চীনের এক সন্তান নীতি কি জানেন?
গত শতকের আশীর দশকে চিনে এক সন্তান নীতির চালু হয়েছিল। কিন্তু, আসলে এই এক সন্তান নীতি কি?
আর এতে চীনের সাধারণ মানুষদের কি প্রতিক্রিয়াই বা সৃষ্টি হয়েছিল??
আসলে এক সন্তান নীতি হলো যে কোনো দম্পতি একটি মাত্র সন্তান নিতে করতে পারবেন এবং দ্বিতীয় কোনো সন্তান নিতে পারবেন না। কোনো দম্পতি যদি দ্বিতীয় সন্তান নেন তাহলে তাকে জরিমানা দিতে হবে অথবা তাদের বিরুদ্ধে অন্য কোনো প্রতিক্রিয়া নেওয়া হবে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক কিছু অজানা ঘটনা-
- চীনা মাইক্রোব্লগ উইবোতে এক ব্যক্তি দাবি করেন, তাঁকে জন্ম দেওয়ার পর তাঁর মা জন্মনিরোধ পদ্ধতি গ্রহণ করতে বাধ্য হন। ওই ব্যক্তি ছিলেন দ্বিতীয় সন্তান। এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে তাঁর মা এখনো শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন।
- আরো একটি ঘটনা উঠে আসে অনলাইনের মাধ্যমে। অনলাইনে উঠে আসে ফেঙ্গ জিয়ামির ঘটনাও। ২০১২ সালে এ নারী তাঁর দ্বিতীয়বারের মতো অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন। ওই সময় এক সন্তান নীতি লঙ্ঘন করায় ফেঙ্গ ও তাঁর স্বামীকে জরিমানা করে কর্তৃপক্ষ। জরিমানা না দেওয়ায় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ফেঙ্গকে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানো হয়।
- জিয়া শুয়াই নামের আরেক ব্যক্তি উইবোতে লেখেন, এক সন্তান নীতি ভঙ্গ করে তাঁর জন্ম হওয়ায় ‘অবৈধ শিশু’ হিসেবে তিনি বড় হয়ে উঠেছিলেন। তা–ও গ্রামাঞ্চলে লুকিয়ে। পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তারা যখনই বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোনো বাড়িতে কতজন আছে সেই খোঁজ নিতেন, তখনই তিনি পুকুরে ডুব দিয়ে লুকিয়ে থাকতেন।
কারণ, নীতি ভঙ্গের কারণে জরিমানা দিতে হতো। সেটা পরিশোধ না করলে ঘর খালি করে জিনিসপত্র বা পোষাপ্রাণী নিয়ে যাওয়া হতো।
- নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন দাবি করেন, তাঁর বোনকে এখনো একা থাকতে হচ্ছে। কারণ, তাঁর মা যখন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন, তখন তাঁকে গর্ভপাত ঘটানোর জন্য হাসপাতালে ডাকা হয়। পরে এক চিকিৎসকের দয়ায় তিনি হাসপাতাল থেকে পালাতে সক্ষম হন এবং মেয়ের জন্ম দেন। মেয়েটি অর্থাৎ তার বোনকে লুকিয়ে রাখতে হয়েছিল।
- আরেক উদাহরণ চলচ্চিত্র নির্মাতা ঝ্যাং ইমো ও তাঁর স্ত্রী। ২০১৪ সালে এক সন্তান নীতি ভঙ্গের কারণে তাঁদের ১২ লাখ ডলার জরিমানা গুনতে হয়েছিল।
এক সন্তান নীতির কারণে চীনের অনেক পরিবারকে এমন ধরনের বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। নতুন নীতি গ্রহণের পর চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেসব ঘটনা তুলে ধরছে মানুষ। কেউ কেউ আবার সন্তান নেওয়ার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এক সন্তান নীতির কারণে আর সন্তান নিতে না পারায় তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি তুলেছেন।