ভোট গণনার আগেই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন নির্বাচন কমিশনের!
রাত পোহালেই ভোটগননা শুরু হয়ে যাবে। গত ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লোকসভা নির্বাচনে কে জিতবে তা কালই জানা যাবে। সব এক্সিট পোলের সমীক্ষাই বলছে আগামীকাল ২০১৯ সালের থেকেও বেশী আসন নিয়ে পুনরায় আরও একবার এনডিএ সরকার গঠন করতে চলেছে। তবে ভোট গননার আগে রাজ্যের প্রতিটি গননা কেন্দ্র রক্ষায় কেন্দ্রীয় পুলিশ ও রাজ্য পুলিশ বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করেছে।
আগামীকাল সারা দেশে ৫৪৩টি আসনে ভোটপ্রার্থীদের ভাগ্য পরীক্ষা হবে যার মধ্যে রাজ্যে ৪২টি আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৫০৭ জন প্রার্থীর ভাগ্যপরীক্ষা হবে। ভোট গননাকে কেন্দ্র করে বিজেপি ও ইন্ডিজোটের প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই সুষ্ঠ ভাবে ভোট গননার জন্য নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে। তবে এবারে পশ্চিমবঙ্গের ভোট গননার দিকে বিশেষ নজর থাকবে। ২০২১ সালে তৃনমূল কংগ্রেসের হয়ে কাজ করা প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাক সংগঠনের বিরুদ্ধে ভোটে কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল। সেজন্য এবার আগে থেকেই নির্বাচন কমিশন বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেছে। ভোট গননা কেন্দ্রের চতুর্দিকে ২০০ মিটার পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে এবার। গননা কর্মীরা তাদের নির্দিষ্ট টেবিল ছাড়া অন্য টেবিলেও যেতে পারবেনা। গননা কর্মীরা মোবাইল ফোনও ব্যবহার করতে পারবেন গননার সময়। এবারের ভোট গননাকেন্দ্রে গ্রুপ ডি কর্মীদের পাঠানো হবেনা বরং আপার ডিভিশন ক্লার্ক সহ উচ্চপদস্থ সরকারি অফিসাররাই গননা কর্মী হিসাবে উপস্থিত থাকবে।
ইতিমধ্যেই বিজেপির বেশ কয়েকজন নেতা তৃনমূল কংগ্রেস ও আইপ্যাকের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনেছে। সপ্তম দফা ভোটের আগেই তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কোলাঘাটের স্ট্রংরুমে শাসকদল ও আইপ্যাকের বিরুদ্ধে ইভিএম কারচুপির চেষ্টা করার অভিযোগ করেন। এছাড়াও হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় সহ বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ এবং ব্যারাকপুরে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংও আইপ্যাকের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ করেছে। রাজ্যের সব গননা কেন্দ্রেই পুলিশ পাহাড়ার পাশপাশি বিজেপি কর্মী সমর্থকরাও আইপ্যাককে আটকাতে প্রস্তত রয়েছে।
বিভিন্ন সমীক্ষায় বলা হচ্ছে সুষ্ঠ ভাবে গননা হলে এবারে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে অন্তত ৩০টি আসন পাবে এবং তৃনমূল কংগ্রেস ৩ থেকে ১২টি আসন পাবে। এমনকী বিজেপির এমন বেশ কিছু আসনে জেতার সম্ভবনা আছে যেখানে এক্সিট পোলেও বিজেপি পিছিয়ে রয়েছে এরকমই একটি কেন্দ্র হচ্ছে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র। সন্দেশখালিতে শাসকদলের কিছু নেতার কারনে মহিলাদের উপর হওয়া অত্যাচারের ঘটনায় সংবাদের শিরোনামে আসে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র। এখানে তৃনমূল কংগ্রেস প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম ও বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের মধ্যে নির্বাচনী লড়াই হচ্ছে। এক্সিট পোলে হাজি নুরুল ইসলামকে এগিয়ে রাখা হলেও কিছু সমীক্ষা বলছে ভালো ভোটের ব্যবধানে এখানে বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র জিতবে। বাম জামানা থেকে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র নিয়ে বলা প্রচার করা হয়েছে এখানে মুসলিম ভোটের আধিক্য রয়েছে যার জন্য স্বাভাবিক ভাবেই তৃনমূল কংগ্রেসই বসিরহাটে জিতবে একথা প্রায় সব মিডিয়াতেই দেখানো হচ্ছে কিন্তু বাস্তবে বসিরহাটে মুসলিম ভোটের তুলনায় ১,৮৩,০০০ হিন্দু ভোট রয়েছে যা এতদিন সেভাবে জানানোই হয়নি। তবে এক্সিট পোল ও সমীক্ষা যাই বলুক না কেন আগামীকাল নির্বাচনী গননাতেই প্রকৃত তথ্য প্রকাশ হবে।