পশ্চিমবঙ্গের কোন স্টেশানে অতৃপ্ত আত্মাদের বাস?
পশ্চিমবঙ্গের আনাচে-কানাচে বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে নানা ভৌতিক স্থান। আর এই ভৌতিক জায়গার কথা উঠলেই রাজধানী কলকাতার একাধিক স্থানের কথা আমাদের সকলেরই মনে পড়ে। কিন্তু কলকাতার বাইরেও রয়েছে অনেক ভয়ঙ্কর জায়গা যার মধ্যে প্রথমেই নাম উঠে আসে পুরুলিয়ার বেগুনকোদর স্টেশনের। নাম বেগুনকদর হলেও স্থানীয়দের কাছে তা পরিচিত ভুত স্টেশন নামেই।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের রাঁচি ডিভিশনের পুরুলিয়ার ঝালদা থানা এলাকায় অবস্থিত এই স্টেশন। সেই 1967 সাল থেকে দীর্ঘ চার দশক এই স্টেশন ছিল পরিত্যক্ত অবস্থায়।শুনশান এই স্টেশনে রাত বাড়লেই বাতাসে মেশে এক অদ্ভুত গন্ধ। মনে হয় কেউ যেন ফিস ফিস করে কথা বলছে।প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে দিনের বেলা তো মেলে না স্বস্তি। প্রায়ই শোনা যায় তার পায়ের আওয়াজ কখনো মনে হয় গা ঘেঁষে কেউ বুঝে বেরিয়ে গেল। স্টেশনে অশরীরী আত্মার উপস্থিতির গল্প স্থানীয় লোকেদের মুখে মুখে ঘোরে। তবে জানলে অবাক হবেন বর্তমানের এই শুনশান স্টেশন ই আগে ছিল এক জমজমাট বড় স্টেশন। অফিস, কোয়ার্টার ,জমজমাট বাজার কিনা ছিল এখানে। রাতারাতি কি করে পাল্টে গেল এরকম একটি স্টেশনের চেহারা? তার মেয়ের যেমন আছে বিভিন্ন প্রশ্ন তেমনি আছে বিভিন্ন গল্প কথাও।
শোনা যায় বহুকাল আগে মধ্যরাতে এই স্টেশনের স্টেশন মাস্টার ও তার স্ত্রী খুন হন অততায়ীর হাতে,পরে স্টেশনেরি কাছে রেখো থেকে উদ্ধার হয় তাদের মৃতদেহ। আর সেই থেকেই নাকি এখানে অশরীরী আত্মার কার্যকলাপ শুরু হয়েছে। শোনা যায় ঘটনার পরই নাকি রাতারাতি পালিয়ে যেতে শুরু করেন স্টেশনের বিভিন্ন রেলকর্মীরা। ক্রমে ট্রেনের যাতায়াত ও কমতে থাকে এই স্টেশনে।
পরবর্তীকালে সরকারের নির্দেশে এখানে নতুন করে আবার স্টেশন তৈরি করা হলেও পুরাতন চিত্রটা সেরকম পাল্টায়নি। বিকেল 5টা 5০ নাগাদ বোকারো শাখার রাঁচি–চন্দ্রপুরা–ধানবাদ প্যাসেঞ্জার থামে তারপর আর কোন ট্রেনে দাড়ায় না এই স্টেশনে। নতুন স্টেশন তৈরি হলেও ভুতুড়ে বদনামটা ঘোচেনি এই স্টেশনের। এখনো বিকেলের পর থেকে স্টেশনে আসার সাহস দেখায় না কোন মানুষ।
গল্প তো শুনলেন, এবার তাহলে কি ভাবছেন?পুরুলিয়া ঘুরতে গেলে আপনিও কি একবার ঘুরে আসবেন নাকি বেগুনকোদর স্টেশন থেকে?