মিশরীয় সভ্যতার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক হিন্দু মন্দিরের ইতিহাস
নিউজ ডেস্ক – প্রাচীন যুগ থেকে বর্তমান পর্যন্ত এমন বহু রহস্যময় জিনিস আছে যার পেছনের লুক্কায়িত কারণ খুঁজতে কালের ঘাম ছুটেছে বিজ্ঞানীদের। তবে এই রহস্যময়ী সাম্রাজ্যের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে মিশর। কারণ কমবেশি সকলেই জানেন যে মিশরীয় রহস্য ভেদ করা প্রায় দুর্ভেদ্যকর ব্যাপার। কারণ মিশরের মমি থেকে শুরু করে ওখানকার স্থাপত্য-শৈলীর আড়ালে রয়েছে বহু রহস্য। এমনই এক রহস্যময়ী হিন্দু মন্দির তথা প্রাসাদের সন্ধান মিলল মিশরের পাদদেশে। যে মন্দিরে প্রতি নিয়ত ঘটে চলেছে ভৌতিক ক্রিয়া-কলাপ। নীল নদের তীরে মিশরীয় সভ্যতার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক হিন্দু মন্দিরের ইতিহাস। স্থাপত্য তৈরি করেন ১৯১১ সালে বেলজিয়াম থেকে মিশরে আসা মিলিওনেয়ার শিল্পপতি ব্যারন এডওয়ার্ড এমপেইন। চোখ ধাঁধানো ও আকর্ষণীয় এ প্রার্থীর নাম দেন ‘কুয়াসর-ই-ব্যারন’। অর্থাত্ ব্যারন’স প্যালেস।
জানা যায় বেলজিয়ামের মিলিয়নেয়ার ব্যারেন ছিল ভারতীয় হিন্দু ধর্মের প্রতি প্রবল আকর্ষণ। যার কারণে মিশরে কায়রো অঞ্চলে ফরাসি স্থাপত্যবিদ আলেকজান্দ্রে মার্কেলকে দিয়ে অঙ্কোরভাট ও ওড়িশার অদ্ভুত সব মন্দিরের আদলে তৈরি করেন এই প্রাসাদ। কংক্রিটের তৈরি এই প্রাসাদ ছিল সেই সময়কার অ্যাপ আকর্ষণীয় প্রাসাদ। এই হিন্দু মন্দির তথা দোতলা প্রাসাদের গঠন ছিল ভেতরের সিঁড়ি, লিভিং রুম, বেডরুম সহ মন্দিরের এক্কেবারে চুরায় ছিলো টাওয়ার বসানো। পাশাপাশি এই প্রাসাদের অভ্যন্তরের প্রত্যেকটি দেওয়ালে নিখুঁতভাবে স্থাপত্য হিন্দু ধর্মের একাধিক গল্প কাহিনী খোদাই করা ছিল। এমনকি প্রাসাদের প্রতিটি কক্ষে জাতীয় সূর্য পৌঁছাতে পারে সে কারণে নির্মাণ করা হয়েছিল ৩৬০ ডিগ্ৰির আদলে। তবে যে প্রাসাদটির একসময় বিরাট চাহিদা ছিল বর্তমানে এটি পরিত্যক্ত বাড়িতে পরিণত হয়েছে। কারণ অবশ্য ভৌতিক কার্যকলাপ।
এত সুন্দর একটি প্রাসাদ ভৌতিক স্থানে পরিণত হওয়ার পেছনে রয়েছে কিছু কারণ। জানা যায় বেড়ানোর বোন প্রাসাদের ঘূর্ণমান বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল। এরপর থেকেই শুরু হয় বিভিন্ন ভুতুড়ে কান্ড। ট্রেনের মননের মৃত্যুর কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রাসাদের লিফট থেকে উদ্ধার হয় তার মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে মিরিয়মকেটের মৃতদেহ। এমনকি ব্যারেন নিজেও অজ্ঞাত কারণে মৃত্যুবরণ করে ১৯৯২ সালে। এরপরই পরিবারের জলজ্যান্ত সদস্যের মৃত্যু ঘটনায় ভেঙে পড়ে ১৯৫২ সালে মিশর বিপ্লবের সময় কায়রো ছিড়ে লন্ডনে চলে যান তার পরিবার। এরপর দীর্ঘদিন পর প্রায় ১৯৫৭ সালে সৌদি ব্যবসায়ীর কাছে এই প্রাসাদটি বিক্রি করে দেন। এরপর থেকেই ব্যারেনের পরিত্যক্ত প্রাসাদ তালা বন্ধ হয়ে এক পরিতক্ত বাড়িতে পরিণত হয়েছে।