পৃথিবীর কোন দেশে ভূতের মেলা হয় জানেন?
নিউজ ডেস্ক: ভূতের মেলার নাম শুনেছেন কখন?এই কথাটি শুনে হেসে উড়িয়ে দেবে প্রায় সব মানুষই। কারন বাস্তবে এই রকম আবার হয় নাকি? কিন্তু যদি বলি বাস্তবে হয় আর এটা যদি দেখতে চান তাহলে আপনাদের যেতে হবে দেবজি মহারাজ মন্দিরে।যেখানে শুধুমাত্র ভগবানের বাস নেই, ঘটে চলেছে নানান অদ্ভুত ঘটনা বলি। নানান রহস্যে মোড়া রয়েছে এই মন্দির। কোথায় এই মন্দির যেখানে অনুষ্ঠিত হয় ভূতের মেলা ? কি বা ঘটে এই মন্দিরে ?
দেবজি মহারাজ মন্দির ভোপাল থেকে প্রায় তিনশো কিলোমিটার দূরে মালাজপুরের একটি ছোট্ট গ্রাম বেতুলে অবস্থিত ।এখানে চারশো বছরের পুরোনো এক অদ্ভুত মেলা অনুষ্ঠিত হয়। যেটি দেখার জন্য সারা ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ভিড় করে এই মন্দিরে।
দেবজি মহারাজ মন্দিরের প্রতিবছর পৌষ পূর্ণিমা থেকে বসন্ত পঞ্চমী পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় এই ভূতের মেলা। এই মন্দিরে বহুপ্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে ঝাড়ফুঁক। এখানেপ্রতিদিন বিকেল বেলা আরতির পর গুরু দেওজি সন্ত মহারাজের সমাধির সামনে অশুভ আত্মাকে তাড়িয়ে মানুষদের সুস্থ করা হয়। বলা হয় যে, গুরু দেওজি সন্ত ছিলেন। একজন অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন রাজপুরোহিত। শোনা যায় যে তিনি নাকি পাথরকে নারকেলে, বালিকে চিনিতে, এবং কাদাকে ফসলে পরিণত করতে পারতেন।এছাড়াও তার মধ্যে ছিল অশুভ শক্তি কে বিতাড়িত করারএক অদ্ভুত ক্ষমতাও। তিনি মারা যাওয়ার পর তাঁর স্মৃতিতে গ্রামবাসীরা একটি সমাধি মন্দির তৈরি করে এবং সেখানেই প্রায় দুই দশক ধরে ঝাড়ফুঁকের সাহায্যে ভূত তাড়িয়ে চলছে। এই মন্দিরে আরতির পর সাধারণ দর্শনার্থীরা ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে দিকে মন্দিরটি পরিক্রমা শুরু করে আর ভূতে ধরা মানুষেরা ঘড়ির কাঁটার দিকে মন্দিরটি পরিক্রমা শুরু করেন। এই পরিক্রমার সময় গুরু মহারাজের নামে মন্ত্রঃপুত জল ওই ভূতে ধরা মানুষদের উপর ছিটানো পরই তারা পাগলের মতো আচরণ করতে করতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন।সাধারনত ভূতে ধরা মহিলারাই এই মন্দিরে আসেন।
তবে বিভিন্ন বিজ্ঞানমনস্ক এবং প্রগতিশীল মানুষ বারবার এই প্রথা বন্ধের দাবি করছেন । মনোবিদদের মতে, এই ভূতে ধরা মানুষগুলি মানসিক ভাবে অসুস্থ আর এইভাবে রীতি চলতে থাকলে তারা আরও অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন।তবে শত সচেতনতামূলক বার্তা প্রচারের পরও বিলোপ করা সম্ভব হয়নি এই প্রথাকে। এখনও পর্যন্ত ঘটে চলেছে এই ধরনের অদ্ভুত ঘটনা যা সত্যিই অবিশ্বাস্য। তবে যাইহোক এই ভূতের মেলা প্রত্যক্ষভাবে যদি দেখতে চান তাহলে ঘুরে আসুন বেতুল গ্রামে।