তৈলাক্তভাব কমাতে সাহায্য করে। টোম্যাটোর অসাধারন ৮ টি কার্যকারিতা
মুখের জেল্লা কমে গেছে ?তাহলে খুব সহজেই বাড়ি বসেই ঘরোয়া উপায়ে ফিরে আনতে পারেন ত্বকের উজ্জলতা। বাড়িতে প্রতিদিনের ত্বক পরিচর্যার জন্য ব্যবহার করতে পারেন টমেটো। এটি কেবল আপনার ত্বককে হারানো উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে দেবে তাই নয় বরং ত্বককে করে তুলবে সুন্দর মসৃণ ও সুস্থ । প্রতিদিনের ত্বক পরিচর্যার জন্য আসুন জেনে নেই কি কি উপায়ে ত্বকে টমেটোর ব্যবহার করতে পারবেন।
1)তৈলাক্তভাব কমাতে
আপনার স্কিন যদি অয়েলি হয়ে থাকে তবে ত্বকের চিটচিটে ভাব কমাতে ও ত্বককে সতেজ রাখতে টমেটোর ব্যবহার করতে পারেন । এটি মুখকে শুষ্ক না করে তুলেই মুখ থেকে অত্যাধিক তেলতেলে ভাব কমিয়ে দেবে।
মুখের তৈলাক্ত ভাব কমানোর জন্য একটা টমেটো কেটে দুটো টুকরা করে তা সারা মুখেভালো করে ঘষতে থাকুন । ১০ থেকে ১৫ মিনিট তার জল দিয়ে ধুয়ে ভালো করে মুখটা আলতো করে মুছে নিন ।
2)আর্দ্রতা ধরে রাখতে
টমেটো মুখের অত্যাধিক তৈলাক্ত ভাব যেমন কমায় তেমনি ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে ও ম্যাজিকের মতো কাজ করেন । টমেটো ত্বকের প্রাকৃতিক তেল এর উৎপাদন সঠিক পরিমাণে বজায় রাখে ফলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং ত্বকে দেখা যায় এক প্রাকৃতিক অভা।
ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখার জন্য টমেটোর সাথে অ্যালোভেরা মিশিয়ে একসাথে ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন ।
3)ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে
ত্বকের মৃত কোষ অনেক সময়ই আমাদের ত্বককে করে তোলে শুষ্ক ও রুক্ষ ।ত্বকের সাধারণ উজ্জলতায় যেন যায় হারিয়ে।কিন্তু টমেটোর মধ্যে থাকা এনজাইম কিন্তু ত্বককে এক্সফোলিয়েট করে মৃত কোষ এবং ব্ল্যাক হেডস দূর করতে পারে সহজেই।
টমেটো ও ব্রাউন সুগার একসাথে মিশিয়ে তা দিয়ে সারা শরীরে স্ক্রাব করতে পারেন। এছাড়া মুখের রুক্ষতা দূর করার জন্য টমেটোর সাথে অল্প পরিমাণে চিনিও মেশাতে পারেন । টমেটোতে চিনি ভালোভাবে মেশানোর জন্য ব্যবহারের ১৫ মিনিট আগে প্যাক তৈরি করে রাখুন।তবে মুখে এক্সফলিয়েট করার সময় বেশি জোরে ঘষবেন না এতে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।
4)ব্রণ কমানোর জন্য
অত্যাধিক বায়ু দূষণের কারণে বর্তমানে টিন এজার থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক সবার মুখেই দেখা যাচ্ছে ব্রন। বিশেষত তৈলাক্ত ত্বকে ময়লা ও ব্যাক্টেরিয়া বেশি সহজে বসে যায়। ফলে লোমকূপ বন্ধ হয়ে দেখা দেয় ব্রণ। আর এই ব্রণের সমস্যায় আপনার যদি নাজেহাল অবস্থা হয় তাহলে ঘরোয়া উপায়ে ব্রণ দূর করার জন্য ব্যবহার করুন টমেটো ।
ব্রণ পরিষ্কার করতে টি ট্রি অয়েল ও খুব ভালো কাজ করে সুতরাং টমেটোর সাথে দু-তিন ফোটা টি ট্রি অয়েল ভালো করে মিশিয়ে নেবেন।তারপর মিশ্রনটিকে ভালো করে গোটা মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন । দেখবেন নিয়মিত ব্যবহারে ব্রন ক্রমশ কমে যাবে।
5)ত্বকের ইনফেকশন কমাতে
ঘন ঘন মেকআপ ব্যবহার দীর্ঘক্ষন রোদে থাকা ও অন্যান্য নানা কারণে ত্বকে নানা রকম অসুবিধা দেখা দিতে পারে ।বিশেষত যদি আপনার সেনসিটিভ স্কিন থেকে থাকে তাহলে এই ধরনের সমস্যার পরিমাণ আরো বেড়ে যায় । এক্ষেত্রে টমেটো যেন অনেকটাই ম্যাজিকের মতো কাজ করে কারণ এতে কয়েকটি প্রদাহরোধী উপাদান যেমন- বেটা ক্যারোটিন, লুটেইন, ভিটামিন ই, সি এবং লাইকোপেন সমৃদ্ধ যা প্রদাহ ও অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে।
মুখে জ্বালা ভাব দেখা দিলে অস্বস্তি কমানোর জন্য একসাথে টমেটো সস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন
6)ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে
ত্বকের উজ্জ্বলতা অনেকটাই নির্ভর করে ভিটামিনের ওপর ।বয়স বাড়তে থাকলে ত্বকের উজ্জলতা স্বাভাবিকভাবে কমে যায় কিন্তু প্রাকৃতিক ভাবে টমেটো ব্যবহার করে কিন্তু ত্বকের উজ্জলতা আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব ।টমেটোতে আছে ভিটামিন সি, ই এবং বিটা ক্যারোটিন যা ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল করে ও ত্বক সুন্দর রাখে।
টমেটোতে আছে অফুরন্ত ভিটামিন। আর এর সঙ্গে চন্দন বা হলুদের গুঁড়া যদি টমেটোর রসের সাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিয়মিত ত্বকে লাগাতে পারেন তাহলে অল্প সময়ের মধ্যে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
7)লোমকুপ টানটান করে
টমেটোর অ্যাস্ট্রিনজেন্ট ত্বকের লোমকূপ টান টান রাখতে সাহায্য করে এবং এবং পিগমেন্টেশন কমায় । ফলে ত্বকের বয়স দেখায় অনেক কম ।
সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকের লোমকূপের সমস্যা দেখা দেয় এক্ষেত্রে টমেটো ও লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করুন, উপকার পাওয়া যাবে।
8)রোদের কারণে হওয়া ট্যান
বর্তমানে আমাদের বেশিরভাগ সময়টা প্রায় ই বাইরে কাটাতে হয়। আর এর ফলে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মির কারণে প্রায়ই গোটা গায়ে মুখে দেখা যায় ট্যান ।টমেটোর নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ট্যান সহজেই রিমুভ করা যায় । টমেটোতে লাইকোপেন থাকায় তা লাল রংয়ের হয়ে থাকে। এটা ইউভি-সুরক্ষার উপাদান বিশিষ্ট। এটা সানব্লক হিসেবে কাজ না করলেও রোদের কারণে হওয়া ক্ষতি থেকে বাঁচাতে টমেটো সহায়তা করে। এটা রোদে পোড়াভাব ও জ্বলুনি কমায়।