অফবিট

পৃথিবীর কোথায় ভূতুড়ে পুতুলের দ্বীপ আছে?

প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে গোটা পৃথিবীটা যেন আমাদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। তবে, পৃথিবীর সমস্ত জায়গার রহস্য কিন্তু এখনো উন্মোচিত হয়নি আমাদের কাছে ।ধরুন,একটি দ্বীপে পৌঁছে দেখলেন যে গোটা দ্বীপের সমস্ত গাছে অসংখ্য বীভৎস গলাকাটা হাত পা ছাড়া পুতুল ঝুলছে ?ভয়ঙ্কর একটা আতঙ্ক নিশ্চয়ই গ্রাস করবে আপনাকে!মেক্সিকোর পুতুল দ্বীপ হল সেরকমই একটি জায়গা। পৃথিবীর সবচেয়ে অদ্ভুতুড়ে জায়গা গুলোর মধ্যে অন্যতম এটি।

মেক্সিকো সিটি থেকে কিছুটা দক্ষিনে  জোকিমিলকো জেলায় অবস্থিত এই পুতুলের-দ্বীপ ।এই গোটা দ্বীপে থাকেনা একজন মানুষও।সমস্ত দ্বীপজুড়ে শুধু রয়েছে পুতুল তাও আবার সাধারণ কোনো বাচ্চাদের খেলার পুতুল নয় ,বরং হাত-পা ছেঁড়া মাথা ছেঁড়া ভয়ঙ্কর কিছু পুতুল ।তবে ,এই দ্বীপ কিন্তু প্রথম থেকেই এরকম পুতুল দিয়ে ঘেরা ছিল না ।শোনা যায় বহুকাল পূর্বে এক সন্ধ্যেবেলায় তিনজন শিশু খেলার ছলে তাদের পুতুলের বিয়ে দিচ্ছিল আর সেই সময় হঠাৎই খেলতে খেলতে একজন বাচ্চা উধাও হয়ে যায় ।তার কিছুক্ষণ পরেই দ্বীপের পাশে এক খাল থেকে উদ্ধার হয় তার মৃতদেহ । সেই থেকেই ভয় ঢুকে যায় স্থানীয়দের মধ্যে।ক্রমে জনমানবহীন হয়ে পড়ে এই দ্বীপ ।

ঘটনার কিছু বছর পর  ১৯৫০ সালের দিকে ডন জুলিয়ান সানতানা নামের এক যাজক এই দ্বিপটিতে আসেন তপস্যার মাধ্যমে নিজের বাকি জীবন অতিবাহিত করার উদ্দেশ্যে ।আর তার বর্ণনায় জানা যায় যে দ্বীপটিতে পদার্পণ করার পর থেকেই  মৃত শিশুর আত্মা তাকে দেখা দিতে থাকে ।এমনকি তাকে পুতুল এনে দেওয়ার জন্য ও নাকি বায়না করতে থাকে সে।শিশুটির অতৃপ্ত আত্মা কে খুশি করার জন্য যুলিয়ান মানুষের কাছ থেকে পুতুল সংগ্রহ করতে থাকেন এছাড়াও সমুদ্রের জলে ভেসে আসা পুতুল ও কুড়িয়ে পাওয়া নানা পুতুল দিয়ে সাজিয়ে তুলতে থাকেন এই দ্বীপ ।সংগ্রহ করা এই হাজার হাজার পুতুল তিনি জঙ্গলে এনে গাছের ডালের সঙ্গে বেঁধে রাখতেন। 

শোনা যায় এর কিছুদিন পরেই শিশুটির মৃতদেহ ঠিক যে জায়গায় পাওয়া গেছিলো সেখান থেকেই উদ্ধার হয় জুলিয়ানের ও নিথর দেহ ।পরবর্তীকালে জানা যায় যে মারা যাওয়ার আগে জুলিয়ান তার ভাইয়ের ছেলেকে নিয়ে ওই খালে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন এবং যে জায়গায় বাচ্চাটির লাশ উদ্ধার হয়েছিল সেখানেই জুলিয়ানের হঠাৎ মনে হচ্ছিল যে কেউ জলের তলা থেকে তাকে ডাকছে। আর এই কথা ভাইয়ের ছেলেকে বললে সঙ্গে সঙ্গে তারা মাছ ধরা বন্ধ করে ফিরে আসে ।এই অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটার পরে আশেপাশের লোকেদের বিশ্বাস গারো  হয় যে বাচ্চাটির অতৃপ্ত আত্মা এই দ্বীপটিকে অভিশপ্ত করে তুলেছে ।

 ১৯৯০ সালের দিকে মেক্সিকান সরকার এই দ্বীপটিকে ন্যাশনাল হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করেন এবং পর্যটন কেন্দ্র  বানানোর ও চেষ্টা করা হয় এটিকে  । কিন্তু এই দ্বীপ এতই ভয়ংকর যে বহু পর্যটক এই দ্বীপে আসার সাহস ও দেখান না ।অনেকে সাহস দেখিয়ে ওই দ্বীপে ঘুরতে যায় ঠিকই তবে তাদের বেশিরভাগই ভয় পেয়ে ফিরে এসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *