অফবিট

কোনরকম মতপার্থক্য ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে কোন সমস্যা সমাধান করতে হবে। চীনের পঞ্চশীল নীতি সম্পর্কে জানেন?

প্রত্যেকটি দেশেরই নিজস্ব কিছু চুক্তি ও নীতি থাকে। সেই নীতির ভিত্তিতেই ওই দেশটি পররাজ্য কিংবা অন্য কোন দেশের কাছে পরিচয় পায়। সেরকমই একটি নীতি হলো চীনের পঞ্চশীল নীতি। বহু বছর আগে আনুমানিক ১৯৫৪ সালে জহরলাল নেহেরু এবং চীনা সরকার এই নীতির প্রবক্তা বা সৃষ্টিকর ছিলেন। কি আছে চীনের পঞ্চশীল নীতিতে! 

১৯৫৪ সালের ২৮ শে এপ্রিল চীন ও ভারতের চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। মূলত তিব্বত অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পরিবহন করার ক্ষেত্রে যাতে ভারত এবং চীনের মধ্যে কোন সংঘাত তৈরি না হয় সেই জন্য ভারতের পক্ষ থেকে জহরলাল নেহেরু ও চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইন দুজনে একটি চুক্তির মাধ্যমে আবদ্ধ হয়েছিলেন। সেই চুক্তির দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে পঞ্চশীল নীতি উত্থাপিত করেছিলেন দুই দেশের সরকার।

পরবর্তী সময় থেকে চীনের এই পঞ্চশীল নীতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এমনকি ১৯৫৫ সালে বেশ কয়েকটি দেশ যেমন 

লাওস, নেপাল, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার, যুগোস্লাভিয়া ও কম্বোডিয়া এই নীতি গ্রহণ করেছিল। এক কথায় বলতে গেলে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক স্তরে এই পঞ্চশীল নীতির মাধ্যমেই নিজেদের ব্যাখ্যা করে থাকে চীন। এই পঞ্চশীল নীতিকে চীনের সংবিধানে মৌলিক নীতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এবার বলা যাক কি লেখা রয়েছে এই পঞ্চশীল নীতিতে! 

চীনের পঞ্চশীল নীতিতে যে বিষয়গুলি উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো হল – 

I)  প্রত্যেকটি স্বাধীন দেশের ভৌগলিক অখন্ডতা এবং সর্বভৌমত্বের প্রতি পরস্পরের শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।

II) শান্তি বজায় রাখার জন্য দ্বন্দ্ব, সংঘাত কিংবা অনাক্রম নীতি মেনে চলতে হবে।

III) বিনা আমন্ত্রণে স্বেচ্ছায় অন্য কোন রাষ্ট্রের প্রতি হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে।

IV) পরস্পরের প্রতি পরস্পরের সহযোগিতা এবং সাম্য বৃদ্ধি করতে হবে।

V) কোনরকম মতপার্থক্য ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে কোন সমস্যা সমাধান করতে হবে।

উল্লেখ্য, চীনের পঞ্চশীল নীতি যে শুধুমাত্র শিলালিপির মধ্যে আবদ্ধ রয়েছে তাই নয়, চীনা সরকার রীতিমতো এই নীতিকে মেনে দেশ চালাচ্ছেন। যেমন চীনের নৌ, স্থল শক্তি বহাল থাকলেও চীল কখনো কোন দেশের উপনিবেশ স্থাপন করেনি। এছাড়াও চিন্তার অত্যাধিক অর্থ দাঁড়াও অন্য দেশের নিজের অস্তিত্ব বুঝিয়ে দিলেও কখনো কোন ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করেননি। যদিও পরাশক্তি হিসেবে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চীনের পরোক্ষ প্রভাব কমন ব্যাপার ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *