অফবিট

মহাভারতের যুদ্ধ মাত্র ১ মিনিটেই শেষ করে দিতে পারতেন ভীমের নাতি। জানুন বিস্তারিত

নিউজ ডেস্ক: মহাভারতে এমন অনেক চরিত্র আছে যাদের মুখ্য চরিত্র হিসেবে না দেখানো হলেও তাদের ক্ষমতা কিন্তু মুখ্য চরিত্রে থেকে কোনো অংশে কম নয়। উল্টে বলা যেতে পারে যে তাদের ক্ষমতা হয়তো মুখ্য চরিত্রে থেকেও বেশি।  আর তারই প্রমাণ পাওয়া যায় মহাভারত থেকেই। কারণ শ্রীকৃষ্ণ যুদ্ধ শুরুর আগে সবাইকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে তাদের একা যুদ্ধ শেষ করতে কত সময় লাগবে। তখন ভীষ্ম উত্তর দিয়েছিল তার 20 দিন সময় লাগবে। দ্রোণাচার্য বলেছেন তার 25 দিন সময় নেবে। এভাবে কর্ণ বলেছিলেন 24 ঘন্টা  এবং অর্জুন বলেছিল যে তার 28 দিন সময় লাগবে।কিন্তু এই বিশেষ চরিত্রটিকে যখন এই প্রশ্ন করে তখন সে উত্তর দেয় যে তার মাত্র 1 মিনিট সময় লাগবে।তাহলে বোঝায় যাচ্ছে যে এই চরিত্রটি কত শক্তিশালী। এবার নিশ্চয় মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগছে যে কে এই ব্যক্তি? 

এই ব্যক্তি আর কেউ নয় ভীমের নাতি এবং ঘটোটকাচার পুত্র বারবারিক।যার ক্ষমতার সামনে বড়ো বড়ো বীরযোদ্ধারাও হার মেনে যাবে। বারবারিকের প্রতিভাতে সন্তুষ্ট হয়ে ভগবান শিব তাঁকে তিনটি বিশেষ তীর প্রদান করেছিলেন।এছাড়াও তিনি  অগ্নিদেবের  একটি বিশেষ ধনুকও পেয়েছিলেন।তাই তার ক্ষমতাও ছিল অসীম। তার এই সহশক্তিরই পরীক্ষা করেছিলেন স্বযং শ্রীকৃষ্ণ।

বারবারিক যখন যুদ্ধক্ষেত্র পরিদর্শন করার উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন।তখন বারবারিকের শক্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শ্রীকৃষ্ণ নিজে ব্রাহ্মনের ছদ্মবেশে বার্বারিকের সামনে এসে জিজ্ঞাসা করেন যে তিনি যদি একাই লড়াই করেন তবে কত দিন লাগবে তার যুদ্ধ শেষ করতে । বারবারিক উত্তর দেন যে, যদি তিনি একাই লড়াই করেন তবে যুদ্ধ শেষ করতে তার কেবল 1 মিনিট সময় লাগবে। বার্বারিক মাত্র ৩ টি তীর এবং একটি ধনুক নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে এগিয়ে চলেছে এই বিষয় বিবেচনা করে কৃষ্ণা বার্বারিকের এই জবাব দেখে অবাক হয়ে গেলেন। বারবারিকের এই 3টি তীরের শক্তির প্রমাণ পেয়েছিলেন যখন কৃষ্ণ বার্বারিককের পরীক্ষা নিয়েছিলেন।তিনি বার্বারিককে বলেছিলেন যে গাছের নীচে দাঁড়িয়ে রয়েছে তার সমস্ত পাতা বেঁধে রাখতে । বার্বারিক এই কাজটি করার জন্য ধ্যান করা শুরু করে আর তখনই  কৃষ্ণ তাঁর পায়ের নীচে গাছ থেকে একটি পাতা নিয়ে বারবারিকের অজান্তেই  রাখেন। বার্বারিক যখন প্রথম তীর ছেড়ে দেয় তখন তীরটি গাছ থেকে সমস্ত পাতাগুলি চিহ্নিত করে এবং অবশেষে শ্রীকৃষ্ণের পায়ের চারদিকে ঘোরা শুরু করে। কৃষ্ণ তখন প্রশ্ন করে বার্বারিককে যে কেন তীরটি এইভাবে তার পায়ের চারদিকে ঘুরছে। বার্বারিক উত্তর দেয় যে ওই গাছের একটি পাতা  তার পায়ের নীচে আছে এবং কৃষ্ণকে তার পা তুলতে বললেন। কৃষ্ণ তার পা উঠার সাথে সাথে তীরটি এগিয়ে গিয়ে বাকী পাতাটিও চিহ্নিত করে।

এর থেকেই কৃষ্ণ বার্বারিক এবং তার ওই  তীরগুলির অসাধারণ শক্তি সম্পর্কে অবগত হন এবং ভীত হন।কারন বার্বারিক তার মাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি যে পক্ষ দুর্বল সেই পক্ষে যোগ দেবেন। তাই পাণ্ডবদের বিপক্ষে হয়ে যদি বার্বারিক যুদ্ধ করে তবে পাণ্ডবদের পরাজয় নিশ্চিত।এই জন্য ব্রাহ্মণের বেশে থাকা কৃষ্ণ বার্বারিক মাথা তার সুদর্শন চক্র দিয়ে ছেদ করে।তবে তখনই তার মৃত্যু হয় নি।কারন তার ইচ্ছে ছিল কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ সম্পূর্ন দেখার।আর তার ওই কাটা মস্তক সম্পূর্ন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ দেখেছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *