৬.৮০ লাখ মোবাইল নাম্বার বন্ধের লক্ষ্য ভারত সরকারের। হটাৎ কেন এমন সিদ্ধান্ত?
সম্প্রতি বিভিন্ন মিডিয়াতে বলা হচ্ছে দেশ জুড়ে বহু ফোন নাম্বার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে এবং এসব কিছুই সরকারের নির্দেশে হচ্ছে। গত সপ্তাহেই একটি প্রতিবেদনে বলা হয় সরকার ৬.৮০ লাখ মোবাইল নাম্বার বন্ধের লক্ষ্য নিয়েছে প্রতারনা রোধ করতে। সরকার ও আইন নির্ধারক সংস্থাগুলির নির্দেশের কারনে ভারতীয় টেলিকম সংস্থাগুলি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কয়েক লাখ ফোন নাম্বার বন্ধ করে দেবে। তবে কোনও সাধারন নাগরিকের ফোন নাম্বার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে না বরং যেসমস্ত ব্যাক্তি সাইবার অপরাধের সাথে যুক্ত। ফোন নাম্বারের মাধ্যমে প্রতারনা করে সেই ধরনের নাম্বার খুঁজে খুঁজে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
সাধারনত একজন ব্যক্তি একটি কী দুটি সিম কার্ড ব্যবহার করে তার মোবাইলে। কিন্তু ভারত সরকারের সাইবার অপরাধের তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। তদন্তে জানা যায় সাইবার অপরাধের চক্র এতটাই বিস্তৃত হয়েছে যে একটি মোবাইল ফোন থেকে ৪০০০ সিম কার্ড পর্যন্ত ব্যবহার করা হচ্ছে অর্থনৈতিক জালিয়াতি সহ একাধিক অপরাধ মূলক কাজের জন্য।
গত ৯ মে টেলিকমিউনিকেশন বিভাগ টেলিকম সংস্থাগুলিকে ২৮,২২০ মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় এবং সন্দেহজনক দুই মিলিয়ন বা কুড়ি লাখ সিম কার্ডকে পুনরায় পর্যবেক্ষনের নির্দেশ দেয়। সাইবার অপরাধের তদন্তে জানা গেছে প্রতারকরা প্রতিদিন বিভিন্ন টেলিকম সংস্থার সিম ব্যবহার করছে এবং নিত্য তারা সিম কার্ড ও মোবাইল পরিবর্তনও করছে যাতে পুলিশ ধরতে না পারে। আবার এক রাজ্য থেকে সিম কিনে অন্য রাজ্যে গিয়ে তার ব্যবহার করছে প্রতারকরা, যেমন ওড়িশা ও আসাম থেকে সিম কিনে তা দিল্লি এনসিআরে ব্যবহার করা হচ্ছে। অফিসারদের কথায় প্রতারকরা একটি সিম থেকে কয়েকটি ফোন করার পর তারা সেই সিম নষ্ট করে দিচ্ছে যাতে তাদের ধরা না যায়। সাইবার অপরাধ প্রতিরোধের জন্য টেলিকমিউনিকেশন বিভাগ, সরাষ্ট্র মন্ত্রক, সমস্ত রাজ্য পুলিশ প্রতারকদের সমস্ত মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিচ্ছে একে একে।
সম্প্রতি সরকার যে দুই মিলিয়ন সিম কার্ডের পুনরায় পর্যবেক্ষনের নির্দেশ দিয়েছিল তার মধ্যে দশ শতাংশ সিম সঠিক বলে দেখা গেছে, বাকী নব্বই শতাংশ সিম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অর্থাৎ এর থেকে বোঝা যাচ্ছে সাইবার প্রতারকদের চক্র কত গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত।
সম্প্রতি সরকার ৬.৮ লাখ সন্দেহজনক মোবাইল সংযোগ পুনরায় যাচাইকরনের নির্দেশ দিয়েছে। সরকার এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে প্রতারনা চক্র রোধের জন্য। গত এক বছরে দেশে ১৭ লাখ মোবাইল সংযোগ এবং ১,৮৬,০০০ মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী প্রতিরোধে জন্য কয়েকমাস আগে ভারত সরকার ডিজিটাল ইনটেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম বা ডিআইপি লঞ্চ করে। এখানে সমস্ত বিভাগে সাইবার অপরাধের তথ্য রয়েছে যাতে তদন্তে সুবিধা হয়। ১৯৫১ সালের ইন্ডিয়ান টেলিগ্রাফ ভায়োলেশন আইন অনুযায়ী সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। ইতিমধ্যেই সমস্ত টেলিকম সংস্থাকে তাদের নেটওয়ার্কে জালিয়াতি প্রতিরোধ ব্যবস্থা ইনস্টলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে যে কোনও সন্দেহজনক গতিবিধির খবর জানা যায়।