মাংস, হোমিওপ্যাথি ওষুধ ছাড়া আর কোন জিনিস গুলি ভারতবর্ষ রপ্তানি করে বিদেশে?
নিউজ ডেস্ক – আদিম যুগ পার করে যখন মানুষ সভ্যতা কি বুঝতে শিখলো তখন থেকে আমদানি ও রপ্তানির মাধ্যমে বাণিজ্য শুরু করেছে মধ্যযুগীয় মানুষেরা। তবে আমদানি-রপ্তানি করলেও শুধুমাত্র ভারত এমন বেশ কিছু জিনিস রপ্তানি করে যেটা অন্যান্য দেশে পাওয়া খুবই দুষ্কর। আর সে কারণেই এইসকল দ্রব্যমূল্যের জন্য রপ্তানির তালিকায় সর্বপ্রথম রয়েছে ভারতের নাম। সেই দ্রব্যমূল্য গুলো হলো –
•মশলাপাতি – ভারতের রপ্তানি দ্রব্যের মধ্যে অন্যতম ও সর্বশ্রেষ্ঠ হলো মশলা। কারণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষ বসবাস করে। সে কারণেই মানুষের খাওয়ার পদ্ধতি বিভিন্ন রকম হয়। তাই আমিষ হোক সব কিংবা নিরামিষ সব সাধারন খাদ্যকে সুস্বাদু করে তুলতে পারে একমাত্র মশলা। হরেক রকমের মশলাপাতির ব্যবহার রয়েছে এই দেশে।
• মূল্যবান পাথর,জহরত, রত্ন – রাজা রাজাদের আমল থেকেই ভারতবর্ষের অন্যতম মূল্যবান সম্পদ ছিল পাথর, জহরত, রত্ন, গহনা ইত্যাদি। এই অমূল্য সম্পদ লুট করার জন্যই দীর্ঘ কয়েক বছর ভারতে শাসন করে গিয়েছে ইংরেজরা। কিন্তু সেই সম্পদ ভান্ডার এখনো শূন্য করার ক্ষমতা হয়নি কারোর। আর তাই বর্তমানেও এইসকল জিনিসের জন্য অন্যতম প্রাধান্য পায় ভারত।
•দুগ্ধজাত পণ্য – ভারতের অন্যান্য অমূল্য সম্পদের মধ্যে অন্যতম হলো দুগ্ধজাত পণ্য ঘি, মাখন, ছানা, দই, দুধ ইত্যাদি। এদেশে দুধ সহজে পাওয়া যায় বলে এখানে এত ধরনের মিষ্টি তৈরি হয় যে গোটা পৃথিবীতে বিরল। সেই কারণে অন্যান্য দেশে দুধের চাহিদা বেশি থাকলেও যোগান কম থাকায় ভারত থেকে রপ্তানি হয় দুধ। বেশিরভাগ পাশ্চাত্য দেশ তথা বিশেষ করে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ভারত থেকে অধিক রপ্তানি হয় দুধ। তাই বাংলায় অতিথি আপ্যায়নের জন্য অন্যান্য খাবারের বদলে ব্যবহার করা হয় শুধুমাত্র মিষ্টি।
•পেট্রোপণ্য – পেট্রোপণ্য হলো ভারতের সর্বাধিক রপ্তানিকৃত পণ্যগুলির মধ্যে অন্যতম । পণ্যগুলির মধ্যে রয়েছে কাঠকয়লা , মোম , কয়লা , কোক ইত্যাদি । এই পেট্রোপণ্যের চাহিদা তুঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল , ভুটানের মতো ছোট উন্নয়নশীল দেশগুলিতে। আর এই সকল দেশের চাহিদা মেটাতে কিছুটা অংশীদার ভারত।
•হোমিওপ্যাথি ঔষধ – চিকিৎসা ক্ষেত্রে দুধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়। প্রথম হোমিওপ্যাথিক ও দ্বিতীয় অ্যালোপ্যাথি। গুরুতর রোগের ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে মানুষ অ্যালোপ্যাথি ব্যবহার করলেও সামান্য অসুখে অনেকে হোমিওপ্যাথিকে বেছে নেয়। কারণ হোমিওপ্যাথির কোন সাইডএফেক্ট থাকেনা। ভারতের রপ্তানিকৃত সবচেয়ে মুনাফা যুক্ত পণ্যের মধ্যে অন্যতম এটি। ২০১৪ সালে ভারতের দ্বারা পশ্চিমা বিশ্বে হোমিওপ্যাথি ঔষধ রপ্তানি ছিল চোখে পরার মতো ।
•মাংস – মাংস কে না খায়। বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশ এই মাংসের চাহিদা তুঙ্গে। তবেই ভারত থেকে বিশাল পরিমাণে মহিষ ও শুকরের মাংস বেশি রপ্তানি হয়ে থাকে। এছাড়াও ভারত নদীমাতৃক দেশ হওয়ার কারণে এখানে বিভিন্ন প্রজাতির সুস্বাদু ও সামুদ্রিক মাছের অপার ভান্ডার রয়েছে। তাই এই দেশে রপ্তানিও বিশাল পরিমাণ হয়।
•ঐতিহ্যগত হস্তশিল্প – শুধুমাত্র রপ্তানির জন্য নয় শিল্পকলার ক্ষেত্রে হাতের কাজের জন্য বিখ্যাত ভারত। হাতে বানানো জিনিসের জন্যেই বিভিন্ন দেশে শীর্ষে রয়েছে ভারত। ভারতীয় মুদ্রায় হস্তশিল্পের জিনিস খুব সহজেই পাওয়া যায়। সে কারণেই এই পণ্যগুলি ভারতে রপ্তানিকৃত পণ্যগুলির মধ্যে সেরা। এই শিল্পের জন্য প্রয়োজন খুবই অল্প বিনিয়োগ এবং স্থানীয় শিল্পীদের সাথে যোগাযোগ
•চামড়া ও চামড়া দিয়ে তৈরি পণ্য – চামড়া ও তার দ্বারা তৈরি পণ্য সর্বদাই ভারতের সবথেকে বেশি রপ্তানি পণ্য গুলির মধ্যে একটি ছিল । চামড়া দিয়ে তৈরি জুতো, মানিব্যাগ, গায়ে পরার কোর্ট ইত্যাদির চাহিদা রয়েছে বিপুল পরিমাণে । এই পণ্য রপ্তানির সমগ্র পরিমাণের ৩৬ শতাংশ যায় ইউনাইটেড কিংডম, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিতে ।
•টেক্সটাইল পণ্য – টেক্সটাইল শিল্প ভারতের বিশাল পরিমাণ মানুষের কর্মসংস্থান । এই পণ্যের বিশাল চাহিদা দেখা যায় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দেশগুলিতে । তবে ভারতবর্ষে পাটের সর্বাধিক পণ্য রপ্তানিকৃত দেশ ।
•অন্যান্য – ভোটে ব্যবহৃত কালি, নিম, জৈব রাসায়নিক, ফার্মাসিউটিক্যালস, লোহা-ইস্পাত ইত্যাদি পণ্য রপ্তানিতে অন্যতম ভারত।