লাইফস্টাইল

গ্রীষ্মের দিনে কতটা জল পান করবেন?

গরমে হাঁসফাঁস পরিস্থিতি বঙ্গবাসীর। পুরো হিটারে ঝলসে যাওয়ার মতো অবস্থা। আর এই পরিস্থিতিতে জলপানের দিকে মন দিন। কতটা জল তাপদাহের সময় না খেলেই নয়? উত্তর দিলেন পুষ্টিবিদ।

তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থা। বাড়ির বাইরে পা রাখলেই সূর্যের রোদ যেন শরীর- মন ঝলসে দিচ্ছে। দেহ থেকে কলের জলের মতো বেরচ্ছে ঘাম। এই পরিস্থিতিতে জল পর্যাপ্ত পরিমাণে না খেলে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন।

এখন প্রশ্ন হল, এই তপ্ত আবহাওয়ায় দিনে কতটা জলপান করা উচিত? 

সেই প্রশ্নের উত্তর দিলেন কলকাতার বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ কোয়েল পাল চৌধুরি।

জল হলো জীবন। জলপান না করলে আমরা বাঁচতেও পারবো না। তবুও অনেকেই জলপান করতে চান না। তাঁরা বারবার জল এড়িয়ে যেতে চান। এমনকী গ্রীষ্মেও তাঁদের জলপানের পরিমাণ অনেকটাই কম থাকে। ফলে জটিল অসুখ পিছনে পড়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই সাবধান হন।

জলপানের পরিমাণ কমিয়ে দিলে শরীরে বহু সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডিহাইড্রেশন থেকে কিডনিতে স্টোন, দেহের তাপমাত্রার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা সহ নানা জটিল অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।

১. কেন জলপান জরুরি?​

কোয়েল পাল চৌধুরি জানালেন, জল আমাদের দেহে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এর কাজের অন্ত নেই। রক্ত তৈরি থেকে শুরু করে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিয়মিত করে জল।

এছাড়া জল আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, হজমে সাহায্য করে, মেটাবলিজম বা বিপাককে ত্বরান্বিত করে, শরীর থেকে খারাপ পদার্থ বের করে দেয় এবং জয়েন্টকে পিচ্ছিল রাখতে সাহায্য করে। তাই জলকে জীবন বলাই যায়। ফলে কিছুটা সময়ান্তরে জলপান করুন। বিশেষত, গরমে জলপান তুলনায় বাড়াতে হবে।

২.গ্রীষ্মের দিনে কতটা জল পান করবেন?

একজন ব্যক্তির কতটা জলপান জরুরি তা তাঁর পেশা, ওজন, উচ্চতা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে। তবে সাধারণ হিসাবে বলা যেতে পারে দিনে ৩ থেকে ৪ লিটার জলপান তো করতেই হবে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী বা পুরুষের এই পরিমাণ জল অবশ্যই পান করা উচিত।

তবেই এই গরমে শরীরকে সুস্থ রাখতে পারবেন। নইলে সমস্যা কয়েকগুণ বাড়তে পারে। এমনকী জলের ঘাটতি থেকে অনেক সময় প্রাণহানীর আশঙ্কাও তৈরি হয়।

৩. বাইরে থাকলে জলপান বাড়ান​

আপনি যদি দিনের বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকেন, তবে জলপানের মাত্রা বাড়াতে হবে। সঙ্গে অবশ্যই জলের বোতল রাখুন। যখনই তৃষ্ণা পাবে জলপান করুন। গলা ও জিভ শুকিয়ে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না। 

বরং তাঁর আগেই জল খেয়ে গলা ভেজান। তাহলেই শরীর সুস্থ খাকবে। এছাড়া খুব গরমে দুপুরের দিকে না বেরনোই মঙ্গল। রোদের তাপ কমলে বাইরে পা ফেলুন। তবে একান্তই বাইরে যেতে হলে টুপি, ছাতা সঙ্গে রাখুন। আর জলের বোতলও সঙ্গে থাকা মাস্ট। আর যাঁরা এসিতে রয়েছেন, তাঁরাও নিয়মিত গলা ভিজিয়ে নিন। এতেই শরীর হাইড্রেট থাকবে।

৪. জলের বিকল্প কী?​

এই সময়ে খেতে পারেন ডাবের জল। এর মাধ্যমে শরীরের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক থাকে। এছাড়া বাড়িতে ফল কিনে এনে জুস করে খেতে পারেন। এতেও ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মিলবে। সঙ্গে তৃষ্ণাও মিটবে। 

তবে বাইরের কাটা ফলের জুস কিনে খাবেন না। এমনকী প্যাকেটবন্দি জুসও খাওয়া চলবে না। এতে আলাদা করে সুগার মেশানো থাকে যা ক্ষতিকর। এছাড়া গ্রীষ্মের দিনে চা, কফি কম পান করুন। এতে লাভের বদলে ক্ষতি হয়।

৫. কাদের জল মেপে খাওয়া উচিত?​

কিডনির অসুখে ভুক্তভোগীদের জলপান করতে হবে মেপে। এই প্রসঙ্গে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। এছাড়া হার্টের বিভিন্ন অসুখেও মেপে জল খেতে হয়। তাই হার্ট ডিজিজে আক্রান্তদেরও জলপান নিয়ে সচেতন হতে বললেন কোয়েল পাল চৌধুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *