জলের ১০০ ফুট গভীর পর্যন্ত যেতে পারে একমাত্র কোন দেশের শিশুরা?
নিউজ ডেস্ক –খাদ্য না খেয়ে থাকলেও জল ছাড়া জীবন কল্পনা করা প্রায় দুঃসাধ্যকর ব্যাপার। কিন্তু এমন এক গোষ্ঠীর বাসিন্দারা রয়েছে যাদের জলে জন্ম আবার জলেই জীবন। কথাটি অবিশ্বাস্যকর হলেও বর্তমানে বাস্তব। এমন একটি জগত দেখা যায় বাজাউ উপজাতিদের মধ্যে। এদের নিবাস ফিলিপাইন, সুলাওয়েসি ও বোর্নিওর মধ্যবর্তী প্রবাল সাগরে।
এই জনগোষ্ঠীর মানুষদের সমুদ্রের জলের মধ্যে বসবাসকে কেন্দ্র করে বিজ্ঞানীরা তাদের পরীক্ষা করে জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই জলের রাজ্যে বসবাস করতে করতে সুনিপুণভাবে জলের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন তারা। যার কারণে এরা ভূমি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে সমুদ্রের মধ্যে নিজের ঘর নির্মাণ করে থাকেন। তারা মূলত সমুদ্রের জলের নীচে প্রায় ১৫ ফুট গভীর পর্যন্ত বাঁশ দিয়ে জলের উপরে ঘর তৈরি করে।
অন্যদিকে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া আর কিছু ইনভেস্টিগেশন ঢোল বাজাউ উপজাতি গোষ্ঠীদের শারীরিক পরীক্ষা করে জানতে পেরেছেন, এই গোষ্ঠীর শিশুরা জন্ম থেকে জলে মানুষ হওয়ায় এদের ভূমির থেকে তুলনামূলক বেশি নজর থাকে জলজ পরিবেশের। এমনকি তাদের জলে সাঁতার কাটার দক্ষতা এতটাই তীব্র যে একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে এটা সম্ভব নয়। কারণ দেখা গিয়েছে জলের নীচে প্রায় ১০০ ফুট গভীর পর্যন্ত যেতে পারে এরা। এই সময় জলের গভীরতার চাপে এদের ফুসফুসের আয়তন এক-তৃতীয়াংশ নেমে আসে। মাঝে মাঝে অক্সিজেনের অভাবে হৃদপিণ্ডের স্পন্দন প্রতি মিনিটে ৩০ এর কাছাকাছি চলে আসে। যার কারণে পুরো শরীরটাই সংকুচিত হয়ে এমন একটি জায়গায় পৌঁছায় যে কোন প্রকার ভার ছায়া সমুদ্রের তলদেশে হাঁটার জন্য উপকূলীয় পরিবেশ পায়। যার কারণে এরা জলের মধ্যে প্রায় ১০ মিনিট পর্যন্ত শ্বাসরোধ করে থাকতে পারে। এদের মূলত জীবিকা হচ্ছে মাছ শিকার করা। মাছ শিকার করে এমনকি মাছকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করেই নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে বাজাউ গোষ্ঠীর মানুষেরা।