সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। গুঁড়ের অসাধারণ ৯ টি কার্যকারিতা
বর্তমানে আমরা প্রায় সকলেই কমবেশি ফিটনেস সচেতন। আর সেই কারণেই মিষ্টি জাতীয় জিনিস সম্পূর্ণ ভাবে এড়িয়ে চলার ই চেষ্টা করেন অনেকে। কিন্তু তা বলে বাঙালী হয়েও মাঝে মাঝে কি আর মিষ্টির প্রতি লোভ জাগবেনা তা কখনো হয় নাকি ? তাও শরীরের কথা ভেবে মুখে তুলতে পারছেন না মিষ্টি একটা দানাও!এটাই যদি আপনার অবস্থা হয়ে থাকে, তবে আপনার জন্য সুখবর ।
ডায়েটিশিয়ান দের মতে চিনি শরীরের জন্য ক্ষতিকারক ঠিক ই তবে সব ধরনের মিষ্টি ই ক্ষতিকারক নয় মোটে ও।মিষ্টিপ্রেমী হলে চিনির পরিবর্তে গুড় কিন্তু সহজেই খেতে পারেন আপনি ।উপরি পাওনা, এতে থাকা ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ,পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রভৃতি শরীরকে সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে। আসুন জেনে নেই স্বাস্থ্যরক্ষায় গুড়ের উপকারিতা গুলি ।
১)শরীরের হজম ক্ষমতা বাড়ায়
ফাইবার জাতীয় খাবার আমাদের শরীরের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি একথা তো সকলেই জানে, তবে গুড়ে ফাইবার না থাকলেও এটি কিন্তু আমাদের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ।কারণ এটি আমাদের শরীরে থেকে নিঃসৃত হওয়া এনজাইম গুলোকে আরো সক্রিয় করে তোলে ফলে হজমের যেকোনো সমস্যা দূর হয় ।
২)লিভার পরিষ্কার রাখে
প্রতিদিনের ডায়েটে গুড় রাখলে তা আমাদের শরীরে অপ্রয়োজনীয় টক্সিন গুলি ডিটক্স এর কাজ করে ।প্রত্যেক দিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে এক টুকরো কাচা হলুদ গুড় দিয়ে খেলে তা শরীরে জমা হওয়া সমস্ত টক্সিক পদার্থকে শরীর থেকে বার করে দেয় ।যার ফলে শরীর থাকে সুস্থ সেই সাথে ত্বক ও হয়ে ওঠে উজ্জ্বল ।
৩)সংক্রমণ প্রতিরোধ করে
গুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজ ।জিংক ,সেলানিয়াম জাতীয় খনিজ গুলি শরীর এর যেকোন সংক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়ে তোলে। এছাড়া নিয়মিত অল্প পরিমাণে গুড় খাওয়া কিন্তু অকাল বার্ধক্য থেকেও রক্ষা করে শরীরকে।
৪)পিএমএস সংক্রান্ত নানা সমস্যা দূর কর
অনেক মহিলারই ঋতুস্রাবের সময় পি এম এস সংক্রান্ত নানা রকম সমস্যা দেখা দেয় ।এমনকি ঋতুস্রাবের সময় পেট ও কোমরের অসহ্য ব্যথা ও দেখা দেয় অনেকের ই। ঋতুস্রাবের এই সমস্যায় রোজ অল্প করে গুড় খেলে সমস্যা অনেকটাই কমে যায় ।
৫) শরীরে এনার্জির যোগান দেয়
গুড কিন্তু শরীরে অফুরন্ত এনার্জি যোগান দিতে ও সক্ষম ।রোজ দিনের শুরুতে অল্প পরিমাণ গুড় খেলে সারাদিন এর ধকল বা ক্লান্তি অনেকটাই কমে যায় ।এবং এক্সারসাইজ সহ সারাদিন এর জাতীয় কাজে শরীরে আসে এনার্জি ।
৬)শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা দূর করে
আপনার যদি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকে তবে, নিয়মিত গুড় খাওয়া কিন্তু আপনার সেই সমস্যা বেশ খানিকটা প্রশমন করতে পারে ।গুড় ও তিল একসাথে মিশিয়ে খেলে ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমা জাতীয় সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে বেশ খানিকটা ।
৭)ওজন কমায়
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে মিষ্টি জাতীয় জিনিস খেতে অনেকেই ভয় পেলেও অল্প পরিমাণে প্রতিদিন গুড় খাওয়া কিন্তু শরীরের পক্ষে মোটেও ক্ষতিকারক নয়।বরং উল্টে ওজন কমায় এটি গুড়ের মধ্যে থাকা পটাশিয়াম শরীরে পেশী গঠন ও হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এছাড়া শরীরে জলের ভারসাম্য বজায় রাখে ফলে ওজন কমে ।
৮)হাড়ের ব্যাথা
বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে হাড়ের দূর্বলতা, হাড়ের ক্ষয় ও ব্যথা জাতীয় নানা সমস্যা দেখা যায় সবার ই। এক্ষেত্রে প্রতিদিন যদি আদাকুচি ও গুড় মিশিয়ে সকালে খাওয়া শুরু করেন তবে হাড়ের সমস্যা দূর হয় বেশ খানিকটা ।আর তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে দুধের সাথে গুড় মিশিয়েও খেতে পারেন প্রতিদিন ।
৯)রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুড় খুবই ভালো কাজ দেয় ।গুড়ের মধ্যে থাকা পটাশিয়াম ও সোডিয়াম শরীরে ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে ফলে রক্তচাপ ও থাকে নিয়ন্ত্রণে ।
এতক্ষণ গুড়ের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা হলো ঠিক ।তবে মনে রাখবেন যে কোন জিনিসের মত ই গুড় ও অত্যাধিক পরিমাণে গ্রহণ করা শরীরের পক্ষে মোটেও ভালো না।গুড় ওজন কমাতে ও শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ঠিক তবে এই গুড়ের পরিমাণ যদি বেশি হয়ে যায় রোজকার ডায়েটের তবে ওজন কমানোর বদলে ওজন বৃদ্ধি হওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে ।