঘূর্ণিঝড় ফণী – ২০১৯ 

 ফনী ঘূর্ণিঝড়টি একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় নিম্নচাপ থেকে উদ্ভূত হয়েছিল যা ২৬  এপ্রিল ভারত মহাসাগরে সুমাত্রার পশ্চিমে তৈরি হয়েছিল।ফনী  দ্রুত একটি অত্যন্ত প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় এবং ২  মে তার সর্বোচ্চ তীব্রতায় পৌঁছে যায়, যার ১ মিনিটের স্থায়িত্বশীল বাতাস একটি ক্যাটাগরি ৫ প্রধান হারিকেনের সমতুল্য। ফনী তার ল্যান্ডফলের আগে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং এর সংবহনমূলক গঠন দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।  ফণী পূর্ব ভারত এবং বাংলাদেশে কমপক্ষে ৮৯ জনকে হত্যা করেছে এবং ভারত ও বাংলাদেশ উভয় ক্ষেত্রেই প্রায়  ৮.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি করেছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই ভারতের ওড়িশায়। 

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান – ২০২০ 

আম্ফান উত্তর ভারত মহাসাগরে এখনও অবধি  রেকর্ড করা সবচেয়ে ব্যয়বহুল ঘূর্ণিঝড় ।  ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ক্ষতি ঘটেছে এই ঝড়টির ফলে ।  আম্ফান ১৩ মে ২০২০ সালে  শ্রীলঙ্কার কলম্বো থেকে ৩০০ কিমি  পূর্বে অবস্থিত একটি নিম্নচাপ এলাকা থেকে উদ্ভূত হয়েছিল।১৭  মে, আম্ফান দ্রুত তীব্রতার মধ্য দিয়ে যায় এবং ১২ ঘন্টার মধ্যে অত্যন্ত মারাত্মক একটি  ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেই । ১৮ মে, আনুমানিক ১২:০০ ইউটিসি-তে, আম্ফানের ৩-মিনিট স্থায়ী বাতাসের গতিবেগ ছিল ২৪০ কিমি/ঘন্টা এবং , ১ মিনিট স্থায়ী বাতাসের গতি ২৭০:কিমি/ঘন্টা নিয়ে সর্বোচ্চ তীব্রতায় পৌঁছেছিল এবং  ন্যূনতম কেন্দ্রীয় ব্যারোমেট্রিক চাপ ছিল  ৯২০ mbar (২৭.১৭  inHg)। ২০ মে, ১২:০০ UTC-এ, ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গে ল্যান্ডফল করেছিল।  সেই সময়ে, আম্ফানের ১ মিনিট স্থায়ী বাতাসের গতিবেগ  ছিল ১৭৫ কিমি/ঘন্টা । 

 ঘূর্ণিঝড় টাউকটে  – ২০২১

১৪ মে ২০২১ এ  শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় টাউকটের   নামকরণ করা হয় । ১৭ মে, ঝড়টি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। ঘূর্ণিঝড়টি গুজরাটে আছড়ে পড়ে।  টাউকটের প্রভাবে কেরালার উপকূল এবং লাক্ষাদ্বীপে প্রবল বৃষ্টিপাত এবং আকস্মিক বন্যা হয়েছিল।  ঝড়টি ধ্বংসলীলা চালিয়েছিল গোয়া, কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্র রাজ্যেও ।  টাউকটের ফলে ভারতে কমপক্ষে  ১৬৯  জনের মৃত্যু ঘটেছিল  এবং প্রায় ৮১  জন নিখোঁজ হয়েছিল ।  এছাড়া পাকিস্তানে ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় ।  গুজরাটের  ২০০,০০০ জনেরও বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে টাউকটে।   ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের পশ্চিম উপকূলে কৃষির ব্যাপক ক্ষতি করেছিল।  ঘূর্ণিঝড়টির কবলে পড়ে ৪০ জনের বেশি জেলে সমুদ্রে হারিয়ে গিয়েছিল ।  ঝড়ে কমপক্ষে ১৭৪ জন নিহত হয়েছিল। ঝরটির  প্রায় ₹১৫,০০০ কোটি বা US$২.১ বিলিয়নের ক্ষতি হয়েছিল । 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *