লাইফস্টাইল

বাজে কোলেস্ট্রল এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। মুসুরের ডালের অসাধারন কিছু কার্যকারিতা

আমরা সাধারণত পেট ভরার জন্যই খাবার খেয়ে থাকি কিন্তু, কোন খাবার খেলে পেট ভরার পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য উপকার হবে সে কথা কি একবারও ভেবে দেখি? 

এমন অনেক খাবার আছে যেগুলো পেট ভরতে তো সাহায্য করে কিন্তু শরীরের ক্ষতি সাধনই বেশি করে, আবার এমনও অনেক  খাবার আছে, যা পেটভরা সাথে সাথে শরীরের নানান উপকারে কাজে আসে। তেমনি একটি উদাহরণ হল মসুরের ডাল। 

মুসুরের ডাল কি শরীরের পক্ষে আদৌ ভালো না খারাপ তা জানার জন্য কয়েকজন গবেষক এই মুসুর ডাল নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তাতে যে তথ্য উঠে আসে তা বেশ চমকপ্রদ। 

মুসুর ডালে লুকিয়ে রয়েছে অনেক পুষ্টিকর উপাদান, যা একাধিক মারন রোগকে আটকাতে দারুন কাজে আসে। বিশেষত হার্ট কে ভালো রাখতে এই ডালটির অন্য কোন বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয় প্রতিদিন মুসুরের ডাল খেলে আরও অনেক উপকার পাওয়া যায়। 

আসুন জেনে নেওয়া যাক মুসুর ডালের উপকারিতা-

  • বাজে কোলেস্ট্রল এর মাত্রা কমাতে:

           গবেষণায় এ কথা প্রমাণিত হয়েছে যে, মুসুর ডালে উপস্থিত ফাইবার রক্তে মিশে থাকা বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে একদিকে যেমন হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমে তেমন স্ট্রোকের সম্ভাবনাও হ্রাস পায়। 

  • হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে:

            মুসুর ডালে ফাইবার ছাড়াও রয়েছে ফলে এবং ম্যাগনেসিয়াম, যা হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। ফলে কোনও ধরনের হার্টের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে। প্রসঙ্গত, ফলেট শরীরে হমোসিস্টেনিনের মাত্রা কমায়। ফলে হার্ট দীর্ঘদিন পর্যন্ত কর্মক্ষম থাকে। অন্যদিকে, ম্যাগনেসিয়াম সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বাড়িয়ে তোলে। এমনটা হওয়ার কারণে শুধু হার্ট নয়, শরীরের প্রতিটি ভাইটাল অর্গানের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

  • হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: 

            মুসুর ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা হজমে সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ বাড়িয়ে তোলে। ফলে বদ-হজম সহ গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যাও কমতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রম এবং ডাইভারটিকিউলোসিসের মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।

  • রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়:

            এই ডালে উপস্থিত সলেবল ফাইবার ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি ইনসুলিন রেজিস্টেন্স এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়ার মতো সমস্যাও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ পায় না।

  • প্রোটিনের ঘাটতি দূর করে:

           মুসুর ডালে উপস্থিত ২৬ শতাংশ ক্যালরি আদতে প্রোটিন হিসেবে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। ফলে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় এই উপাদানের ঘাটতি দূর হয়। সেই সঙ্গে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে। তাই যারা মাছ-মাংস খেতে খুব একটা ভালবাসেন না, তারা ডালের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতেই পারেন।

  • এনার্জির ঘাটতি দূর হয়:

           শরীরে ফাইবার এবং কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি যত কমবে, তত এনার্জি লেভেল বাড়তে থাকবে। তাই যদি অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পরার মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে বেশি বেশি করে মুসুর ডাল খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন সমস্যা কমে গেছে। কারণ এই ডালটিতে যেমন প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে, তেমনি আছে কার্বোহাইড্রেটও।

  • ওজন হ্রাসে সাহায্য করে:

          পেট যত ভরা থাকবে, তত খাওয়ার ইচ্ছা কমবে। আর খাবার  যত কম খাওয়া হবে, তত ওজন বাড়ার আশঙ্কা কমবে। মুসুর ডালে উপস্থিত কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, উপকারি খনিজ এবং ফাইবার অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেটকে ভরিয়ে রাখে। ফলে কিছু সময় অন্তর অন্তর যেমন খাবার  খাওয়ার ইচ্ছা কমে, তেমনি জাঙ্কফুড খাওয়ার প্রবণতাও হ্রাস পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমতে শুরু করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *