প্রতিদিন সঠিক নিয়মে সকালে ঘুম থেকে জেগে ও রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। মাড়ি থেকে রক্তপাত ঘটলে কি কি করণীয়?
দাঁত মাজার পরে আপনি যদি ব্রাশ বা বেসিনে মাজনের সঙ্গে গোলাপি রঙের আভা দেখতে পান তবে বুঝতে হবে আপনার মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এটি মাড়ির প্রদাহের লক্ষণ হতে পারে।
কিন্তু জানেন কি মাড়ি থেকে রক্ত কেন পরে? চলুন জেনে নেওয়া যাক-
মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ার প্রধান কারণই হচ্ছে নিয়মিত দাঁত ব্রাশ না করা। দাঁতে লেগে থাকা খাদ্যকণা গুলোর সাদা প্রলেপ পড়ে, যাকে আমরা ডেন্টাল প্লাক বলি। ২৪ ঘণ্টা পর এ ডেন্টাল প্লাক শক্ত হয়ে তৈরি হয় ক্যালকুলাস। এই ক্যালকুলাসই মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ার অন্যতম কারণ।
ক্যালকুলাস দাঁত ও মাড়ির মাঝখানে অবস্থান করে এবং প্রতিনিয়ত নরম মাড়ির সঙ্গে ক্যালকুলাসের ঘর্ষণের কারণে খুব সহজেই মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে।
মাড়ির ফোলা এবং প্রদাহের কারণও এই ক্যালকুলাস। এটিকে বলা হয় জিনজিভাইটিস।
জিনজিভাইটিস বেড়ে গিয়ে যখন বড়ো আকার ধারণ করে, তখন একে বলা হয় পেরিওডন্টাইটিস। তখন দাঁতটা ধীরে ধীরে মাড়ি থেকে সরে যায় এবং নড়তে থাকে।
তবে আরও অন্য কয়েকটি কারণ থাকতে পারে মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার-
- খুব জোরে জোরে দাঁত ব্রাশ করা
- ঠিকমতো ফ্লসিং না করা
- লিউকোমিয়া (এক ধরনের রক্তের ক্যান্সার)
- রক্ত পাতলাকারী ওষুধ
- গর্ভাবস্থায় হরমোনের প্রভাব
- ভিটামিন সি-এর ঘাটতি, ভিটামিন কে-এর ঘাটতি
মাড়ি থেকে রক্তপাত ঘটলে কি কি করণীয়-
- প্রতিদিন সঠিক নিয়মে সকালে ঘুম থেকে জেগে ও রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে দাঁত ব্রাশ করতে হবে।
- ভালো মানের পেস্ট ও ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। দীর্ঘদিন একই টুথপেস্ট ব্যবহার করবেন না।
- ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহারের মাধ্যমে দুই দাঁতের মাঝখানে লেগে থাকা খাদ্যকণা দূর করতে হবে। নিয়মিত ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেমন- আমলকী, কমলালেবু, বাতাবিলেবু, আমড়া ইত্যাদি।
- উষ্ণ গরম জলে লবণ দিয়ে কুলকুচি করতে হবে।
এই সমস্ত সাধারণ পদ্ধতি অবলম্বন করার পরেও যদি মাড়ি থেকে রক্তপাত পড়া বন্ধ না হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।