অফবিট

যাদবপুরে বাতিল শুভেন্দু অধিকারীর সভা, তবে কী বিজেপিকে ভয় পাচ্ছে শাসকদল!

আগামী পরশু শেষ দফার লোকসভা নির্বাচন হবে দেশজুড়ে। আগামী ১ জুন রাজ্যের নয়টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট হতে চলেছে। এই নয়টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে যাদবপুরের ভোটে সবচেয়ে চমক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাকী সব কেন্দ্রে তৃনমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হলেও যাদবপুরে তৃনমূল কংগ্রেস, বিজেপির পাশাপাশি সিপিআইএমও রয়েছে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে যাদবপুরে শাসকদল তৃনমূল কংগ্রেস প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী ৬,৮৮,৪৭২টি ভোট পেয়েছিল, বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরা ৩,৯৩,২৩৩টি ভোট এবং সিপিআইএম প্রার্থী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য ৩,০২,২৬৪টি ভোট পেয়েছিল। সুতরাং এবারের মতোন ২০১৯ সালেও যাদবপুরে ত্রিমুখী লড়াই হয়েছিল।

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বিগত কয়েকবছর ধরে বামেরা শূন্য হয়ে গেলেও যাদবপুরে বরাবরই বামেদের একটি বড় ভোট ব্যাংক রয়েছে। তবে এবারে ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজেপি অনেকবেশী শক্তিশালী হয়েছে যাদবপুরে। বিজেপি প্রার্থীর প্রতিটি জনসভায় উপছে পড়া মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে বিজেপির একাধিক প্রথমসারির নেতা ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচারে যাদবপুরে এসেছেন এবারে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন দীর্ঘ কয়েক দশকের অপেক্ষার পর এবারে যাদবপুরে পদ্মফুল ফুটতে চলেছে।

প্রতিদিনের মতো গতকালও সকাল থেকে জনসংযোগ কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন বিজেপি প্রার্থী ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। গতকাল নির্বাচনী প্রচারের মুল অংশ ছিল ভাঙ্গর বিধানসভার অন্তর্গত কুলটি ৩ নম্বর কলোনীর স্কুল মাঠে বেলা তিনটে থেকে শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে বিজয় সংকল্প সভা। তবে আগে থেকে সভার অনুমতি থাকলেও একদম শেষ মূহুর্তে সভার অনুমতি বাতিল করে দেয় পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাদবপুরে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়। শুভেন্দু অধিকারী নির্বাচন কমিশনের কাছে যাবেন বলে জানান। প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর সভা থেকে একশো মিটার দূরেই তৃনমূলের সভা রয়েছে তাই রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বিজেপির জনসভা বাতিল করা হয়েছে। বঙ্গীয় রাজনীতিতে ভাঙ্গর বরাবরই সংবেদনশীল অঞ্চল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাঙ্গরে রীতিমতো বোম্ব, গুলি চলে যাতে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তাই এবারে ভাঙ্গরের আটটি থানা আগে থেকেই যেকোনও অপ্রীতিকর ঘটনা রোধের জন্য আগে থেকেই প্রস্তত রয়েছে। ভাঙ্গর বিধানসভা কেন্দ্রে মুসলিম জনসংখ্যার আধিক্য রয়েছে।

২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে তৃনমূল কংগ্রেস যেখানে ভাঙ্গরে ১,৪৬,৭২৩টি ভোট পেয়েছিল সেখানে সিপিআইএম ৩৪,৭৫৮টি এবং বিজেপি ২৪,৯৬৩টি ভোট পেয়েছিল। বরাবর তৃনমূল কংগ্রেসের আধিক্য থাকা ভাঙ্গরে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভাঙ্গরে আইএসএফ প্রার্থী নওশাদ সিদ্দিকী তৃনমূল প্রার্থীকে হারিয়ে জিতে যায়। এবারেও লোকসভা নির্বাচনে আইএসএফ যাদবপুরে প্রার্থী দিয়েছে যার জন্য তৃনমূলের মুসলিম ভোট ভাগাভাগি হয়ে বিজেপির সুবিধা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে এখানে। তাছাড়া বিগত তিন মাসে ভাঙ্গরে ডঃ অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সমর্থনে ব্যাপক জনসমর্থন লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। এরকম পরিস্থিতিতে স্বভাবতই বিজেপির সভা বাতিলের প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন আগামী ৪ জুন ভোটের ফলপ্রকাশের পর ওই মাঠেই সভা করবেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *