সদ্যজাত মায়েদের শরীরে দুধের পরিমান বৃদ্ধি করতে কি করা উচিৎ?
নিউজ ডেস্ক – শিশু যখন মায়ের গর্ভে আসে তখন নারী শরীরে বেশ কিছু হরমোনের পরিবর্তন ঘটে। আর সেই হরমোনের প্রভাবের কারণেই মাতৃদুগ্ধ তৈরি হয়। এই হরমোন গুলির মধ্যে অন্যতম হলো প্রোজেস্টেরন, ইস্ট্রোজেন, অক্সিটোসিন, প্রোল্যাকটিন, থাইরক্সিন, বিটা এন্ডফিন, লেপটিন ইত্যাদি।
বৈজ্ঞানিক সূত্র অনুযায়ী, প্রোজেস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন হরমোনের প্রভাবে এই গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরের নানা রকম পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। তবে অক্সিটোসিন হরমোনের কারণে স্তনের বিকাশ এবং বৃদ্ধি ঘটে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলা রয়েছে কোন মহিলা গর্ভবতী না হলে তার স্তনের সম্পূর্ণ বিকাশ ঘটে না। কার্যত শরীরে হরমোনের তারতম্যের জন্য ১৫-২০টি দুগ্ধ নালিকার সমন্বয় গাছের মূলের মতো শাখা-প্রশাখার একটি লোব তৈরি হয়। সেই কারণেই গাছ বড় হলে যেমন নুয়ে পরে তেমনই দুগ্ধ নালিকা, উপনালিকা, শেষপ্রান্তে ফলাকার অ্যলভিলাই গুলি হল দুগ্ধ তৈরির কারখানার মতো।
অন্যদিকে প্রোল্যাকটিন হরমোন মাতৃ দুগ্ধ ক্ষরণে উৎপাদনে সহায়তা করে। তবে এটি প্রমাণিত যে গর্ভাবস্থায় মেয়েদের রক্তে প্রোল্যাকটিন হরমোনের মাত্রা বেশি পাওয়া যায়। যে কারণে স্তনের উত্তেজনা কাজ করে এবং মেমারি টিস্যু উৎপাদনে সহায়তা করে। এই টিস্যু উৎপাদন হলেই স্তনের গঠনে ও দুগ্ধ উৎপাদন হয় এবং এটি শাখা-প্রশাখা অর্থাৎ একাধিক শিরার মাধ্যমে গোরা বা নিপলে গিয়ে জমা হয়।
প্রতিটি গোরা আবৃত থাকে একটি কালো অংশের দ্বারা। যোগ কলার সমন্বয়ে কুপার্স লিগামেন্ট ও ফেট স্তনবৃন্তের চারিপাশে যে কালো অংশ থাকে তাকে অ্যারিওলা বলে। এই সেই অ্যারিওলাতে শিশুরা ঠোট দিয়ে চাপ দিলেই সাইনাস থেকে নিপলের মাধ্যমে দুগ্ধ নির্গত হয়।
অন্যান্য সময় দেখা গিয়েছে গর্ভাবস্থার ১৪ সপ্তাহের মাথায় কলোস্ট্রাম উৎপন্ন হয় এবং কখনো কখনো দুগ্ধ ক্ষরণ হয়। সেক্ষেত্রে ব্রেস্ট প্যাড ব্যবহার করা উচিত। তবে চিকিৎসকদের মতে মায়েদের প্রথম দুগ্ধ ক্ষরণে অর্থাৎ কলোস্ট্রাম শিশুদের জন্য অত্যন্ত পুষ্টিগুণসম্পন্ন বিশেষ তরল। এই কলোস্ট্রামে অতিরিক্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট ,প্রোটিন এবং অ্যান্টি বডি থাকে। কিন্তু এতে ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকে। যার কারণে শিশুদের দেহে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা জন্ম থেকেই বেড়ে যায়।
আবার বিটা এন্ডোরফিন হরমোন মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে শিশুদের দেহে প্রবেশ করলে সেটি মানসিক চাপ ও শারীরিক ব্যথা বা অনুভূতি কিংবা বহির্জাত অন্যান্য একাধিক শারীরিক সমস্যার সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে। এছাড়াও দুধে বডি ফ্যাট ও লিপিড থাকে। এই লিপিডের মাধ্যমে লেপটিন হরমোন তৈরি হয় যেটা শিশুদের ক্ষুধা-তৃষ্ণা ,ওজন নিয়ন্ত্রণ ও তাপ শক্তি উৎপাদন ও ব্যয় করতে সহায়তা করে।
যদিও লিপিড, ফ্যাট ছাড়াও রয়েছে একাধিক হরমোন, যেমন – গোনাডোট্রপিন, ইনসুলিন, ইস্ট্রোজেন, এনডোরজেন, গ্যাস্ট্রিন, এডিপোনেকটিন, রেসিসটিন, এবং গ্রেলীন।