আমেরিকা, ইউক্রেন, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো যে দেশ গুলিতে ভৌতিক কার্যকলাপ রয়েছে। জানুন বিস্তারিত
নিউজ ডেস্ক – পৃথিবীতে রোমাঞ্চকর বিষয় বলতে মূলত ধরা হয় ভৌতিক জিনিসগুলিকে। অর্থাৎ মানুষ যে জিনিস গুলির সম্পর্কে অবগত নয় সেই জিনিস জানতেই তার প্রতি বেশি আকর্ষণ লক্ষ্য করা যায়। ঠিক যেমন কোন ডেঞ্জার রাইড বা হরর প্লেসের দিকে আকৃষ্ট হয় বহু মানুষ। যার কারণে পৃথিবীতে এমন পাঁচটি হরর স্পট রয়েছে যা রীতিমতো লোম খাড়া করে দেয় মানুষের। এ প্রতিবেদনে সেইসকল ভয়ঙ্কর জায়গার বিষয়ে কথা বলা রয়েছে। যার তালিকায় শীর্ষস্থানে রয়েছে অ্যামিউজমেন্ট পার্ক। এটি এতটাই ভৌতিক যে তার উপর বেশ কয়েকটি হরর ফিল্ম তৈরি করেছেন হলিউডের প্রযোজকরা।
১) সিক্স ফ্ল্যাগস, নিউ অর্লিন্স, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র— সবথেকে ভৌতিক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক হিসেবে পরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অর্লিন্সের এই সিক্স ফ্ল্যাগস পার্কটি। জানা যায় ২০০০ সালে শিশু সহ সকলের ভ্রমণ ক্ষেত্র হিসেবে পার্টি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু ২০০৫ সালে ভয়ঙ্কর ক্যাটরিনা ঝড়ের তান্ডবের জেরে ধ্বংস হয়ে যায় পার্ক। তবে পুনরায় চালু করার জন্য কোন কোম্পানি ফান্ড দিতে রাজি হয়নি। যার কারণে বর্তমানে ধ্বংস স্তুপে পরিণত হয়েছে। কিন্তু স্থানীয়দের মতে এই পার্ক থেকে নিঝুম রাতে শিশুদের কান্নার আওয়াজ সহ একাধিক রাইডের আওয়াজ পাওয়া যায়। তাই পার্ক সংলগ্ন এলাকা থেকে দূরত্ব বজায় রেখেই যাতায়াত করে স্থানীয় মানুষেরা।
২)প্রিপায়াত অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, ইউক্রেন— ১৯৮৬ সালের ১লা মে উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল ইউক্রেনের প্রিপায়াত অ্যামিউজমেন্ট পার্কটির। কিন্তু পার্কের উদ্বোধন কর্মসূচি হওয়ার প্রাক্কালে চেরনোবিল তেজস্ক্রিয় পারমাণবিক বিস্ফোরণের কারণে পার্ক সহ তার সংলগ্ন এলাকা ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়। তাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করা শিশুদের আশা আর পূর্ণ হয়নি। অর্থাৎ চিরকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায় পার্কটি। তাই সকলে অনুমান করে শিশুদের দীর্ঘশ্বাসের কারণে বর্তমানে পার্কটিতে ভৌতিক ক্রিয়া-কলাপ ঘটে।
৩) ওকাপো ল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া— ভৌতিক স্তরের তৃতীয় স্থানে রয়েছে এই অ্যামিউজমেন্ট পার্কটি। প্রাথমিক দিকে পার্কটি ভালভাবে চললেও ১৯৯৯ সালে পার্কের রোলার কোস্টার থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় এক শিশুর। শিশু মৃত্যুর ঘটনার পরেই একদিন হঠাৎ করে উধাও হয়ে যায় পার্কের ম্যানেজার। এরপরে দীর্ঘদিন ধরে ওখানে ভয়ঙ্কর ভৌতিক ক্রিয়া-কলাপ সহ্য করেছে স্থানীয়রা। মূলত ২০১১ সাল পর্যন্ত ছিল পার্কটির অস্তিত্ব। যদিও পরবর্তীতে পার্কটির সকল সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়ে গিয়ে সেটি বর্তমানে একটি ভূমি হিসেবে পড়ে রয়েছে।
৪) নারা ড্রিমল্যান্ড, জাপান— মার্কিন মুলুকে ডিজনিল্যান্ড দেখে জনৈক জাপানি কুনিজো মাৎসুও নামের সেই ব্যবসায়ী ডিজনির সঙ্গে দেখাও করেন। কিন্তু পরবর্তীতে সেই ডিজনিল্যান্ড তৈরি করার পরিকল্পনার ব্যাঘাত ঘটে তার। যার কারণে ১৯৬১ সালে মাৎসুও নিজের উদ্যোগে একটি পার্ক তৈরি করেন। তবে পার্কটি ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ভালোভাবে চললেও তখন টোকিও ডিজনিল্যান্ড তৈরি হওয়ায় এই পার্কটি তার নিজস্ব জৌলুসতা হারায়। তাই বেশি দিন না চলে মূলত ২০০৬ সালে বন্ধ হয়ে যায় পার্কটি। পরবর্তীতে এই বন্ধ পার্কে কেন্দ্র করে তৈরি হয় নানান ভৌতিক গল্প।
৫) ডিজনি’জ রিভার কান্ট্রি, বে লেক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র— ডিজনিল্যান্ডের সর্বপ্রথম ওয়াটার পার্ক হিসাবে পরিচিত উপায় ডিজনি রিভার কনট্রি বে লেক নামের পার্কটি। ৯/১১ সাল পর্যন্ত পার্কটি চললেও পরবর্তীতে একটি দুর্ঘটনার কারণে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এই পার্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার করণে ব্যাপক আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কার্যত এই পার্কটিকে ঘিরেও রয়েছে নানান ভৌতিক বদনাম।