নিজের কন্যাকে নদীতে ফেলে দেওয়ার পেছনে কি কারন ছিল এই সুন্দরী অপ্সরার?
নিউজ ডেস্কঃ ঋষি বিশ্বামিত্র এবং মেনুকার প্রেম কাহিনীর কথা আমরা বলতে গেলে সবাই জানি।কিন্তু এই প্রেমটি ছিল একটি ছলনা। হ্যাঁ ঠিকই শুনছে মেনুকা ঋষি বিশ্বামিত্রের সাথে ছলনা করে তাকে তার প্রেমে ফেলেছিল। তবে সেই ছলের পরিকল্পনা করেছিলেন স্বয়ং দেবতা। আপনারা কি জানেন যে কে সেই দেবতা এবং কেনই বা এই ছলনা পরিকল্পনা করতে হয়েছিল? এবং ঋষি বিশ্বামিত্রের সাথে এমন ছলনা করার পরিনতি কি হয়েছিল?
ঋষি বিশ্বামিত্র জঙ্গলে ঘোর তপস্যায় মগ্ন শরীর থেকে তেজ নির্গত হচ্ছিল এবং তিনি স্থির হয়ে ধ্যানে মগ্ন ছিলেন। দেবরাজ ইন্দ্র ঋষির এই ধ্যান মগ্ন দেখে চিন্তিত হয়ে পড়লেন এবং তিনি ভাবলেন তার অস্তিত্বের পথে হয়তো তিনি অর্থাৎ বিশ্বমিত্র বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেন। এই কারণে ইন্দ্র বিশ্বামিত্রের কঠোর তপস্যা ভঙ্গ করার জন্য মেনুকা নামক অপ্সরাকে পাঠায়। মেনুকা ছিলেন ইন্দ্রের রাজ্যসভার সব থেকে সুন্দরী অপ্সরা।
ইন্দ্রের এই প্রস্তাব শুনে প্রথমে তেজস্বী বিশ্বমিত্রের কাছে মেনুকা যেতে রাজি হননি কিন্তু ইন্দ্রের আদেশে তাকে শেষ পর্যন্ত বিশ্বামিত্রের কাছে যেতেই হয়। তবে যাওয়ার আগে মেনুকা ইন্দ্রের কাছে বর প্রার্থনা করেন যেন বিশ্বমিত্রের ক্রোধ যেন তাকে দগ্ধ করতে না পারে। এরপর মেনুকার অনুরোধে তাকে সাহায্য করার জন্য বায়ুর সাথে যায়। এরপর মেনুকা মর্তলোকে আসে এবং তপস্যারত বিশ্বমিত্রের সামনে গিয়ে ক্রীড়া-কৌতুক শুরু করেন কিন্তু বিশ্বমিত্র শরীরে কোনো রকম পরিবর্তন দেখা যায় না। তিনি যে মনোযোগ সহকারে ধ্যান করছিলেন সেই মনোযোগ সহকারে তিনি ধ্যান করতে থাকলেন।
মেনুকা হার মানলেন না তিনি চেষ্টা চালিয়ে যেতে লাগলেন এরপর আস্তে আস্তে বিশ্বামিত্র মেনুকার প্রতি আকর্ষিত হয়ে পড়ে। ঠিক এই সময়ে মেনুকার বস্ত্র নিয়ে পালিয়ে যান বায়ু। বিশ্বমিত্র তাকে দেখে মুগ্ধ হন এবং মেনুকার সঙ্গে মিলিত হন। কিছুদিন পর মেনুকা গর্ভবতী হলে। মেনুকা হিমালয়ের পাদদেশে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন এবং সদ্যোজাত কন্যাকে মালিনী নদীর তীরে নিক্ষেপ করে তিনি আবার দেবরাজ ইন্দ্রের সভায় প্রস্থান করেন। এবং সেইসঙ্গে বিশ্বমিত্রের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়। সেই সময়ে কিছু শকুন মালিনী নদীতে ফেলে দেওয়া সেই কন্যাকে রক্ষা করে। এরপর কর্ণ মুনির শকুন পাখি পরিবেষ্টিত অবস্থায় সেই কন্যাকে পেয়ে আশ্রমে নিয়ে আসেন। শকুন পাখি দ্বারা রক্ষিত হয়েছিল বলে তিনি কন্যার নাম রাখেন শকুন্তলা।