অফবিট

বাম আমলে একাধিক নিয়োগ দুর্নীতির কথা স্বীকার করছেন প্রাক্তন বামফ্রন্ট নেতরাই!

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে বর্তমানে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত নিয়োগ দুর্নীতি মামলা হয়েছে। আগামী ১৬ জুলাই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পরবর্তী রায় ঘোষনা করবে সর্বোচ্চ আদালত। সমস্ত বিরোধী দলই রাজ্য সরকারের সমালোচনা করছে। তবে নিয়োগ দুর্নীতি শুধু বর্তমান রাজ্য সরকারের সময়েই হয়নি অতীতে বাম শাসনেও একাধিক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ শুধু বিরোধীরাই করেনি বরং বেশ কিছু প্রাক্তন বাম নেতারাই তাদের প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছে। বাম আমলে একাধিক নিয়োগ দুর্নীতির খবর সামনে আসায় রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছে বামেরা।

তৃনমূল কংগ্রেস মন্ত্রী উদয়ন গুহ এর আগে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছিলেন সিপিআইএম নেতার ছেলেকে ডাক্তাররিতে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার। উদয়ন গুহ বলেছেন জ্যোতি বসুর সময়ে বাংলায় ডাক্তারিতে ও ইঞ্জিনিয়ারিংএ মুখ্যমন্ত্রীর দশটি করে কোটা ছিল। সেসময় রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজে আসনও কম ছিল। তাই উদয়ন গুহর অভিযোগ সেসময় রাজ্যে প্রথম বিভাগে পাশ করা, জয়েন্টে পাশ যোগ্যদের বঞ্চিত করে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করা কোচবিহারের দিনহাটায় বাম নেতা মানিক দত্তের ছেলেকে ডাক্তারিতে ভর্তি করে দিয়েছিল জ্যোতি বসু তার মুখ্যমন্ত্রী কোটায়। তাছাড়া বাম আমলে চিরকুটে চাকরি পাওয়া নিয়েও একাধিক অভিযোগ উঠেছে।

বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষও বামেদের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন। দিলীপ ঘোষ জনিয়েছেন শুধু তৃনমূল কংগ্রেসের সময়েই নয় বরং ৩৪ বছরের বাম শাসনেও হাজার হাজার চাকরি চিরকূটের মাধ্যমে নিয়োগ হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন বাম জামানায় বাম দলগুলো বিধানসভায় আসন ভাগের পাশপাশি চাকরিও ভাগ করে নিত। ২০২৩ সালে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ট্যুইটারে একটি ছবি পোস্ট করে দেখান বাম আমলে একশো শতাংশ চাকরির মধ্যে ৬০ শতাংশ সিপিআইএম, ৩৫ শতাংশ ফরওয়ার্ড ব্লক এবং বাকী ৫ শতাংশ আরএসপি ও সিপিআই এর মতো বাম দলগুলো নিজেদের মতো ভাগ করে নিত। দিলীপ ঘোষের এই কথার প্রমান পাওয়া যায় তৃনমূল নেতা উদয়ন গুহর কথাতেও। নিয়োগ দুর্নীতিতে উদয়ন গুহ তার বাবা কমল গুহর বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছেন। কমল গুহ ফরওয়ার্ড ব্লকের সদস্য ছিলেন এবং বামফ্রন্ট সরকারে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। উদয়ন গুহ নিজেও ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃনমূলে যোগ দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন তার বাবাও নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত ছিল। তার কাছে অন্তত ১০০ জনের নাম রয়েছে যারা দুর্নীতি করে চাকরি পেয়েছে। একাধিক প্রাক্তন সিপিআইএম নেতাও বাম আমলে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলেছেন। দক্ষিন ২৪ পরগনার প্রাক্তন সিপিআইএম নেতা সমীর পুততুন্ড জানিয়েছেন সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তীর গড়িয়াতে দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে তিনিই চাকরি করে দিয়েছিলেন। তৃনমূল বিধায়ক ও প্রাক্তন বাম নেতা তাপস চট্টোপাধ্যায়ও বাম আমলে নিয়োগ দুর্নীতির কথা বলেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *