কামড়ে আস্ত জাহাজ ভেঙ্গে ফেলার ক্ষমতা রাখে যে সামুদ্রিক দানব
নিউজ ডেস্ক – প্রাচীন যুগে পৃথিবীর বুকে এমন বহু প্রাণী ছিল যারা রীতিমতো মানুষকে আতঙ্কিত ও ত্রাসের মুখে ফেলছে। তবে সে সকল প্রাণীর বর্তমানে কোন অস্তিত্ব নেই বলে দাবি করে বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু আজও এমন কিছু জলজ প্রাণী রয়েছে যারা রীতিমতো রক্তপিয়াসী। অর্থাৎ এমন একটি হাঙ্গরের খোঁজ পাওয়া গেছে যা দানবাকৃতি হওয়ার পাশাপাশি মানুষ খেকো। যদিও এই বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
লোকভাষ্য মতে জানা যায়, প্রায় ২০ লক্ষ বছর আগে সমুদ্রের গর্ভে এক বিশাল আকৃতির হাঙ্গর ছিল। যার নাম মেগালোডোন। বিশালাকৃতির এই হাঙ্গরটির দেহের আকৃতি ছিল ১৮ মিটার বা ৬০ ফুটের মতো লম্বা । আবার অনেকের মতে এরা একশো ফুটেরও বেশি লম্বা হতো। এদের চোয়াল ছিলো ৬ ফুটেরও বেশি প্রশস্ত আর ৭ ইঞ্চি লম্বা ২৭০টির মতো ক্ষুরধার দাত। এইসকল মাংসাশী হাঙ্গরের জীবাশ্ম দেখে অনুমান করেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে বর্তমানে সমুদ্র বক্ষে সবচেয়ে বড় শার্ক হলো গ্রেট হোয়াইট শার্ক। যার আয়তন প্রায় ১৫-২০ ফুট লম্বা। তবে বিজ্ঞানীরা বহু গবেষণা করে দাবি করেন যে বর্তমানে সেই বিশাল দানবাকৃতির হাঙ্গরটির কোন অস্তিত্ব নেই। কিন্তু বিজ্ঞানীদের ভুল প্রমাণিত করেছে একদল জেলে।
মেক্সিকো, পলিনেশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার একদল জেলে বলেছেন যে তারা নিজেদের স্বচক্ষে ৫০-৬০ ফুটের মতো লম্বা বিশাল আকৃতির একটি জন্তু দেখতে পায় জলে। পরবর্তীতে অবশ্য সমুদ্রে একটি তিমি মাছের মৃতদেহের গায়ে এক বিশাল আকৃতির জন্তুর কামড় দেখে গবেষকেরা জানিয়েছিলেন এই কামোড় প্রায় ৩০ ফুটের বিশাল আকৃতির জন্তুর। তবে অন্যদিকে মেগালোডোন আদেও কোন অস্তিত্ব রয়েছে কিনা তার সপক্ষে গবেষকরা বলেন, সেলিক্যান্থ নামে একটি সামুদ্রিক প্রাণী যা সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিলো বলে মনে করা হতো, কিন্তু ১৯৩৮ এবং ১৯৫২ সালে ওই প্রাণীটি আবার দেখতে পাওয়া যায়। সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের মতে সেলিক্যান্থের মতো সমুদ্র গহবরে বিশালাকৃতির এই জলদস্যু হয়তো বিলুপ্ত হতে হতেও বেঁচে গিয়েছে। তবে এই বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ মেগালোডোন বিশালাকৃতির প্রাণীটির বেঁচে থাকার জন্য যে পরিবেশ ও খাদ্য প্রয়োজন সেটি যুগের পরিবর্তনে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তাই সকলেই অনুমান করছেন খাদ্যের অভাবে ও উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে প্রাণীটিও পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে।