৪৪ দিন ধরে ৫০০ বার ধর্ষণ। জাপানের আইন কেন ধর্ষকদের স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে দিয়েছিল?
নিউজ ডেস্ক – প্রেম ভালোবাসা ছাড়া পৃথিবী অচল। কিন্তু তাই বলে ভালোবাসার সমীকরণ সব জায়গায় সমান হয় না । কোথাও জিনিসটা ভালো তো কোথাও খারাপ। তবে তিনি বাগান করার পরিণতি যে মাঝে মাঝে খুব ভয়ানক হয়ে ওঠে সেটা সকলেই কমবেশি জানা। ঠিক সেইভাবেই প্রেম প্রত্যাখ্যান করার জন্য অসহনীয় অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছিল যে নারীকে।
গল্পটা প্রায় তিন দশক পুরনো। সেই সময় জাপানের সাইতামা প্রেফেকচার অঞ্চলে ইয়াশিও মিনামি স্কুলে পড়তো জুনকো ফুরুতা নামের এক কন্যা। খুব একটা বেশি বয়স ছিল না তার। আর ৫ জন শিশুর মতো সেও হেসে খেলে জানান স্বপ্ন দেখে দিন কাটাতাম। কিন্তু সমস্যা শুরু হয়েছিল তার ১৭ বছর বয়সে। নিঃসন্দেহে ঝুমকো ছিল খুবই সুন্দরী। এমনকি সে কোনরকম মাদকাসক্ত ছিল না। এই কারণেই তার দিকে নজর পরেছিল বহু ছেলের। সকলের দৃষ্টি উপভোগ করলেও কিভাবে কাউকে পাত্তা দেয়নি জুনকো। কিন্তু হঠাৎই একদিন হিরোশি মিয়ানো নামের এক যুবক তাঁকে প্রেম প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু সম্পূর্ণ সেটি নাকচ করে দেয় জুনকো। কার্ড তৈরির পর থেকেই শুরু হয় ঝামেলা।
পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালের ২৫শে নভেম্বরের দিন হিরোশি সহ তার ৪জন বন্ধু সহ অপহরণ করেছিল জুনকোকে। শুধুমাত্র অপহরণ নয় তাকে নিজের বাড়িতে রেখে জুনকোকে পার্থ করেছিল তার বাড়িতে ফোন করে জানাতে যে সে ভালো আছে এবং বেশ কিছুদিন নিজের বন্ধুর বাড়িতে থাকবে। কার্যত অভিভাবকের সমস্যা মেটাতেই জুনকোর উপর শুরু হয় পাশবিক অত্যাচার। এই অত্যাচারের সমস্যা ছিল প্রায় ৪৪ দিন। তাকে অপহরণ করার পর থেকেই উলঙ্গ করে রাখত অভিযুক্তরা। কয়েক দিনের মধ্যে প্রায় ১০০ জনের বেশি ৫০০ বার ধর্ষণ করেছিলো জুনকোকে। কার্যত প্রতিদিন নতুন নতুন পন্থা অবলম্বন করে ধর্ষণ করা হতো। এটাই যথেষ্ট ছিল কোন মানুষকে নরক দেখানোর জন্য। বেশি কিছু উদাহরণ হিসেবে বলা যায় জুনকোকে প্রতিনিয়ত পিটানোর পাশাপাশি তার যৌনাঙ্গে ঢুকিয়ে দাওয়া হতো বোতল , কাঁচি ও লোহা সহ একাধিক জিনিস। এছাড়াও জুনকোকে জোর করে তেলাপোকা ও নিজের মূত্র খেতে বাধ্য করত অভিযুক্তরা। তার শরীরে বিভিন্ন সুবিধার পাশাপাশি স্তন্য কেটে নেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও তাকে বক্সিং ব্যাগের মতো ঝুলিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করা হতো, ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখা হতো ফ্রিজে। তবে পাশবিকতার সীমানা ছাড়িয়ে লাইটার দিয়ে চোখের মনি, যৌনাঙ্গ ও ক্লাইটোরিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। শরীরে একাধিক জায়গায় সূচ ফুটানো হয়েছিল জুনকোর।
স্বাভাবিকভাবে দীর্ঘদিন ধরে পাশবিক অত্যাচার করার জন্য একসময় নাকে রক্ত জমাট বেঁধেছে নিতে পারত না সে। তুমি একদিন নিজের প্রাণ বাঁচাতে সকলের চোখের আড়ালে পুলিশকে ফোন করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিল জুনকো। যদিও তার শাস্তি স্বরূপ মিলেছিল পায়ে আগুন দিয়ে সম্পূর্ণ পা অচল করে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি হাতের হাড় ভেঙ্গে শিথিল করে দেওয়া হয়েছিল। যার কারণে শরীরের একাধিক অভ্যন্তরীণ অঙ্গ ক্ষতবিক্ষত হওয়ায় খাবার হজম করতে না পেরে বমিও করতো সে। কার্পেট নোংরা করার অপরাধে আরও অধিক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছিল জুনকোকে। তবে ৩০ দিনের মাথায় মূত্রত্যাগ বন্ধ হয়ে যায়। তাই দীর্ঘদিনের শারীরিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ধর্ষকদের কাছে নিজের মৃত্যু বরণ চেয়েছিল জুনকো। পরবর্তীতে অবশ্য ৪৪ দিনের মাথায় নিজেই মৃত্যু বরণ করে নিয়েছিল দীর্ঘদিনের নির্যাতিতা নারী। অথচ যে মেয়েকে ৪৪ দিন ধরে অত্যাচার সহ্য করতে হলো সেই অপরাধের কোনো রকম শাস্তি নামে খোলা আকাশের তলে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারতো। কারণ আমাদের একটাই সকলের নাবালক ছিল। তবুও কেই শাস্তি পাক বা না পাক জুনকোর মর্মান্তিক ধর্ষণের কাহিনী আজও চোখে জল আনে সকলের।