ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কেন মহাবীর কর্ণের শেষ কাজ নিজের হাতে করেছিলেন?
নিউজ ডেস্কঃ মহাভারতের এমন এক চরিত্র যাকে নিয়ে আলোচনা , সমালোচনা হওয়ার পাশাপাশি রয়েছে বেশ কিছু প্রশ্ন। তবে তিনি যে ধনুর্বিদ্যায় কোনও অংশে অর্জুনের থেকে কম ছিলেন না তা বলাই বাহুল্য। বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধনুর্বিদ ছিলেন এই কর্ণ। তবে তার জন্ম ও মৃত্যু যে বাকিদের মতো হয়নি তা কমবেশি সকলেরই জানা।
উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার কর্ণপ্রয়াগ। অলকানন্দা নদীর পঞ্চপ্রয়াগের অন্যতম এই কর্ণপ্রয়াগ। অলকানন্দা ও পিণ্ডার নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত। আর এখানেই নাকি মহাভারতের মহাবীর কর্ণের শেষকৃত্য করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ।
অলকানন্দার পাঁচ প্রয়াগ হল বিষ্ণুপ্রয়াগ, নন্দপ্রয়াগ, কর্ণপ্রয়াগ, রুদ্রপ্রয়াগ এবং দেবপ্রয়াগ। হিন্দু ধর্মমত অনুযায়ী এই পঞ্চপ্রয়াগ পবিত্র তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। মহাভারত অনুযায়ী, এখানেই সূর্যের উপাসনা করতেন মহাবীর কর্ণ।
এছাড়াও কর্ণপ্রয়াগ নিয়ে আরও একাধিক কথা প্রচলিত আছে। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ চলাকালীন অর্জুন কোনও ভাবেই কর্ণকে হত্যা করতে পারছিলেন না। তাঁর কোনও বাণই কর্ণের গায়ে লাগছি না। তখন কৃষ্ণ বলেন যে কর্ণ সারাজীবন এত দান-ধ্যান করেছেন যে তাঁকে রক্ষা করছেন খোদ ধর্মের দেবতা। এই পূণ্যফল কর্ণের কাছ থেকে নিয়ে না নিলে তাঁকে হত্যা করা যাবে না।
তখন কৃষ্ণ নিজে এক ব্রাহ্মণ সেজে কর্ণের কাছে তাঁর যাবতীয় পূণ্যফল প্রার্থনা করেন। ওই ব্রাহ্মণ যে আসলে কৃষ্ণ এবং তাঁকে হত্যা করার জন্যই তাঁর কাছ থেকে পূণ্যফল চাইতে এসেছেন, এই সব কথা বুঝতে পেরেও ভিক্ষাপ্রার্থীকে খালি হাতে ফেরান না কর্ণ। তিনি ব্রাহ্মণ-রূপী কৃষ্ণকে তাঁর সব পূণ্যফল দান করেন। এর পরিবর্তে কৃষ্ণ তাঁকে বিশ্বরূপ দর্শন করান। কর্ণ কৃষ্ণের কাছে আবেদন করেন, যাতে তিনি নিজে হতে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। সেই মতো অর্জুনের বাণে নিরস্ত্র কর্ণের হত্যার পরে কর্ণপ্রয়াগে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন শ্রীকৃষ্ণ।