অফবিট

রাশিয়ার সর্বাধুনিক পঞ্চম প্রজন্মের SU-57 যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে ইউক্রেন!

ন্যাটোর অস্ত্র সহযোগীতায় ইউক্রেন রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে আক্রমন শুরু করেছে। একের পর এক রাশিয়ান বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে মিসাইল হমলা করছে ইউক্রেন। সম্প্রতি ইউক্রেন দক্ষিন রাশিয়ার একটি বেসে থাকা রাশিয়ার পঞ্চম প্রজন্মের এসইউ-৫৭ যুদ্ধবিমানকে এবং অন্য আরেকটি বিমান ঘাঁটিতে থাকা টিইউ ২২এমথ্রি বোম্বার বিমানের উপর আঘাত করেছে বলে দাবি করেছে। অত্যাধুনিক এসইউ-৫৭ স্টিলথ বিমানের উপর এটাই প্রথম কোনও বিদেশি আক্রমন। ইউক্রেনের জিইউআর ইনটেলিজেন্স জানিয়েছে গত ৮ জুন রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধস্থল থেকে ৫৮৯ কিলোমিটার দূরে রাশিয়ার আস্ট্রাখান অঞ্চলের আখতুবিনস্ক এয়ারফিল্ডে থাকা একটি এসইউ-৫৭ যুদ্ধবিমানে আঘাত করে ইউক্রেনের মিসাইল। 

স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে এসইউ ৫৭ যুদ্ধবিমানটির পাশে আগুন লেগে গেছে এবং কিছু ধ্বংসস্তূপ রয়েছে। ইউক্রেনের ইনটেলিজেন্স সংস্থা জানিয়েছে জিইউআরের সামরিক ড্রেন থেকে এই আক্রমন করা হয়েছে। রাশিয়ার জন্য নিঃসন্দেহে এটা একটি বড় ধাক্কা। সংবেদনশীল প্রযুক্তি ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে রাশিয়া এখনও পর্যন্ত এসইউ-৫৭ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেনি। ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক আগেই জানিয়েছিল রাশিয়া সম্ভবত তাদের সুনাম নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে এবং ভবিষ্যতে এসইউ-৫৭ অন্যদেশকে বিক্রি করতে সমস্যা হয়ে যাওয়ার ভয়ে এই যুদ্ধবিমান ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারই করেনি। আমেরিকার পঞ্চম প্রজন্মের এফ ৩৫ যুদ্ধবিমানকে টেক্কা দিতে রাশিয়া এসইউ ৫৭ তৈরি করেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিশ্বের বহুদেশ এফ ৩৫ কিনেছে, আমেরিকার নিজেও ব্যাপক আকারে এফ ৩৫ ব্যবহার করে। এরকম পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার এসইউ-৫৭ ব্যবহার না করায় স্বাভাবিকভাবেই বিমানটির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সামরিক বিশেষজ্ঞগন ইতিমধ্যেই বলেছে এসইউ-৫৭ এখনও সম্পূর্ন রূপে তৈরি হয়নি, এতে প্রযুক্তিগত বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। 

আখতুবিনস্ক এয়ারফিল্ডের পাশাপাশি রাশিয়ার মসডোক বিমানঘাঁটিতেও আক্রমন করেছে ইউক্রেনের ড্রোন। মসডোক বিমানঘাঁটিতে রাশিয়ার বেশকয়েকটি টিইউ-২২এমথ্রি স্ট্রাটেজিক বোম্বার বিমান ও মিগ-৩১ যুদ্ধবিমান থাকে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত  একটি ভিডিও থেকে দেখা যাচ্ছে একটি ইউক্রেনীয় ড্রোন রাশিয়ার উত্তর ওসেটিয়ার উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে বিমান ঘাঁটিতে আক্রমন করার লক্ষ্যে। তবে ইউক্রেনের তরফে আক্রমন সফল বলা হলেও, এই দাবী উড়িয়ে দিয়ে রাশিয়ার উত্তর ওসেটিয়ার সেনাপ্রধান জানিয়েছে তিনটি ইউক্রেনীয় ড্রোনকে রাশিয়ার এয়ারডিফেন্স ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। সামান্য কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তবে কেউ আহত হয়নি। ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার মসডোক বিমানঘাঁটির দূরত্ব ১,০০০ কিলোমিটার, এতটা দূরত্ব কোনও ড্রোন এসে আক্রমনের ঘটনা গুজব বলেই উড়িয়ে দিয়েছে সামরিক বিশেষজ্ঞগনরা। রাশিয়ার উত্তর ককেশাস অঞ্চলে অবস্থিত মসডোক বিমানঘাঁটি থেকে টিইউ-২২ এবং মিগ-৩১ যুদ্ধবিমান কিনঝল হাইপারসনিক মিসাইল নিয়ে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে এয়ারস্ট্রাইক করে। রাশিয়ার এতটা গুরুত্বপূর্ন, স্ট্রাটেজিক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় ড্রোন ঢুকে আক্রমন করার ঘটনা বিশ্বাস করতে নারাজ ভূরাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। 

ইউক্রেনে বিগত রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে আক্রমন করেই চলেছে। গতমাসে ক্রিমিয়ার বেলবেক বিমানবন্দরে রাশিয়ান যুদ্ধবিমানের উপর আমেরিকার দেওয়া মিসাইল দিয়ে হামলা চালায় ইউক্রেন। এই ঘটনায় রাশিয়ান বায়ুসেনার দুটি মিগ-৩১, একটি এসইউ-২৭ বিমান ধ্বংস হয়ে যায় এবং একটি মিগ-২৯ বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন জানিয়েছে রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ এই মূহুর্তে থামাবেনা, যুদ্ধ আরও দীর্ঘ হবে। জো বাইডেন ইউক্রেনের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো ইতিমধ্যেই ইউক্রেনকে তাদের অস্ত্র নিয়ে সীমিত আকারে রাশিয়ার অভ্যন্তরে আক্রমনের অনুমোদন দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *