স্বামীর পচা লাশ নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন যে রানী
রাজ পরিবার মানেই একটি কয়েনের দুটি পিঠ থাকে। কারণ রাজ পরিবারের সদস্যদের সামনে থেকে যেমন দেখতে মনে হয় তারা ভিতরে থাকে অন্যরকম, এমনকি অনেক রাজ পরিবারের গহীনে লুকিয়ে থাকে একাধিক রহস্য। এছাড়াও রাজ পরিবারের নিয়ম কানুন থাকে সকলের থেকে আলাদা। কারণ রাজ রাজাদের অর্থ এবং ঐশ্বর্য সর্বদাই উঁচুতে থাকে। সেরকমই আজকের প্রতিবেদনে এমন কয়েকটি রাজা-রানীর গল্প তুলে ধরা হয়েছে যাদের কর্মকান্ড শুনলে আশ্চর্য হবেন আপনিও।
I) সিংহাসনে অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ করেছিলেন ফ্রান্সের রাজা চতুর্দশ লুই :- রাজা রাজারাএমন অনেক ঘটনা ঘটাতো যেটা প্রজাদের কাছে ছিল আশ্চর্যজনক ও অবিশ্বাস্যকর। সেরকমই এক আশ্চর্যজনক ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল ফ্রান্স। কারণ সেই সময়ে ফ্রান্সের রাজা চতুর্দশ লুই নিজের সিংহাসনে নির্মাণ করেছিলেন একটি অস্থায়ী টয়লেট। সেই টয়লেট তিনি রীতিমতো ব্যবহারও করতেন। এছাড়াও রাজা এতটাই অপরিষ্কার ছিল যে নিজের জীবনে মাত্র তিন বার তিনি স্নান করেছেন। রাজার এই অপরিষ্কারের কারণে রাজপ্রাসাদে এক বিদঘুটে গন্ধ থাকতো। একসময় সেই গন্ধ সহ্য করতে না পেরে রাজপ্রাসাদ একে একে ত্যাগ করেছিলেন সেখানকার দাস-দাসীরা। যদিও রাজা নিজের দুর্গন্ধ ঢাকতে প্রাসাদে সুগন্ধি ফুল এমনকি নিজের জামা কাপড়েও তখনকার দিনের বিখ্যাত সুগন্ধি আতর ছড়িয়ে রাখতেন যাতে দুর্গন্ধ ঢেকে যায়।
II) একটানা পাঁচ মাস নিজেকে মূর্তির ন্যায় এক জায়গায় বসিয়ে রেখেছিলেন ষষ্ঠ চার্লস – আরেকটি অবাস্ত ভাবনা চিন্তার প্রকাশ ঘটেছিল ফরাসিতে। কারণ সেই সময়কার ফরাসির ষষ্ঠ রাজা চার্লস নিজেকে কাচের পুতুল মনে করতেন। যদিও এই রাজা মানুষিক দিক থেকে চঞ্চল ছিল বলেই দাবি করেছিল প্রজারা। যার কারণে তিনি দীর্ঘ পাঁচ মাস এক জায়গায় বসেছিলেন। তিমি মনে করতেন তার শরীর কাচ দিয়ে তৈরি তাই কারো সঙ্গে ধাক্কা লাগলে তিনি টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারেন। তাই পাঁচ মাস নাই তিনি স্নান করেছেন আর নাই বদলেছিলেন নিজের পরিধান।
III) অতিরিক্ত আহারের ফলে মৃত্যু ঘটেছিল রাজা অ্যাডলফ ফ্রেডরিকের :- সুইডিশ রাজা অ্যাডলফ ফ্রেডরিক ছিলেন ভোজন রসিক মানুষ। তিনি খেতে খুব ভালবাসতেন। সেই সময়ে সেমলা ক্রিম রোল নামে একটি স্থানীয় মিষ্টির প্রতি আসক্ত ছিলেন তিনি। তাই একবার, ক্যাভিয়ার, গলদা চিংড়ি এবং বিভিন্ন সামুদ্রিক খাবার ভোজনের পরে, রাজা এক সাথে এক ডজনেরও বেশি ‘সেমলা’ খেয়ে ফেলেছিলেন। সেই কারণেই বিপুল পরিমাণ খাবার রাজা আর হজম করতে না পেরে প্রথমে পেট খারাপ শুরু হয়েছিল তার। সময় বাড়ার সাথে সাথে অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে। একটা সময়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
IV) ক্যাস্টিল রাজ্যের রাণী হুয়ান্না সবসময় তার স্বামীর পচা লাশ নিয়ে ঘুরতেন – রাজ রাজাদের আমলে প্রেম বিবাহ খুব কমই দেখা যেত। যার কারণে রাজনৈতিক কৌশলের শিকার হতে হত তখনকার যুগের রাজকুমারীদের। সেরকম এক রাজনৈতিক সম্পর্কের শিকার হয়েছিলেন ক্যাস্টিল রাজ্যের রাণী হুয়ান্না। বিবাহ বন্ধনে রানী হুয়ান্না আবদ্ধ হলেও তিনি তার স্বামীকে ভালবাসতেন না। অথচ লোকের সামনে মিথ্যে ভালোবাসার জাহির করে গিয়েছেন বহু বছর। একটা স্বামী মৃত্যুর ঘটনা এক বছর ধরে তার সঙ্গে রেখেছিলেন হুয়ান্না। মৃতদেহ পচন ধরলেও তিনি কাউকে সেই দেহে হাত দিয়ে দিতেন না। তিনি সকল দাসীদের নির্দেশ দিয়ে রেখেছিলেন রাজার ঘুম যেন কেউ নষ্ট না করে এবং রাজাকে যাতে সকলে সম্মান করে। এমনকি তিনি তার প্রিয়তমাকে ‘দ্যা হ্যান্ডসাম’ ডাকনাম দিয়েছিলেন।