অফবিট

জাপান মুদ্রা উন্নত হলেও মূল্য কম হওয়ার পেছনে কি কারন রয়েছে জানেন?

নিউজ ডেস্ক –  বিশ্বের মধ্যে অন্যতম উন্নতশীল দেশের তালিকায় নাম রয়েছে জাপানের। প্রযুক্তির দিক থেকে ভারত ও বাংলাদেশের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে জাপান। কিন্তু এই দুটি দেশের থেকে উন্নতির দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও জাপানের মুদ্রার মূল্য অত্যন্ত নগণ্য। অনেকেরই অনুমান জাপানের অর্থনৈতিক অবস্থার ঘাটতির কারণেই মুদ্রার মূল্য নগণ্য। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন অন্য কথা।

বিশ্লেষকদের তথ্য অনুযায়ী, ভারত এবং বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের মুদ্রার তুলনা করে দেখা গিয়েছে – 

ভারতীয় রুপী (১ মার্কিন ডলার = ৭৩ রুপী)

বাংলাদেশ টাকা (১ মার্কিন ডলার = ৮৪ টাকা)

অন্যদিকে,  ১ জাপানি ইয়েন = ৬৮ ভারতীয় পয়সা

১ জাপানি ইয়েন = ৭৮ বাংলাদেশ পয়সা। অর্থাৎ জাপানের ইয়েন ভারত ও বাংলাদেশের অর্থে অনেক কম দাম। 

তবে যেটি না বললেই নয় সেটি হলো জাপানে কোনরকম টাকার অস্তিত্ব নেই। জাপানি ভাষায় ইয়নের অর্থ হলো পয়সা। বাংলাদেশে টাকা ও পয়সা দুটোই আছে। ভারতে রুপী ও পয়সা দুটোই আছে। আমেরিকাতে ডলার ও সেন্ট এবং  ইংল্যান্ডে পাউন্ড ও পেনি দুটাই আছে । কিন্তু জাপানে  অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে কোন টাকার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না । ওই দেশের  সবচেয়ে ছোট নোট হল ১০০০ ইয়েন। সুতরাং পয়সার দিক থেকে হিসাব করলে দেখা যায়  জাপানের এক ইয়েন অর্থাৎ পয়সার বিনিময়ে ভারত বা বাংলাদেশে ৭০-৮০ পয়সা পাওয়া যায়। জাপানের মুদ্রার মান প্রায় মার্কিন ডলারে সমান। সেক্ষেত্রে জাপানের মুদ্রা মোটেই কম মানের নয়।

অন্যদিকে আরেক পক্ষ বিশ্লেষকদের মতে জাপানি মুদ্রার মান কম হয়েছে একমাত্র জাপানে সুদের হার কম বলে। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্রেটন-উডস পদ্ধতি অনুসারে জাপানের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার জন্য ইয়েনের মূল্য ডলারের বিপরীতে নির্দিষ্ট করে দেয়। আর তারপরই ১৯৭১ সালে ইয়েনের মূল্য বাজার কর্তৃক নির্ধারিত হওয়ার নীতি গ্রহণ করা হলে এর মূল্য বেড়ে যায় । কিন্তু জাপানের রপ্তানি তাদের আমদানির চাইতে অনেক বেশি। মুদ্রার নিম্ন বিনিময় হার তাদের জন্য সুবিধাজনক।

জাপান তাই সবসময় চেষ্টা করে বাজারে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মুদ্রার বিনিময় হার কম রেখে রপ্তানি বাড়াতে। এই কারণে জাপানের মুদ্রার মূল্য কম। আর এই মুহূর্তে জাপানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর। খুব বেশি দেশী বা বিদেশী বিনিয়োগ সেখানে হচ্ছে না। জাপানের সুদের হারও একেবারে শূন্যের কাছাকাছি। ইয়েনের দাম না বাড়ার এটাও একটা কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সেখানকার বিশেষজ্ঞরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *