পৃথিবীর কোন দেশে গেলে মানুষ খেকো মাছ দেখতে পাওয়া যায়?
নিউজ ডেস্কঃ বাঙালির পরিচয় মাছের প্রতি ভালোবাসা থেকেই ।বাঙালির পাতে মাছ নেই ?এ হতেই পারে না ।তবে মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় মাছ যে থাকবেই এ আর নতুন কি কিন্তু উল্টোটা যদি বলা হয়? মাছের খাদ্য তালিকায় মানুষ ।ভেবে দেখুন তো ।না ।নিছক মজা নয়! বাস্তবে এমনই একটি মাছের উপস্থিতি কিন্তু রয়েছে সত্যি ই। যার শিকারের তালিকা থেকে মানুষের নাম ও বাদ যায়নি। ভয়ংকর এই মানুষ খেকো মাছটির নাম পিরানহা ।
ভয়ঙ্কর এই মাছটি তার তীব্র আক্রমণাত্মক স্বভাবের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত । হিংস্র এই মাছটির দাঁত ও চোয়াল এতটাই শক্ত যে যেকোন শিকার এরা খুব দ্রুত কামড়ে খেয়ে নিতে পারে। এই মাছ মূলত দক্ষিণ ,উত্তর আমেরিকা ও আফ্রিকার ঘন জঙ্গল ঘেরা জলাশয়গুলোতে দেখা যায় ।এদের আরেক বৈশিষ্ট্য হলো এদের দেহের দুপাশে থাকা শক্ত মাংসপেশি যা এই মাছকে করে তুলেছে আরও হিংস্র ।বৃহৎ চক্ষু যুক্ত এই মাছ এর চোখ এড়িয়ে বেরোনো নেহাত সহজ নয় ।প্রচন্ড ক্ষিপ্রগতি ও দৃষ্টিশক্তির তীব্রতার ফলে এরা শিকারকে খুব সহজেই খুঁজে বার করতে পারে আর একবার শিকার চোখে পড়লে এই মাছের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া প্রায় অসম্ভব । জলের মধ্যে রক্তের সামান্য গন্ধ পেলেও ঝাকে ঝাকে পিরানহা মাছ সেই জায়গায় এসে উপস্থিত হয় আর কোন শিকারের সন্ধান পেলে নিমেষেই সেই শিকার খেয়ে শেষ করে ফেলে তারা ।এমন হিংস্র স্বভাবের জন্যই অনেকেই এই মাছকে রাক্ষুসে মাছ নামেও ডাকে ।
স্বাদু জলের মাছ হলেও এদের বেশ কিছু প্রজাতি লবণাক্ত জলে বাস করে ।কিছু কিছু পিরানহা একুয়ারিয়ামের ছোট পরিবেশেও স্বাচ্ছন্দে থাকতে পারে। হিংস্র এই মাছ ভয়ঙ্কর হলেও দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ায় বেশ কিছু মানুষ এ্যাকুয়ারিয়ামে এই মাছ রাখতে পছন্দ করেন তবে সব প্রজাতির পিরানহা মাছ এ্যাকুয়ারিয়ামে রাখার মত নয় ।এই মাছ প্রায় ১২ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। কমপক্ষে 10 বছর বাঁচে এই মাছ ।
এই পিরানহা মাছ এতটাই ভয়ঙ্কর যে তার হিংস্রতার কথা প্রায়ই খবরের শিরোনামে উঠে আসে ।১৯৮১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ব্রাজিলের একটি স্টিমার অ্যামাজনের কাজ দিয়ে যাচ্ছিল ।৫৩০ জন যাত্রীসহ সেই স্টিমার টি কোন কারণে বন্দরের কাছে এসে হঠাৎই উল্টে যায় গভীর জলে ,।আর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটে তখনই ।জাহাজ উল্টানোর সময় অনেক যাত্রী আঘাত পায় আর সেই রক্তের গন্ধে ঝাকে ঝাকে পিরানা মাছ হাজির হয় সেখানে ।ভয়ংকর সেই মাছের আক্রমণে ৫৩০জন যাত্রীর মধ্যে সেদিন মাত্র ১৮২জন যাত্রী প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরতে পারে ।হিংস্র এই মাছকে নিয়ে পরবর্তীকালে হলিউডে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন সিনেমা ।
এমনকি এখনো দক্ষিণ আমেরিকা নানা অঞ্চলে পিরানা মাছের আক্রমণের কথা প্রায়ই শোনা যায় ।এখনো ওই অঞ্চলে মাছ ধরতে যাওয়া বা নৌকাডুবি হওয়া বহু মানুষ এই আক্রমণের শিকার হয়েছে ।