অফবিট

আলাস্কাকে কেন বিক্রি করে দিয়েছিল রাশিয়া?

নিউজ ডেস্ক – বর্তমানে সম্পদের খনি হচ্ছে আলাস্কা। এই আলাস্কা একসময় রাশিয়ার অধীনস্থ ছিল। কিন্তু পরে সেটি আমেরিকার হাতে হস্তান্তর করে দিয়েছে রাশিয়ার সরকার। সে সময় সিদ্ধান্ত কি সত্যিই ঠিক ছিল না ভুল!  

১৭২৫ সালে রাশিয়ান জার পিটার দ্য গ্রেট আলাস্কা  উপকূল অনুসন্ধানে ভিতাস বেরিংকে পাঠিয়েছিলেন।  এরপরই ১৭৪১ সালে আলাস্কাকে নিজেদের বলে দাবি করেছিল রাশিয়া। তবে ১৮৬৭ সালে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করেনি রাশিয়া। সেই কারণে ১৭৮৪ সালের ৩রা আগস্ট আলাস্কার বসতি স্থাপন করে উপনিবেশ গড়ে তুলেছিল জারের বাণিক দল। এর মূল কারণ ছিল রাশিয়া-আমেরিকা কোম্পানি। যার হেডকোয়ার্টার ছিল ফোর্ট রস। তবে বাণিজ্যে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হওয়ার কারণে ১৮৪৪ সালে রাশিয়া ফোর্ট রসকে আমেরিকানদের কাছে বিক্রি করে দেয়। এরপরই ১৮৫৬ সালে তিন বছর ব্যাপী চলা ক্রাইমিয়ান যুদ্ধ শেষ হতেই একেবারে হাত শূন্য ছিল রাশিয়ার।  তাই ১৮৫৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়া ৫৭১,৯৫১ বর্গমাইল বরফাবৃত আলাস্কা আমেরিকার কাছে বিক্রি করে দেয়। যদিও সেই সময়ে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত ছিল আমেরিকা। এমনকি রাশিয়া-আমেরিকা হেডকোয়ার্টারও সীমান্তবর্তী আমেরিকানদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল রাশিয়া।  

অন্যদিকে আলাস্কার পাশে অবস্থিত ব্রিটিশ কলম্বিয়ার একটি উপনিবেশ চেয়েছিল আলাস্কাকে নিজের করে নিতে। যদি সেই সময় আলাস্কা দখলের উদ্দেশ্যে রাশিয়ার ওপর ব্রিটিশরা হামলা চালাতো তখন রাশিয়ার নিজের ক্ষমতা ছিলনা হামলা প্রতিরোধ করার। সেক্ষেত্রে রাশিয়ার একমাত্র শত্রু ছিল ব্রিটেন। তাই শত্রুদের হাতে যুদ্ধের মাধ্যমে পরাজিত হয়ে আলাস্কা যাওয়ার আগেই আমেরিকার কাছে স্বদিচ্ছায় বিক্রি করে দিয়েছিল রাশিয়া। মাত্র ৭.২ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ২ সেন্টে বিক্রি করেছিল রাশিয়া। 

পরবর্তীতে আলাস্কাকে কেনার পর আমেরিকা নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করা এবং এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিজের দাপট শক্তিশালী করার বিষয়ে আশাবাদী ছিল। কিন্তু তার আগেই প্রায়ই ৫০ বছর পর যে অর্থ দিয়ে আমেরিকা কিনেছিল তার দশগুণ বেশি ফেরত পেয়েছিল।  কারণ সেই সময় আলাস্কা থেকে উদঘাটিত হয়েছিল সোনার খনি এবং তেলের খনি।  সেই কারণে এই খুনের দৌলতেই আমেরিকা কয়েকশো মিলিয়ন ডলার আয় করেছিল। তাই বর্তমানে তখনকার সময়ে অর্থাভেবের কারণে আলাস্কাকে হাতছাড়া করে দেওয়ায় এখন আক্ষেপ করে রাশিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *