শরীরের কোনো অংশে ব্যথা ও ফোলা কমাতে সাহায্য করে। কর্পূরের অসাধারন ১০ টি উপকারিতা
নিউজ ডেস্কঃ কর্পূর আমাদের সকলেরই অত্যন্ত পরিচিত একটি উপকরণ। পুজো থেকে শুরু করে গৃহস্থের ছোটখাটো কাজ অনেক কিছুতেই ব্যবহৃত হয় এই উদ্বায়ী কর্পূর । অনেক বাঙালি বাড়িতে গরমকালে জল ঠান্ডা রাখতে ও কর্পূর ব্যবহার করা হয়। কর্পূর এর বহুল উপকারিতা সত্ত্বেও বর্তমানে এর ব্যবহার অনেকটা কমে এসেছে। তবে, প্রাচীনকাল এ কিন্তু কর্পূর চিকিৎসা থেকে শুরু করে চুলের যত্নের জন্য পর্যন্ত ব্যবহার করা হতো ।ভারত, জাপানসহ এশিয়ার প্রায় সব দেশেই পাওয়া যায় এই কর্পূর।বর্তমানে ব্যবহার কমলেও আমাদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যায় কিন্তু সহজেই ব্যবহার করা যায় কর্পূর।আসুন আজ জেনে নিই শরীরের কি কি সমস্যায় ব্যবহার করা যায় কর্পূর ।
শরীরের কোনো অংশে ব্যথা ও ফোলা কমাতে:
অসাবধানতার কারণে অনেক সময় আমরা শরীরের বিভিন্ন অংশে চোট পেয়ে থাকি ।যার ফলে অনেক সময় চোট পাওয়া জায়গা ফুলে ওঠে ও তীব্র ব্যথা শুরু হয়। এক্ষেত্রে দ্রুত ঐ অংশে কর্পূর মালিশ করলে ব্যথা ও ফোলা ভাব এর উপশম ঘটে অল্প সময়েই।
গরমে ত্বকের চুলকানি ও র্যাশে আরাম:
চুলকানি ও র্যাশের সমস্যায় আমাদের মধ্যে অনেকেরই ভোগে। বিশেষত যদি সেনসিটিভ স্কিন এ এই সমস্যা যেন হাজার গুণ বেশি উৎপীড়ত করে।এই অবস্থা থেকে উপকার পেতে কিন্তু ব্যবহার করতে পারেন কর্পূর ।অল্প একটু কর্পূর এর তেল জলে মিশিয়ে ভালো করে র্যাশের ওপর লাগিয়ে ফেলুন ।দেখবেন সাথে সাথে থেমে গেছে চুলকানি ।গরমকালে সারা শরীরে এটি মালিশ করেও নিতে পারেন। দেখবেন যেকোন এলার্জির হাত থেকে পাবেন মুক্তি এক নিমেষে।
কাটা এবং পোড়ার দাগ দূর করতে সাহায্য করে
রান্না করতে গিয়ে হাত কেটে যাওয়া বা পুড়ে যাওয়া এক নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা ।অনেক সময় আমরা সেই মুহূর্তে পাত্তা দিই না এই জিনিসগুলো কে ফলে পরবর্তীকালে বিচ্ছিরি দাগ হয়ে যায় হাতে । পুরনো কাটা বা পোড়ার দাগ থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার করে দেখুন কর্পূর ।প্রত্যেকদিন অল্প জলে সামান্য একটু কর্পূর মিশিয়ে দাগের ওপর লাগান ।দেখবেন নিয়মিত ব্যবহারে আস্তে আস্তে মিলিয়ে যাবে দাগ ।তবে খেয়াল রাখবেন সদ্য কেটে যাওয়া বা পুড়ে যাওয়া ক্ষত স্থানে যেন ভুলেও ব্যবহার করবেন না কর্পূর ।
গোড়ালির যত্নে
অমসৃণ ও ফেটে যাওয়া গোড়ালির সমস্যায় অনেকেই ভোগে ।বিশেষত শীতকালে এই সমস্যা যেন আরও বেড়ে যায় ।এক্ষেত্রে মসৃণ ও নরম গোড়ালি পেতে ব্যবহার করুন কর্পূর ।নিয়মিত কর্পূর মেশানো জলে কিছুক্ষণ পা ভিজিয়ে রেখে ভাল করে স্ক্রাব করে নিলেই দেখবেন পা হয়ে উঠবে নরম ও আদ্র ।তবে এরপর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে ভুলবেন না অবশ্যই ।
পেশীর ব্যথা দূর করে
পেশীর ব্যাথা দূরীকরণে অত্যন্ত ভালো কাজ দেয় কর্পূর। হাতে বা পায়ে হঠাৎ হ্যাঁচকা টান দেখা দিলে বা পেশির ব্যথা শুরু হলে জলের মধ্যে কর্পূর মিশিয়ে তা ভালো করে ব্যাথায় মালিশ করলে ধীরে ধীরে পেশীর ব্যথা কমে আসে।কারণ কর্পূর পেশিকে শান্ত করতে সাহায্য করে।এমন কি দাঁত ব্যথা কমাতে ও সাহায্য করে কর্পূর ।
বিভিন্ন রোগকে দূরে রাখে কর্পূরের তেল
কর্পূর বিভিন্ন রোগ থেকে শরীরকে রাখে সুস্থ ।কর্পূরের তেলের অ্যান্টিইনফ্লামেটরি গুণ ত্বকের যে কোনো রকমের এলার্জিতে খুব ভালো কাজ দেয় ।সেইসঙ্গে এটি যেকোন পোকার কামড়ে ঘটা সংক্রমণ দূর করতেও সাহায্য করে। খিঁচুনির সমস্যা আছে যাদের তাদের জন্য ও উপকারী এটি কারণ এর মধ্যে সংকোচনরোধী কিছু গুণ আছে।
চুলের যত্নে
কর্পূর যে শুধু ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা কমাতে সাহায্য করে তাই নয় এমনকি চুলের যত্নে ও অত্যন্ত উপকারী কর্পূর ।কর্পূর এর তেলের সাথে ডিম,দই মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুল হয়ে ওঠে নরম, মোলায়েম ও উজ্জ্বল ।এছাড়া বিভিন্ন এসেনশিয়াল অয়েল এর সাথে কর্পূর এর তেল মিশিয়ে মাথায় ব্যবহার করলে যেমন চুলের বৃদ্ধি হয় ঠিক তেমনি কমে স্ট্রেস ।
চুল পড়া বন্ধ করতে
কর্পূর এর তেলের নিয়মিত ব্যবহার চুল পড়া কমায়।কর্পূর তেল এর সাথে আমন্ড অয়েল বা আলিভ অয়েল অল্প পরিমাণে মিশিয়ে চুলে লাগালে চুলের বৃদ্ধি বাড়ে এবং একই সাথে চুল হয়ে ওঠে শক্ত ও ঘন ফলে চুল পড়ার সমস্যা অনেক কমে আসে।
ব্রণ নিরাময়ে সাহায্য করে
ব্রণের সমস্যায় আমরা সকলেই কমবেশি ভুগি ।এই ব্রণ নিরাময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে কর্পূর ও ।কর্পূর এর অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি গুণ ত্বকে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা কমায় এবং ত্বকের জীবানু নাশ করে ।ফলে ত্বক হয়ে ওঠে সুস্থ ও উজ্জ্বল ।
কর্পূর ত্বক ও চুলের বিভিন্ন সমস্যায় খুব ভালো কাজ দেয় ঠিকই তবে ।রাসায়নিক যৌগ ব্যবহারের আগে আপনার অবশ্যই টেস্ট করে নেওয়া দরকার আপনি এলার্জিক কিনা ।তা না হলে এর থেকে তোকে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন অসুবিধা ।প্রয়োজন পরলে আগে ডাক্তারের উপদেশ নিয়ে তবেই ব্যবহার করবেন এটি।