সকালে কুড়ি মিনিট মর্নিং ওয়াক। যৌবন ধরে রাখতে যে কাজ গুলি করবেন
নিউজ ডেস্ক – সারাজীবন নিজের যৌবন ধরে রাখতে কে না চায়! বার্ধক্য জিনিসটা সকলেই এড়িয়ে যেতে পছন্দ করেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এবং প্রাকৃতিক নিয়মে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর মানুষের জীবনের যৌবন চিরতরে হারিয়ে বার্ধক্য নেমেই আসে। এটা খুবই সাধারণ একটা বিষয় কিন্তু অনেকেই চিরতরুণ কিংবা তরুণী থাকার জন্য অনেক ভয়ানক জিনিসপত্র করে থাকেন। অনেক সময় দেখা গিয়েছে এমন মানুষ রয়েছে যারা প্লাস্টিক সার্জারিও পর্যন্ত করান। কিন্তু এইসব জিনিস খুবই বিপদজনক এবং প্রাণনাশক। তবে ভয়ানক পথ ছাড়াও এমন কিছু উপায় রয়েছে যেগুলো প্রতিনিয়ত অনুসরণ করলে মানুষের যৌবনের সত্তাটা দীর্ঘদিন বলে থাকতে পারে। যেমন –
. সকালে ঘুম থেকে উঠে চার গ্লাস জল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। এছাড়াও সারা দিনে ৮ থেকে ১২ গ্লাস বাড়তি জল খেতে হবে। এই অভ্যাসটা করলে প্রায় ৩৬ ধরনের রোগ হওয়ার থেকে বিরত থাকে কিংবা রোগ থাকলেও সেটি সেরে যায়।
. সকালে কুড়ি মিনিট মর্নিং ওয়াক করতে হবে। তার সঙ্গে ১৫ মিনিট বাইসাইকেল চালানো অভ্যাসটা রাখা খুবই জরুরি।
. সকালের মর্নিং ওয়াক সম্পন্ন করে দুধ ছাড়া হালকা এক কাপ চা খেতে হবে। এক্ষেত্রে যাদের ওজন অত্যাধিক তারা চিনি খাওয়া বাদ দিন। তবে বেশি গরম চা খাওয়া চলবে না এবং র চা খাওয়া অভ্যাস করতে হবে। কারণ আধুনিক বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী চায়ে রয়েছে অ্যান্টিঅডেন্ট, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
. দিনে অন্তত এক হাজার মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি খেতে হবে। এই ভিটামিন-সি মানুষকে চির তরুণ থাকার সহায়তা করে। কিন্তু ভিটামিন-সি মানের ট্যাবলেট খেলে কি উপকার পাওয়া যাবে সেটা না ভিটামিন সি সমৃদ্ধ তাজা ফল খেতে হবে প্রতিদিন। এটি ক্যান্সার রোগ ঠেকাতে সাহায্য করে। সেক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় আমলকি, লেবু , টমেটো, কমলা, পেয়ারা অর্থাৎ টক স্বাদের ফল রাখা যেতে পারে।
. আবার লিফট ত্যাগ করে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটা শুরু করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে ব্যস্ত মানুষ ব্যায়ামের সময় পায়না তারা এই পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করলে দিনে ব্যায়াম হয়ে যাবে। লিফট ছেড়ে সিঁড়ি ব্যবহার করা কিংবা ফোনে কথা বলার সময় হেঁটে হেঁটে কথা বলা ইত্যাদি।
. প্রচুর পরিমাণে অর্ধেক সিদ্ধ করার শখ সবজি তরকারি এবং খুব অল্প পরিমাণে ভাত-রুটি নিয়ে খাদ্য তালিকা তৈরি করতে হবে। সেক্ষেত্রে ভাজাভুজি ও তৈলাক্ত খাবার যেমন তেল-চর্বি , ঘি ,মাখন সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে। সবুজ শাকসবজি সহ বিভিন্ন অধিক পরিমাণে স্যালাড খেতে হবে। কারণ কাঁচা সবজি যেমন লেটুসপাতা, পুদিনাপাতা, টমেটো খেলে শরীরের প্রোটিন ভিটামিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
. পূর্ণ বয়স্ক দের জন্য গরু ছাগল মহিষ এর দুধ ও প্রয়োজনীয় এক কথায় বলতে গেলে ক্ষতিকারক। স্টাইল দুগ্ধজাত জিনিস সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে হবে।
. নিজের কাজ নিজে করে নেওয়াই ভালো। যেমন – কাপড় কাঁচা ,বাসন মাজা, ঘর পরিষ্কার ইত্যাদি।
. প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ছোট-বড় সব ধরনের মাছ রাখতে হবে। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ স্বাস্থ্যের পক্ষে অতি প্রয়োজনীয় কারণ ওটাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে মহৌষধ বলে মান্নতা দেওয়া হয়। তবে অনেকে মাছের কাটা খেয়ে নেন কিন্তু সেটা ঠিক নয় পাকস্থলীতে পাথর হতে পারে।
. রান্নার তেল বাদ দিয়ে তিলের তেল ও অলিভ অয়েল খাওয়া যেতে পারে কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ থাকে যা শরীরকে শক্তিশালী করে। বর্তমানে অনেকে তিলের তেল রান্নার জন্য ব্যবহার করে থাকেন। এটিএম শরীর-স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বকের যত্ন ও হাড় মজবুত করতেও সহায়তা করে। আবার অলিভ অয়েল শরীরের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে।
. সপ্তাহে অন্তত দুই একদিন টক দই খাওয়া উচিত। শারীরিক সুস্থতার এই জন্য দারুন উপকারী। এছাড়াও টক দইতে থাইরয়েডে ক্যালসিয়াম ,প্রোটিন , প্রোবায়টিকস এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খনিজ পদার্থ। টক দই খাবার হজম করতে সাহায্য করে।
. ফলের ক্ষেত্রে ব্লুবেরি, ডালিম ও কমলা লেবু খাওয়া খুবই উপকারী। কারণ ডালিমের ত্বকের মৃতকোষ নতুন কোষে পরিণত হয় এছাড়া এতে ভিটামিন সি রয়েছে যা ত্বক কুঁচকে যাওয়ার থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও ব্লুবেরিতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যেটি শরীরে মারাত্মক ক্ষতিকর উপাদান এর হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করে। কমলালেবুর কথা সকলেই জানে কারণ এটি ত্বক মসৃণ রাখার পাশাপাশি কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে।
. খাদ্য তালিকা ও ব্যায়াম ছাড়া ও নিজেকে সর্বদা খুশি রাখতে হবে তাহলেই যৌবনের ভাব ধরে রাখা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে ভালমতো ঘুম দরকার এবং মন খুলে হাসতে হবে। বৈজ্ঞানিক মতে কেবল মিনিটখানেক হাসির জন্যই শরীর থেকে ১.৩ কিলোক্যালরি ঘাটতি হয়। এছাড়াও অধিক আনন্দের জন্য মাঝেমধ্যে গান চালিয়ে বেশ কিছুক্ষণ নেচে নিতে পারে। কারণ সর্বদা একটা কথা মাথায় রাখতে হবে বিষন্নতা মানুষ দ্রুত মোটা বানিয়ে দেয় এবং বার্ধক্য নিয়ে আসে।