বাসন মাজাতে ও জামা পরিষ্কার করতে পারে। ডিমের খোসা যেভাবে ব্যবহার করবেন
নিউজ ডেস্কঃ বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর ডিম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রোটিন ও ভিটামিন যুক্ত এই ডিম যেকোনো স্বাস্থ্যকর ডায়েট প্ল্যান এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ডিম আমরা প্রায় সকলেই খাই। তবে, ডিমের খোসা ফেলেই দিই আমরা। কিন্তু জানেন কি ডিমের সাথে সাথে এই ডিমের খোসার ও কিন্তু রয়েছে নানা বহুমুখী ব্যবহার !ত্বকের যত্ন থেকে শুরু করে, ঘর পরিষ্কার বহু কাজেই ব্যবহার করা যেতে পারে ডিমের খোসা।
আসুন আজ জেনে নেওয়া যাক ডিমের খোসা ব্যবহার করার কয়েকটি উপায়
1) ঘর পরিষ্কার
ঘরের যত্ন সম্পর্কে আমরা সকলেই অত্যন্ত সচেতন। তবে, অনেক সময় অসাবধানতাবশত ঘরের মেঝেতে দাগ পড়ে যায়। বহু চেষ্টাতেও এই দাগ যদি নাও ওঠে চিন্তা নেই কোন।ঘরের মেঝেতে হওয়া দাগ থেকে শুরু করে জামা কাপড় যেকোনো দাগ ডিমের খোসা খুব সহজেই তুলে দিতে পারে। তাই এবার থেকে ডিমের খোসা ফেলে না দিয়ে একটি প্যাকেটে জমিয়ে রাখুন। অনেক ডিমের খোসা জমে গেলে তা একসাথে গুঁড়ো করে নিয়ে আপনার প্রয়োজন মত দরকারে ব্যবহার করতে পারেন ।
2) মাটির সার
আপনি যদি প্রকৃতিপ্রেমী হয়ে থাকেন আর আপনার ঘর বা অ্যাপার্টমেন্ট যদি থাকে বিভিন্ন গাছপালা তবে রাসায়নিক সারের ব্যবহারের বদলে গাছপালার পুষ্টির জন্য ব্যবহার করতে পারেন ডিমের খোসা গুঁড়ো ।ডিমের খোসা জমলে তা গুঁড়ো করে গাছের নিচের মাটিতে ভালো করে ছড়িয়ে দিন। এতে গাছের পুষ্টি ও বৃদ্ধি পাবে সেই সাথে মাটিও হয়ে উঠবে উর্বর। দেখবেন নিয়মিত ব্যবহার করলে ফুল, ফল বৃদ্ধি পাবে আপনার গাছে। আপনার আলাদা করে সার ব্যবহার করার খরচ ও কমে যাবে একেবারে।
3) কীটনাশক
ডিমের খোসা সার হিসাবে ব্যবহার করা যায় একথা তো আগেই জানানো হলো।তার সঙ্গে এটি কিন্তু খুব ভালো কীটনাশক হিসাবেও কাজ করে। আপনার গাছে যদি পোকামাকড়ের উৎপাত বৃদ্ধি পায় তবে গাছের ডালে,পাতায় পোকার উপদ্রব বন্ধ করতে ডিমের খোসা গুঁড়ো করে ভালো করে ছড়িয়ে দিন।দেখবেন পোকার উৎপাত কমে গেছে অনেকটা ।
4) আটকে যাওয়া বেসিন
ঘরের বেসিনের মুখ, বিশেষত রান্নাঘরের বেসিনের পাইপে অনেক সময় জমে যায় বিভিন্ন সবজির খোসা নোংরা প্রভৃতি। এর ফলে সহজে জল নামতে চায়না বেসিন থেকে। এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ পড়লে চিন্তা নেই কোন ।ডিমের খোসা গুড়ো করে তা কিছু পরিমাণ ছিটিয়ে দিন বন্ধ হওয়া বেসিনের মুখের ওপর। দেখবেন কিছুক্ষণের মধ্যেই জল নেমে যাবে এবং পাইপ ও পরিষ্কার হয়ে যাবে ।
5) বাসন মাজাতে ও জামা পরিষ্কার করতে
বাজার চলতি বাসন ধোয়ার সাবান ব্যবহার করার পরও অনেক সময় হাঁড়ি,কড়াই এর কালো দাগ বা পোড়া তেলের দাগ উঠানো যায় না কোনমতে। এই নাছোড়বান্দা দাগ কিন্তু সহজেই দূর করতে পারেন ডিমের খোলা ব্যবহার করে ।বাসন মাজার সাবান এর সাথে অল্প পরিমাণে ডিমের খোলা গুঁড়ো করে মিশিয়ে নিন ভালো করে। এরপর এটি ব্যবহার করলে দেখবেন অত্যন্ত কম পরিশ্রমে বাসন হয়ে উঠছে পরিষ্কার ।
শুধু বাসন ই না ডিমের খোলা গুঁড়ো করে ডিটারজেন্ট সাবান এর সাথে মিশিয়ে তা যদি জামা কাপড় ধোয়ার জন্য ও ব্যবহার করেন তাহলে দেখবেন জামাকাপড়ের হারিয়ে যাওয়া সাদা ভাব ফিরে আসবে নিমেষে ।
6)বাতের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে বাতের ব্যথায় ভোগেন অনেকেই ।প্রচুর ওষুধ খেয়ে, ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েও অনেক সময় বাতের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না কোনো মতে। এক্ষেত্রে কিছুদিনের জন্য ব্যবহার করে দেখতে পারেন ডিমের খোসা। এতে থাকা গ্লুকোসামিন ব্যথা নাশক হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। একটি পাত্রে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার ও ডিমের খোসা গুঁড়ো করে ভালো করে মিশিয়ে রেখে দিন কয়েক দিন। ভিনেগার এর মধ্যে ডিমের খোসা গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে তা ব্যথা হওয়ার জায়গায় ভালো করে লাগিয়ে মালিশ করতে থাকুন নিয়মিত ।বাতের ব্যথায় আরাম পাবেন অনেকটা
7) ত্বকের যত্নে
এতক্ষণ ডিমের খোসার নানা উপকারিতার কথা বলা হলো ঠিকই তবে ডিমের খোসার উপকারিতা কিন্তু এখানেই শেষ নয় ।রূপচর্চাতেও ডিমের খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে ।উজ্জ্বল মসৃণ ও কোমল ত্বক পাওয়ার জন্য একটি পাত্রে 1 টি গোটা ডিম ও দুটি ডিমের খোসা ভালো করে গুঁড়ো করে মিশিয়ে নিতে হবে এরপর এই মিশ্রণটি মুখে ও গলায় লাগিয়ে অপেক্ষা করুন বেশ কিছুক্ষণ শুকিয়ে এলে গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।নিয়মিত কয়েকদিন ব্যবহার করলেই দেখবেন আপনার ত্বকে এসেছে এক আমূল পরিবর্তন ।