বায়ু দূষণের কারনেই বাড়ছে হার্টের সমস্যা
সামুদ্রিক শাস্ত্রে বলা হয়, চোখ লাফালে শুভ বা অশুভ কিছু ঘটতে পারে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন দিল্লি নিবাসী জ্যোতিষী আচার্য অলোক পণ্ডিত।
অনেক সময়ই চোখ লাফিয়ে ওঠে। এটিকে খুব সাধারণ ব্যাপার বলেই মনে হয়। তবে চোখ লাফালেই নাকি শুভ বা অশুভ কিছু ঘটতে পারে। বাড়ির বড়রা অন্তত তেমনই বলেন। কিন্তু সত্যিই কি তাই?
মনে করা হয়, নারীদের ক্ষেত্রে বাঁ চোক লাফানো শুভ। কিন্তু তাঁদের ডান চোখ লাফালে নাকি খারাপ কিছু ঘটতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে বিষয়টি এক নয়। মনে করা হয়, ডান চোখ লাফালে তাঁদের ভালবাসার মানুষের সঙ্গে দেখা হবে। দীর্ঘ দিনের কোনো ইচ্ছা পূরণ হবে। বাঁ চোখ লাফানো নাকি পুরুষদের জন্য মোটেই শুভ নয়। জ্যোতিষশাস্ত্রে বলা হয়, তাঁদের বাঁ চোখ লাফালে নাকি জীবনে খারাপ সময় শুরু হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
বিজ্ঞান যদিও বলে, চোখ আচমকা লাফাতেই পারে। এতে কারও নিয়ন্ত্রণ থাকে না। বারবার চোখ লাফালে, তা স্বাস্থ্যের কোনও সমস্যার ইঙ্গিতও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শুধু খাবার নয় এমনকি বাতাস বা বায়ু দূষণ থেকেও হতে পারে হার্টের অসুখ
আগেকার যুগে যেমন সব জিনিসপত্র নির্ভেজাল ছিল তেমনি বর্তমান যুগে কোন কিছুই নির্ভেজাল পাওয়া প্রায় অসম্ভব বলা চলে।
হার্টের অসুখ সাধারণত হাই লিপিড , হাই ব্লাডপ্রেসার,
অতিরিক্ত মদ্যপান এবং ধূমপানের কারণে হয়ে থাকে।
কিন্তু সম্প্রতি দেখা গেছে যে হার্টের অসুখের পেছনে বায়ু দূষণ একটি কারণ হতে পারে। করোনারি রিস ফ্যাক্টরের মধ্যে বায়ু দূষণকেও তালিকায় যোগ করা হয়েছে।
প্রথমত, প্রথমে জানতে হবে যে বায়ু দূষণ যে হচ্ছে সেটা বুঝবো কি করে?
তাহলে সর্বপ্রথম বলতে হয় বায়ু দূষণ নির্দেশক বলে একটি যন্ত্র আছে যার সাহায্যে আমরা বায়ু যে দূষিত হয়েছে সেটা জানতে পারি।
এই যন্ত্রটি একটি কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের বায়ু দূষণ সম্পর্কে অবগত করতে পারে। যেমন একটি নির্দিষ্ট ঘনত্বের বায়ুর মধ্যে কত মাইক্রো মিলিগ্রামের বায়ু দূষক পদার্থ রয়েছে তা নির্ধারিত করতে সক্ষম এ যন্ত্র।
এই বায়ু দূষক পদার্থ গুলি নির্ভর করে কিছু কিছু গ্যাস এবং কিছু কিছু নির্দিষ্ট কণার উপর। আমরা যে বাতাস নিঃশ্বাস এর মাধ্যমে গ্রহণ করি তার মধ্যে বেশিরভাগ অংশজুড়ে থাকে অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন। এছাড়াও আনুষঙ্গিক কিছু এমন উপাদান থাকে যা সেই বাতাসটিকে অস্বাস্থ্যকর করে তোলে।
বায়ু নির্দেশক যন্ত্রের কাজ হল ওই নির্দিষ্ট জায়গার বাতাসটা কতটা স্বাস্থ্যকর বা অসাস্থ্যকর সেটা নির্ধারণ করা। এই যন্ত্রটি বিশেষত কয়েকটি দূষণকারী পদার্থের উপর নজর রাখে যে তাদের ঘনত্ব কি পরিমাণে বাতাসে উপস্থিত রয়েছে, সেই হিসেবে বিচার করা হয় যে ওই স্থানের বাতাস যা গ্রহণ করা হচ্ছে তা আদৌ স্বাস্থ্যকর নাকি অস্বাস্থ্যকর।
সাধারণত দেখা যায়, এমন কিছু গ্যাস আছে যেমন- ওজোন গ্যাস, সালফার- ডাই- অক্সাইড, কার্বন-মনোক্সাইড, এছাড়াও কিছু ভারী ধাতু আছে যেমন- লেড, বা ধাতুর যে কণা যেমন এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে কোথাও কোনো বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে বা ঘরবাড়ি তৈরি হচ্ছে তো সেখানে এই ধাতুর কণা থাকতেই পারে। সুতরাং এই সমস্ত যে কণা বা গ্যাস এগুলো বায়ু দূষণের মূল কারণ।
এই ধাতব কনাগুলিকে প্রায় ধুলোর সাথে তুলনা করা যেতেই পারে, যেগুলি নিঃশ্বাসের মাধ্যমে আমাদের দেহে প্রবেশ করছে এবং যদি সেই কণাগুলো ১০ মাইক্রোনের নিচে হয়, তাহলে সেগুলি অনায়াসে আমাদের নাকের মধ্যে থেকে প্রবেশ করে আমাদের ফুসফুসের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ২.৫ মাইক্রোনের নিচে যে কণাগুলো আছে সেগুলি শুধুমাত্র যে আমাদের ফুসফুসে প্রবেশ করছে তা নয়, বরং আমাদের যে লাঞ্চ এবং রক্তনালীর মধ্যে যে বাধা সৃষ্টিকারী বস্তু আছে তা ভেদ করেও ভেতরে প্রবেশ করে যেতে পারে।
কিন্তু এই যে ক্ষতিগ্রস্ত কণাগুলি আমাদের নিঃশ্বাসের মাধ্যমে ভেতরে প্রবেশ করছি তার একটা বড় প্রভাব পড়ে আমাদের লাঞ্চের উপর। ২.৫ মাইক্রোনের নিচে অবস্থিত যে কণাগুলি নিঃশ্বাসের মাধ্যমে আমাদের শরীরের ভেতরে প্রবেশ করছে সেগুলি ব্লাড বিসেনের মধ্যে প্রবেশ করে যেতে পারে এবং তখনই সমস্যা গুলির সৃষ্টি হয়।
এই ২.৫ মাইক্রোনের কণাগুলি কার্ডিওলজি অনেক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এবং অবিস্ময়কর ভাবে দেখা যাচ্ছে যে, বায়ু দূষণের কারণে যে মৃত্যু ঘটেছে তার মধ্যে ৫০ শতাংশ মৃত্যু হার্টের সমস্যার জন্য ঘটেছে। এমন অনেক রোগী আছেন যাদের আগের থেকেই হয়তো ব্রংকাইটিস অথবা হাঁপানির মতন রোগ আছে। কিন্তু এই বায়ু দূষণের প্রভাবে তাদের যে মৃত্যু ঘটছে তা তাদের হার্টের সমস্যার কারণেই দেখা যাচ্ছে।