১০ জনের অতৃপ্ত আত্মা এখনও বন্দী এই আয়নাটিতে
নিউজ ডেস্কঃ ভূতে বিশ্বাস থাকুক বা না থাকুক ভুতুড়ে রহস্যময় ঘটনা সম্পর্কে আগ্রহ আমাদের সকলেরই আছে। মধ্যাহ্নভোজনের পরে দুপুরে আরাম করে শুয়ে ভূতের গল্প শুনতেও নেহাত মন্দ লাগে না কারোরই। আর ছোটবেলা থেকে পড়ে আসা অসংখ্য ভূতের গল্পে আমরা প্রায়ই নানা ভূতুড়ে স্থান, বাড়ি, শ্মশান প্রভৃতির কথা শুনে এসেছি । অতৃপ্ত ভয়ঙ্কর এই সমস্ত আত্মাদের নিয়ে সিনেমাও নেহাত কম তৈরি হয়নি। ভুতুড়ে বাড়ি, আয়না প্রভৃতি কতকিছুই না সেই সমস্ত সিনেমায় উঠে এসেছে। তবে যদি বলা হয় এই পৃথিবীতে বাস্তবেই রয়েছে এমন এক আয়না ভুতুড়ে নামে কুখ্যাতি লাভ করেছে। বিশ্বাস করছেন না তাইতো? ভাবছেন তাই আবার সম্ভব নাকি!ভুতুড়ে আয়নার কথা আবার সত্যি হয় কখনো ? তবে অবিশ্বাস্য লাগলেও এই তূতুড়ে আয়নার গল্প কিন্তু মিথ্যা নয় ।
সেন্ট ফ্রান্সভিলের মির্টলেস প্ল্যান্টেসনএ রয়েছে এরকমই একটি ভয়ঙ্কর আয়না । আর এই আয়না এমনই ভয়ঙ্কর যে যে কোন মুভি বা গল্পের ভুতুড়ে আয়না কেউ তা হার মানাবে। স্থানীয়দের মতে এই আয়নায় একটি বা দুটি নয় প্রায় 10 জন অতৃপ্ত আত্মা আটকে রয়েছে । তবে শুধু যে আয়নাটি ই ভুতুড়ে তা নয় এই বাড়িটিও ভুতুড়ে বলে কুখ্যাতি অর্জন করেছে । এখানে প্রায়ই নানা রকমের ভুতুড়ে কান্ড কারখানা ঘটার কথা শুনতে পাওয়া যায় ।অনেকেই ওই বাড়িতে অতৃপ্ত আত্মার দেখা পর্যন্ত পেয়েছেন ।
স্থানীয়দের মতে এখানে এরকম ভৌতিক কর্মকাণ্ড ঘটার মূল কারণ লুকিয়ে আছে এই বাড়ির ইতিহাসেই। মার্কিন গৃহযুদ্ধের বহু পূর্বে এই খামার বাড়িটি তৈরি করেন জেনারেল ডেভিজ ব্র্যাডফোর্ড। তবে যে সে জমির ওপর কিন্তু তৈরি হয়নি এটি ।এক রেড ইন্ডিয়ান গোরস্থানের ওপর তৈরি এই খামারবাড়ি প্রথম থেকেই অভিশপ্ত ছিল বলে অনেকে মনে করেন । তার ওপর এই বাড়িতে নেহাত কম রক্ত ঝরেনি। ইতিহা ঘাটলে যদিও কেবল একটিমাত্র হত্যাকান্ডের কথা জানা যায় তবে,কথিত আছে এই বাড়িতে নাকি প্রায় দশটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে ।উইলিয়াম উইন্টার নামক এক ব্যাক্তি এই বাড়ির সিঁড়ির 17 নাম্বার ভাবে খুন হন বলে জানা যায়। তারপর থেকে অনেকেই জানিয়েছেন যে সিড়ির ওই এক জায়গায় অনেকবার তারা দেখতে পেয়েছেন স্যার উইলিয়াম উইন্টারের আত্মাকে ।
এ তো গেল কেবল বাড়ির কথা তবে এই খামারবাড়ির বদনাম মূলত এখানে থাকা এক আয়নার কারণে । শোনা যায় আজ অবদি একদিনের জন্যেও আয়নাটিকে ঢেকে রাখা সম্ভব হয়নি । অদ্ভুত শোনালেও এ কথাই সত্যি । বারবার ঢেকে রাখা হলেও কোনো না কোনোভাবে এই আয়নার ঢাকনা বারবার সরে গেছে । আর এর জন্য প্রত্যক্ষদর্শীরা অতৃপ্ত আত্মাদের দায়ী করেন। তারা মনে করেন এই আয়নার ভেতরে থাকা প্রেতাত্মারা সময় বুঝে বেরিয়ে আসেন আর তখনই সরে যায় আয়নার ঢাকনা। এমনকি এই বাড়িতে ঘুরতে যাওয়া অনেকেই নাকি এই আয়নার ভূতের খপ্পরে পড়েছেন ।
কথিত আছে সারা উড্রফ নামক এক মহিলা ও তার দুই শিশু সন্তানের মৃত্যু হয় এই বাড়িতে। আর তাদের মৃত্যুর পর ঢাকা না দেওয়া আয়নায় কোন রকম ভাবে তাদের আত্মা আটকা পড়ে যায়। আর সেই থেকেই এই বাড়িতে দেখা যায় তাদের । শোনা যায় প্রায়ই নাকি আয়নার কাচের গায়ে শিশুর হাতের ছাপ দেখা দেয় আবার কখনও কখনও এক অজানা বৃদ্ধ মহিলার চেহারাও ভেসে ওঠে এই আয়নায় ।
বর্তমানে আমেরিকায় এই ভুতুড়ে আয়না টি এতোটাই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে যে 2013 সালে এই আয়না কে কেন্দ্র করে এক ছবিও তৈরি হয় হলিউডে অকুলাস নামের । তবে ,যতই ভুতুড়ে হিসেবে কুখ্যাতি লাভ করুক এই বাড়ি ! ভূত নিয়ে আগ্রহী বা অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় বহু মানুষ প্রত্যেক বছর এই বাড়ি ভ্রমণ করতে আসেন ।